বিএনএ ডেস্ক: উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি ৯০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর)সকাল থেকে তিস্তার পানি প্রবল স্রোতে প্রবাহিত হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন দুই পাড়ের মানুষ।
তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলার তিস্তার অববাহিকার চরাঞ্চলগুলোর ঘরবাড়ি ও ফসলি জমিতে পানি উঠতে শুরু করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, তিস্তার পানি দুপুর পর্যন্ত আরও কিছুটা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিস্তার দুই পাড়ের মানুষকে সরিয়ে নিতে মাইকিং করা হয়েছিল। কিন্তু মানুষজন তাদের ঘরবাড়িতে এখনও অবস্থান করছেন। শুধু চরাঞ্চলের কিছু পরিবার আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন।
এদিকে পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার বেলকা ইউনিয়ন, হরিপুর, কাপাসিয়া, চন্ডিপুর ও কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নের তুলনামূলক নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যহত থাকলে ওইসব ইউনিয়নসহ উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী ৭টি ইউনিয়নের নিমণাঞ্চল প্লাবিত হবে। মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে বিশুদ্ধ পানি সংকটের পাশাপাশি ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ওয়ালীফ মন্ডল জানান, তিস্তায় সারারাত পানি বৃদ্ধির ফলে সকাল থেকে নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এভাবে বাড়তে থাকলে দুপুর নাগাত নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার রশিদুল কবির জানান, নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে সকাল থেকে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে। এখন পর্যন্ত ফসলের কোনো ক্ষয়-ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে পানি বৃদ্ধি পেয়ে যদি স্থায়ী হয় তবে ফসলের ক্ষতিরর আশঙ্কা রয়েছে। সঠিক তথ্য পেতে আজ সারা দিন অপেক্ষা করতে হবে।
তবে, বন্যার পূর্ব প্রস্তুতি থাকার কথা জানিয়ে বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এ ব্যাপারে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরীকুল ইসলাম বলেন, ‘তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারত থেকে পানি আসার খবরে বুধবার উপজেলার সকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ সচেতনমহল, সুধীজন ও প্রশাসনের বিভিন্ন ইউনিটকে নিয়ে জরুরি মিটিং এবং নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষদের সতর্ক করতে সারাদিন মাইকিং করা হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য নিকটস্থ বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র বা ফ্ল্যাট শেল্টারে প্রস্তুত রয়েছে। জরুরি যোগাযোগে নৌকার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ