30 C
আবহাওয়া
১:৪৯ অপরাহ্ণ - অক্টোবর ৬, ২০২৫
Bnanews24.com
Home » ‘রোজা-পূজা একই’ কী বললেন শাহ মহিবুল্লা- ড. আব্বাসী- আহমাদুল্লাহ !

‘রোজা-পূজা একই’ কী বললেন শাহ মহিবুল্লা- ড. আব্বাসী- আহমাদুল্লাহ !


বিএনএ, ঢাকা : ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোটের আইনজীবী, জামায়াতে ইসলামীর সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা)নসংসদীয় আসনের প্রার্থী শিশির মনির জামায়াত ইসলামীকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছেন। একটি পূজা মণ্ডপে গিয়ে তার একটি বক্তব্যকে ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তার বক্তব্যটি এখন টক অব দ্যা কান্টিতে পরিণত হয়েছে।

জামায়াত ইসলামীর বিরোধী রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে বিএনপি ও ইসলাম ধর্ম ভিক্তিক সংগঠনগুলো, জামায়াত ইসলামী নেতা শিশির মনিরের বক্তব্যটি উপস্থাপন করে জামায়াত ইসলামীর সরূপ তুলে ধরতে বেশ তৎপর রয়েছে। ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক ইনেস্টাগ্রামে শিশির মনিরের বক্তব্য ঘুরে বেড়াচ্ছে। হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ মহিবুল্লা বাবুনগরী, ইসলামী বক্তা, ডক্টর এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী, শায়খ আহামুদ্দুল্লাহসহ অনেকেই শিশির মনিরকে তুলোধুনো করছে।

ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে শিশির মনিরকে বলতে শোনা যায়, কমিট ইন সাইট অফ দ্য সেম পয়েন্ট একই মুদ্রার এপিঠ এবং ওপিঠ। এপিঠে আছে শাপলা; ওপিঠে আছে আনারস. আমরা একই মুদ্রার এপার এবং ওপার. এটাই হলো একদিকে রোজা. আরেকদিকে পূজা। এই রোজা এবং পূজা মিলে বাংলাদেশ।’

শিশির মনির বলেন, দিরাই-শাল্লায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যে শত বছরের ঐতিহ্য রয়েছে, তা বাংলাদেশের জন্য একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এখানে হিন্দু-মুসলমানের মেলবন্ধন অটুট রয়েছে; আমরা সকলে এই দেশের সমান অধিকারভুক্ত নাগরিক। এদেশে যেমন মসজিদে আজান হবে, তেমনি মন্দিরে পূজাও চলবে এটাই আমাদের সম্প্রীতির বাংলাদেশ।

জামায়াত নেতা শিশির মনির ইমানহারা হয়েছেন বলে উল্লেখ করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, ‘মওদুদী ফিতনা প্রতিহত না করলে দেশে ইসলাম থাকবে না। মওদুদীবাদীরা সাহাবাগণকে সত্যের মাপকাঠি মানে না। ইসলামের পর্দা প্রথাকে তারা অস্বীকার করে।

মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে আগামী সংসদ নির্বাচনে দলটিকে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। গত শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের হাটহাজারী পার্বতী মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে শানে রেসালত সম্মেলনে হেফাজতের আমির এই আহ্বান জানান।

এদিকে ইসলামী বক্তা ডক্টর এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী বলেছেন, জামায়াত ইসলামী ক্ষমতায় যেতে প্রয়োজনে খৃষ্টান কিংবা হিন্দু হয়ে যেতেও তাদের আপত্তি নেই। তারা একই সঙ্গে আল্লাহ এবং বান্দাদের ধোকা দিতে তৎপর।

এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী আরও বলেন, যারা রাজনৈতিক স্বার্থে বিজাতিকে সন্তুষ্টি করতে মুসলিম পরিচয় ভুলে যেতে চায় তারা জাতীয় মোনাফেক। তিনি জামায়াত ইসলামী নেতা শিশির মনিরের ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান।

শুধু হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ মহিবুল্লা বাবুনগরী, ইসলামী বক্তা, ডক্টর এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী জামায়াত ইসলামীর সাম্প্রতিক কর্মকান্ডের সমালোচনা করেননি- শায়খ আহমুদ্দুল্লাহ’র মতো ইসলামী পন্ডিতও এতে শামিল হয়েছেন। তিনি বলেছেন, দুর্গা পুজায় অংশ গ্রহণ করে জামায়াত ইসলামীর নেতারা শিরক করেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন পেতে জামায়াত ইসলামী তার কট্টরপন্থী অবস্থান থেকে সরে এসেছে। দলটি ইতোমধ্যে গঠনতন্ত্রে সংশোধন এনেছেন। দলীয় লগো থেকে পবিত্র কোরআনের আয়াতের একটি অংশ ‘আকিমুদ্দিন’ অথাৎ দ্বীন প্রতিষ্ঠা বাদ দেওয়া হয়েছে। অমুসলিমদের জন্য আলাদা রাজনৈতিক ইউনিট খুলেছে। জামায়াত ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে অমুসলিমদের মনোনয়ন দিয়েছেন, নারীরা স্বাধীন পোষাক পড়তে পারবেন এমন কি, শরিয়াহ আইনের পরিবর্তে বিদ্যমান আইনে রাষ্ট্র পরিচালনা করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তারই ধারাবাহিতায় দুর্গা পুজার অনুষ্ঠানে শিশির মনির নিজেকে এবং জামায়াত ইসলামীকে অসাম্প্রদায়িক হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছেন। এ ধরনের বক্তব্য মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বিশেষ করে নির্বাচনী প্রেক্ষাপটে অমুসলিম ভোটারদের আস্থায় আনতে এমন বক্তব্য দিয়েছেন। যা সম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জামায়াত ইসলামীর জন্য, হিতে বিপরীত, ফল বয়ে এনেছে।

বিএনএনিউজ/সৈয়দ সাকিব/এইচ.এম।

Loading


শিরোনাম বিএনএ