বিএনএ ঢাকা: বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ সম্প্রতি আশঙ্কাজনকহারে বেড়ে গেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সারাদেশে ৭ দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার।ফলে সোমবার(৫ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে এটি কার্যকর হয়েছে। চলবে আগামি ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত।
এই সময়ে সকল প্রকার গণপরিবহন সড়ক, রেল ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহন ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ তাদের কার্যক্রম চালু রাখতে পারবে।
রাজধানী ঢাকা,চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সকাল থেকে কোন গণপরিবহন চলতে দেখা যায়নি। তবে রাস্তায় অসংখ্য সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করছে। এছাড়া পণ্য পরিবহনের কাজে নিয়োজিত কিছু ট্রাক ও কাভাডভ্যান চলছে। তবে, রাস্তায় মানুষের উপস্থিত অনেক কম। নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ সেরে দ্রুত বাসায় ফিরছেন তারা।অন্যান্য সময়ের তুলনায় রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা।ফুটপাতে ভাসমান দোকানগুলো বন্ধ হয়ে গেছে।এলাকার অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ আছে।
এর আগে রোববার (৪ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে লকডাউনে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
লকডাউন মেয়াদকালীন সময়ে প্রতিপালনের জন্য যে ১১টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেগুলো তুলে ধরা হলো-
১. সব প্রকার গণপরিবহন সড়ক, রেল ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বন্ধ থাকবে। তবে পণ্য পরিবহন উৎপাদন ব্যবস্থার জরুরি সেবা দানের ক্ষেত্রে এ আদেশ প্রযোজ্য হবে না। এছাড়া বিদেশগামী ও বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।
২. আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন- ত্রাণ বিতরণ স্বাস্থ্যসেবা বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের স্থলবন্দর, নৌবন্দর ও সমুদ্রবন্দর কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট সেবার জরুরি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ এবং তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এই নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে।
৩. সব সরকারি-আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিস-আদালত এবং বেসরকারি অফিস কেবল জরুরি কাজ সম্পাদনের জন্য সীমিত পরিসরে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়ে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় অফিসে আনা-নেওয়া করতে পারবে। শিল্প-কারখানা ও নির্মাণকার্য চালু থাকবে। শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেওয়া করতে হবে। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে শিল্প-কারখানা এলাকায় নিকটবর্তী সুবিধাজনক স্থানে তাদের শ্রমিকদের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল/চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত (ঔষধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না।
৫. খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় কেবল খাদ্য বিক্রয় ও সরবরাহ করা যাবে। কোনো অবস্থাতেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার খাওয়া যাবে না।
৬. শপিংমলসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ থাকবে। তবে দোকানগুলো পাইকারি ও খুচরা পণ্য অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সর্বাবস্থায় কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং অন্য কোনো শহরে যেতে পারবে না।
৭. কাঁচা বাজার ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। বাজার কর্তৃপক্ষ/স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
৮. ব্যাংকিং ব্যবস্থা সীমিত পরিসরে চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।
৯. সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ঢাকায় সুবিধাজনক স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
১০. সারাদেশে জেলা ও মাঠ প্রশাসন উল্লেখিত নির্দেশনা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহল জোরদার করবে।
১১. এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিএনএনিউজ/আরকেসি