বিএনএ, কক্সবাজার: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কক্সবাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। শহরে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা- ধাওয়া ও গুলিতে ২ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হন। এছাড়া জেলা বিএনপি অফিস ভাঙচুর করে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা৷ রোববার (৪ আগস্ট) রাত ৮ টার দিকে শহরের পৌরসভা সংলগ্ন শহিদ সরণি মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালের একটি সুত্র জানান- গোলাগুলি ও সংঘর্ষে আহতদের উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হলে ২ জনকে মৃত ঘোষণা করে চিকিৎসক। এছাড়া আরও অন্তত ৩৫ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শহরের কিছু কিছু স্থানে রোববার রাত সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছে বলে জানা গেছে।
সংবাদকর্মী নাজিম উদ্দীন বলেন- সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে শহিদ সরণি এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে৷ অন্তত ৬-৮ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় কাঁধে নিয়ে চলে যায় আন্দোলনকারীদের একাংশ। ধারণা করা হচ্ছে তাদের মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যু হতে পারে।
এদিকে ওই সময়ে কক্সবাজার জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। অফিসটি সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায়।
এছাড়া বিকেলের দিকে বাসটার্মিনাল ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা, লিংকরোড়, শহরের লালদিঘির পাড়, গুনগাছ তলায় ও বাসটার্মিনালে বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। উখিয়া কোটবাজার স্টেশনে পুলিশ বক্স ভাঙচুর করা হয়েছে। ঈদগাঁওতে থানা ঘেরাও এবং তিনটি ফিলিং স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা।
রোববার (৪ আগষ্ট) সকাল থেকে আন্দোলনকারীরা শহরের লিংকরোড়, বাসটার্মিনাল, কালুরদোকান ও শহিদ সরণি এলাকায় অবস্থান নেয়৷ এবং সেখানে বিক্ষোভ মিছিল পালন করেন৷ এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায়ও আন্দোলনকারীদের মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে।
আন্দোলনকারীরা জানান – শান্তিপূর্ণ মিছিলে আওয়ামীলীগের লোকজন আমাদের উপর গুলিবর্ষণ করেন। এতে আমাদের ছাত্রদের অনেকে নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে।
এ দিকে দুপুর থেকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয়।তারা জানান- ছাত্র বেশে সন্ত্রাসীরা সড়ক ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হামলা করতেছে।তাদের দমন করতে হবে।
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার আশিকুর রহমান বলেন, কক্সবাজার সদর হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কয়েকজনকে নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে একজন মারা গেছেন। তাঁর মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এখনও তাঁর নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। আশংকাজনক অবস্থায় রয়েছে আরও কয়েকজন৷
এ ব্যাপারে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে উল্লেখ করে কোন মন্তব্য করেননি।
বিএনএ/ এইচএম ফরিদুল আলম শাহীন, ওজি