বিএনএ, ফেনীঃফেনীর পরশুরামে সাপে দংশনের পর অপচিকিৎসা ও মধ্যযুগীয় কায়দায় পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হওয়া গৃহবধূ অমির ওপর এবার এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।রোববার(৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে বাবার বাড়ি ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের পূর্বদরবারপুর সেকান্দরপুর মৌলভীবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
এসিডে তার ডান হাতের বেশকিছু স্থানে ঝলসে গেলে তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা তাকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান ফেনীর পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরুন্নবী সহ জেলা পুলিশ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা।
অমির বোন শারমিন আক্তার জানান, রোববার সকালে মা শাহেনআরা বেগমসহ তিনি ট্রাংক রোডের সচেতন নাগরিক সমাজের আয়োজনে নারী-শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণ প্রতিরোধে মানববন্ধনে অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে খবর পান তার বাড়িতে অসুস্থ খালেদা আক্তার অমিকে জানালা দিয়ে এসিড নিক্ষেপ করা হয়। বাকপ্রতিবন্ধী অমি তাদের জানিয়েছে- নিলক্ষ্মী শ্রীপুর এলাকার বাসিন্দা তারেক ও মিনার এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তারেক সম্পর্কে অমির স্বামী পরশুরাম উপজেলার সাতকুচিয়া গ্রামের চৌধুরী বাড়ির আবুল হাসেমের ছেলে প্রবাসী লিখন আহমেদের ফুফাতো ভাই ও মিনার তার ভাগ্নে। এসিডে অমির ডান হাত সহ শরীরের বেশ কিছু অংশ ঝলসে গেছে বলে শারমিন জানান।
হাসপাতালে দেখতে এসে সাংবাদিকদের দেওয়া এক বিবৃতিতে পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, অমি ও তার বোনের কাছ থেকে হামলাকারীদের নাম জানতে পেরেছে পুলিশ।অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্ভব হলে আজকের মধ্যেই তাদের গ্রেফতার করা হবে।
এর আগে গত আগষ্টে ফেনীর পরশুরামে শ্বশুর বাড়ির লোকজন কর্তৃক গৃহবধূ অমিকে মধ্যযুগীয় কায়দায় অপচিকিৎসা ও পাশবিক নির্যাতনের চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
নির্যাতনের ভিডিও ও ছবি গুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পরদিন ৯ আগস্ট তাকে শ্বশুর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে তার পরিবার। পরে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে গুরুতর আহত খালেদাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে । সেখানে ৮দিন চিকিৎসা নেয়ার পর গত ১৬ আগস্ট তাকে ফুলগাজীর বাবার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
উল্লেখ্য, পাঁচ বছর আগে ফুলগাজীর খালেদা ইসলাম অমির সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় পরশুরাম উপজেলার সাতকুচিয়া গ্রামের চৌধুরী বাড়ির আবুল হাসেমের ছেলে প্রবাসী লিখন আহমেদের সাথে। বিয়ের পর থেকে লিখনের মা ও ভাই-বোনরা মিলে খালেদাকে যৌতুকের জন্য নানা নির্যাতন করতে থাকে। গত ৭ আগস্ট চিকিৎসার নামে সাপ দিয়ে বর্বর কায়দায় নির্যাতন করা হয় তাকে। ফুলগাজী থানায় মামলা দায়ের করা হলে অমির ননদ হাসিনা আক্তার ও তার স্বামী আবুল কাশেমকে গ্রেফতার করা হয়।
বিএনএ/ এবিএম নিজাম উদ্দিন ,ওজি