19 C
আবহাওয়া
২:৩১ পূর্বাহ্ণ - ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » গরম ও লোডশেডিং : জনজীবন অতীষ্ট

গরম ও লোডশেডিং : জনজীবন অতীষ্ট

গরম ও লোডশেডিং

বিএনএ, ঢাকা:  একদিকে প্রচণ্ড গরম অন্যদিকে কয়েকদিনের তীব্র লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতীষ্ট হয়ে ওঠেছে। যে সব সরকারি বেসরকারি অফিস ও বাড়িতে আইপিএস ও বড় বড় জেনারেটর রয়েছে বিষয়টি পুরোপুরি তারা বুঝতে না পারলেও সিংহভাগ সাধারণ মানুষের প্রাণ যায় যায় অবস্থা। রাজধানী এবং বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিংয়ের কারণে বিদ্যুতের গ্রাহকরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।  গতকয়েকদিনের পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। মঙ্গলবারও(৫জুলাই) এই অবস্থা অব্যাহত রয়েছে।

কয়েকদিন ধরেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে রাজধানী ঢাকা, বন্দর নগরী চট্টগ্রামসহ দেশজুড়ে। বিদ্যুত সরবরাহ বড় মাত্রায় কমিয়ে দেয়া হয়েছে। মূলত গ্যাস সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বিদ্যুতের লোডশেডিং করা হচ্ছে বলে সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি পাবার কারণে সরকার গ্যাসের সরবরাহ হ্রাস করেছে। দেশের গ্যাস-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ১০ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে। এই কেন্দ্রগুলোতে এখন অর্ধেকেরও কম বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে।

জানা গেছে, গতকাল সোমবার দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৯১৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু ২৯ জুন ছিল ১ হাজার ৮১ মিলিয়ন ঘনফুট। এই দুই দিনে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ১৬৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সরবরাহ কমাতে দেখা গেছে। এই গ্যাস-রেশনিংয়ের ফলে বিদ্যুতের উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে।

সোমবার(৪জুলাই) সারাদেশে ১৪ হাজার মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৮১৮ মেগাওয়াট উৎপাদন করা হয়। এদিন চাহিদার তুলনায় প্রায় ৯ শতাংশ কম বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়।মবার সারাদেশে ১৪ হাজার মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৮১৮ মেগাওয়াট উৎপাদন করা হয়। এদিন চাহিদার তুলনায় প্রায় ৯ শতাংশ কম বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়।

উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটায় সারা দেশেই কম বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে এটি ফোর্স লোডশেডিং। অর্থাৎ কেন্দ্রে উৎপাদন বাড়ালে লোডশেডিংয়ের প্রয়োজন পড়তো না। তারপরও করা হচ্ছে। মহানগরীতে এতদিন যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছিল, সেখান থেকেও সরে আসা হয়েছে।

জ্বালানি তেলের দামও বিশ্ববাজারে অনেক বেশি হওয়ায় পেট্রলিয়াম করপোরেশনকে দিনে একশো কোটি টাকার বেশি লোকসান দিতে হচ্ছে। সেজন্য তেল-চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোও পুরো দমে চালানো হচ্ছে না।

পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৭০ কোটি ঘনফুট। সাধারণত গড়ে ৩০০ কোটি ঘনফুটের মতো সরবরাহ করা হয়। দুইদিন ধরে সরবরাহ করা হচ্ছে দিনে ২৭৫ থেকে ২৮০ কোটি ঘনফুট করে। ধাপে ধাপে কমানো হয় সরবরাহ। এলএনজি কেনা না হলে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর সুযোগ নেই।বর্তমানে বিশ্ববাজারে প্রতি ইউনিট এলএনজি’র দাম ৩৮ ডলার ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ কেনা হয়েছিল ২৫ ডলারে।

বিদ্যুৎ বিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন গণমাধ্যমকে জানান, জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি, সরবরাহ চেইনেও বর্তমানে নানা সমস্যা। আমাদের দেশের নিজস্ব জ্বালানি নেই। দেশ  আমদানি নির্ভর। ভবিষ্যতে হয়তো পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। দোকানপাট ৮টার পর বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঈদের পর থেকে তা পুরোপুরি কার্যকর হবে। তিনি জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও গ্যাস সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাহত হচ্ছে।

জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সরবরাহ কেবল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় দিনে চার থেকে পাঁচবার লোডশেডিং হচ্ছে। কোথাও কয়েক ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না গ্রাহকেরা।ঢাকার বাইরের বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিং আরও বেশি।

দেশের মহানগরীগুলোতে দিনের বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। টানা ৪/৫ ঘণ্টায় লোডশেডিংয়ের পর আধাঘণ্টা করে বিদ্যুৎ চালু হয়। প্রচণ্ড গরমে নাকাল নগরবাসী।

দেশের বৃহত্তম বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) জানায়, দেশের প্রায় ৫৫ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ করে তারা। তাদের গ্রাহকরা দিনে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা বিদ্যুত পাচ্ছেন না। কোথাও কোথাও পরিস্থিতি আরও খারাপ।

আবহাওয়া বর্তমানে উত্তপ্ত।  লোডশেডিংয়ের কারণে অসহনীয় গরমে সাধারণ পরিবারের সদস্য বৃদ্ধ ও শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। জনজীবন অতীষ্ট হয়ে ওঠেছে।

আবহাওয়ার খবর

মঙ্গলবার(৫জুলাই)  সর্বোচ্চ তাপমাত্র ছিল রাজধানী ঢাকায় ৩৪.৭,চট্টগ্রামে ৩৩.৭, ময়মনসিংহে ৩২.৩, সিলেটে ৩৩.৭, রাজশাহীতে ৩৭.২( দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড), রংপুরে ৩৫.৮, খুলনায় ৩৫.০, বরিশালে ৩৩.৮ডিগ্রী সেলসিয়াস।

আগামী ২৪ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে,  বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় ঢাকা ও খুলনা ও বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

বিএনএনিউজ২৪, এসজিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ