বিএনএ ঢাকা: রাজারবাগ দরবার শরিফের পীরের কর্মকাণ্ড জঙ্গিবাদের মতো উল্লেখ করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম (সিটিটিসি) ইউনিট ও সিআইডি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কোরআন ও হাদিসের খণ্ডিত ব্যাখ্যা দিয়ে দেশের ধর্মভীরু মানুষকে ভুল পথে পরিচালনা করেন রাজারবাগের পীর দিল্লুর রহমান ও তার সহযোগীরা। ধর্মের নামে মানুষ হত্যা ও তথাকথিত জিহাদকে উস্কে দেন তারা। জঙ্গিদের কাজের মতো তাদের কর্মকাণ্ড। পীর ভক্তদের কার্যক্রমে উগ্রবাদ ছড়ানোর আশঙ্কা আছে। তাদের কাজকর্ম জঙ্গিবাদের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
রাজারবাগ পীর চক্রের করা ৪৯ মামলার বাদীদের সন্ধানে ব্যবসায়ী একরামুল আহসান কাঞ্চন এবং অপর আটজনের করা রিটের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টে এমন প্রতিবেদন জমা দেয় সিটিটিসি।
রোববার (৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টে ডিভিশন বেঞ্চে এই সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি হয়।
শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছে, মামলার তদন্তের স্বার্থে সিআইডি, কাউন্টার টেররিজম ও দুদক চাইলে রাজারবাগ দরবার শরিফের পীরের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে। পাশাপাশি রাজারবাগ দরবার শরিফ ও পীরের কর্মকাণ্ডের ওপর সার্বক্ষণিক নজরদারি করতে কাউন্টার টেররিজমকে নির্দেশ দেয়া হয়। ভুক্তভোগীরা চাইলে রাজারবাগের পীর ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারবেন।
সেইসঙ্গে এই মামলার রিটকারীর আইনজীবী শিশির মনিরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথা বলতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিপুল বাগমারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সিআইডি আরেকটি রিপোর্ট দায়ের করবে এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সেটি হাইকোর্টের নজরে আনবেন। দুদকের রিপোর্টসহ পরবর্তী আদশের জন্য ১৩ ফেব্রুয়ারি নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির ও অ্যাডভোকেট এমাদুল হক বশির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
গত ২ ডিসেম্বর রাজারবাগ দরবারের পীর দিল্লুর রহমানসহ চারজনের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে সম্পূরক রিট আবেদন দায়ের করা হয়। অন্য তিনজন হলেন- শাকিরুল কবির, ফারুকুর রহমান ও মফিজুল ইসলাম। ব্যবসায়ী একরামুল আহসান কাঞ্চনের পক্ষে সম্পূরক এই রিট আবেদন দায়ের করেন অ্যাডভোকেট এমাদুল হক বশির।
এর আগের দিন ১ ডিসেম্বর পীর দিল্লুর রহমানের অবৈধ সম্পদের খোঁজে তথ্য চেয়ে সরকারি-বেসরকারি ৫৮টি ব্যাংকসহ ১২২টি প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে সরকারি-বেসরকারি ৫৬টি ব্যাংক, দেশের ৬৪ জেলা রেজিস্ট্রার, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, রাজারবাগ দরবার শরিফের পীর দিল্লুর রহমানসহ তার অনুসারীরা কমপক্ষে ৮শটি ভুয়া মামলা করেছেন। এসব মামলার পেছনে রয়েছে সাত হাজার একর জমি ও রাবার বাগান দখল। পীরের পক্ষে তার অনুগতরা এসব মামলা দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।
বিএনএনিউজ/আরকেসি