27 C
আবহাওয়া
৩:১৯ অপরাহ্ণ - অক্টোবর ৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » কেন রাষ্ট্রপতির অপসারণ চায় সমন্বয়করা?

কেন রাষ্ট্রপতির অপসারণ চায় সমন্বয়করা?


গত ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর ৮ আগষ্ট ক্ষমতাসীন হন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ক্ষমতার এই পট পরিবর্তনের পর সমন্বয়কদের গোপন পরামর্শে অবার কখনো প্রকাশ্য দাবির ভিত্তিতে রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিবর্তন এনেছে ড. ইউনূস সরকার।

YouTube player

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতা চর্চার দুই মাসের মাথায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দু’জন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হঠাৎ করে ফেসবুকে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে অপসারণ করার দাবি জানিয়েছেন। দুই সমন্বয়কের এমন দাবি নিয়ে সারাদেশে নতুন করে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এর আগেও সমন্বয়করা দাবি তোলার পর বিভিন্ন পদে পরিবর্তন আসতে দেখা গেছে। তাহলে কী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবারও সমন্বয়কদের দাবি মেনে নিয়ে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে অপসারণ করবে? গ্রামের চা দোকান থেকে সচিবালয় পর্যন্ত একজন আরেকজনকে এমন কৌতুহল প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে?

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, ৩ অক্টোবর দুপুরে সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইল থেকে একটি পোস্টে সর্বপ্রথম এ দাবির কথা জানান। তার কয়েক ঘণ্টা পর সমন্বয়ক সারজিস আলমও তার ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইল থেকে একই কথা লিখে পোস্ট করেন। তাদের দু’জনের পোস্টেই মোট পাঁচ দফা দাবি ঘোষণা করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে অপসারণ ছাড়াও– ‘আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিতকরণ, নতুন সংবিধান গঠন, আওয়ামী দুর্নীতিবাজ আমলাদের পরিবর্তন ও শেখ হাসিনার আমলে করা সব অবৈধ চুক্তি বাতিল করার দাবি জানানো হয়েছে।

এখন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দাবি মেনে সরকার যদি সত্যিই রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করতে চায়, তবে তারা কোন্ পথ অবলম্বন করবে?

সংবিধান বিশেষজ্ঞ আইনজীবীরা বলছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই মুহূর্তে রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ না করলে তাকে অপসারণ করা সম্ভব নয়।

সংবিধান অনুযায়ী সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসন বা অপসারণ করতে হয়। কিন্তু বর্তমানে সংসদ নেই। এই অবস্থায় শুধু পথ খোলা আছে রাষ্ট্রপতি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ। রাষ্ট্রপতি যদি পদত্যাগ করেন, তখন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব কে পালন করবেন?

এ বিষয়ে সংবিধান বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি যদি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন বা মৃত্যুজনিত কারণে পদ শূন্য হয়, তখন স্পিকার অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করবেন। তবে বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রব্যবস্থায় স্পিকার-সংসদ কোনোটাই নেই।

স্পিকার অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হলে পরবর্তী ৯০ দিনের মাঝে “ওই সংসদ দ্বারাই নতুন রাষ্ট্রপতি” নির্বাচন করতে হবে। এই অবস্থায় রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের জন্য বৈধ কোনও পথ খোলা নেই।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ বলেছেন, “সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করার সুযোগ নাই। রাষ্ট্রপতি এখন স্বেচ্ছায় বা কারও কথায় চলে যেতে পারেন।”

সেনাবাহিনী ও সরকার চাইলে এক সেকেন্ডের ব্যাপার বলে মন্তব্য করেন। এই সিনিয়র আইনজীবী বলেন, এখানে লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক নিয়ে চিন্তা করার দরকার নাই। কারণ ফর্মেশন অব গভর্নমেন্ট-ই তো লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্কের মাঝে না। কাজেই, ওই সুযোগ নাই। এখানে যা হবে, এমনিতে হবে। তবে এগুলোকে পরবর্তীতে লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্কের মাঝে অনুমতি দিতে হবে।”

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের পদ্ধতি কী হবে, সেটার জন্য তাদেরকে এখন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে রেফারেন্স নিতে হবে।”“সেই রেফারেন্স অনুয়ায়ী তারা একজনকে বাদ বা নতুন একজনকে নিয়োগ দিতে পারেন।

তবে আপিল বিভাগের এই রেফারেন্স বা সুপারিশ পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আপিল বিভাগের রেফারেন্স প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, স্পিকার না থাকলে ইনচার্জ থাকেন প্রধান বিচারপতি। রাষ্ট্রপতি পদে প্রধান বিচারপতিকে অফার করতেই হবে বলে উল্লেখ করেন এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী। তাহলে কি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদকে রাষ্ট্রপতির আসনে দেখতে চাচ্ছেন সমন্বয়করা?

সৈয়দ সাকিব

Loading


শিরোনাম বিএনএ