বিএনএ, ঢাকা : বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ও রিপোর্টার কাজী ফরিদকে হত্যার হুমকিদাতের আইনের আওতায় আনার জন্য সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।
শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর কাওরানবাজারের সার্ক ফোয়ারার মোড়ে সাধারণ সাংবাদিকবৃন্দ’র ব্যানারে আয়োজিত মানবন্ধনে তারা এ আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
আল্টিমেটামে সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, হুমকিদাতাদের যদি আইনের আওতায় না নিয়ে আসা হয় তাহলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ঘেড়াও করা সহ কঠর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
মানবন্ধনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, ‘আজকে আমাদের সহকর্মী সাইফুল ইসলাম ও কাজী ফরিদের বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এতে উদ্বেগ-উদকন্ঠা যেমন তাদের পরিবারে ছড়িয়ে পড়েছে, তেমনি সমাজ ও রাষ্ট্রেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। আমরা এই মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে সাংবাদিকতা করতে আসিনি। এ ধরনের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে, হুমকি-ধামকি দিয়ে আসলে এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপ হয়তো তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু স্বাধীন সংবাদ পত্র এবং সংবাদ বিকাশের পথ রুদ্ধ করা কঠিন। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন, জঙ্গীবাদ, সাম্প্রাদায়িক, অপশক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলনে সাংবাদিক সমাজ বরাবরই লড়াকু ভূমিকা পালন করেছেন। কোনো ধরনের রক্তচক্ষু আমাদের অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করতে পারেনি। আগামীতেও পারবে না’।
তিনি বলেন, ‘এখনো আমরা দেখি সেই ঘোড়াঘাট থেকে শুরু করে সুনামগঞ্জ পর্যন্ত দুবৃত্ত চক্র সাংবাদিকদের কণ্ঠ বন্ধ করতে চায়। রাজধানীতেও তারা তাদের অভয়অরন্য তৈরি করেছে। গাজিপুর থেকে চিঠির মাধ্যমে মৃত্যু পরোয়ানার চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়, আমরা এর ধিৎকার জানাই’।
একই মানবন্ধনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধাক্ষ দীপ আজাদ বলেন, ‘রাজাকার, খুনি-সন্ত্রাসীদের তালিকা হয়। এখন গণমাধ্যমের শত্রুদের তালিকা হওয়া দরকার। মানুষ জানুক কারা স্বাধীন গণমাধ্যমকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, কারা অনিয়ম-দূর্নীতির খবর বন্ধ করতে চায়। তাদের নাম গুলো জানুক।
তিনি বলেন, ‘যারা বৈশাখী টিভি’র সাইফুল ইসলাম ও কাজী ফরিদকে যারা কাফনের কাপড় পাঠিয়েছে তাদের ব্যাপারে যদি দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে আমরা আবার কর্মসূচি দেবো। সে কর্মসূচি এমন হতে পারে যে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণাল ঘেরাও করবো, আইজি ও সংশ্লিষ্টদের কাছে যাবো। আমরা বিচারের জন্য এখানেই কিন্তু থেমে থাকবো না’।
এ সময় বক্তারা বলেন, এটি একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। হুমকি ধামকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে সাংবাদিকদের দমিয়ে রাখা যাবে না। সাংবাদিকরা সব সময় সত্য ও ন্যায়ের পথে আছে। মিথ্যার সাথে কখনো আপোস করবে না।
প্রসঙ্গত, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হারুর অর রশিদের দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে বৈশাখী টেলিভিশন। সংবাদ প্রকাশের পর কাফনের কাপড় পাঠিয়ে জীবন নাশের হুমকি দেওয়া হয় বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ও রিপোর্টার কাজী ফরিদকে। এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পরে সাংবাদিক সমাজ। তারই ধারাবাহিকতায়
আজ এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
পরে মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেন সাংবাদিকরা।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক জিহাদুর রহমান জিহাদ, কার্যনির্বাহী সদস্য রাজু হামিদ, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আকতার হোসেন, সাবেক নির্বাহী পরিষদ সদস্য গোলাম মুজতবা ধ্রুব, ক্র্যাবের সহ সভাপতি নিত্য গোপাল তুতু, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নরুল ইসলাম হাসিব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামিউল আহসান শিপু, পাসপোর্ট এন্ড ইমিগ্রেশন রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান, একুশে টেলিভিশনের চীফ রিপোর্টার দীপু সারোয়ার, নাগরিক টেলিভিশনের চীফ রিপোর্টার সাহানাজ শারমিন, ৭১ টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার নাদিয়া শারমিন প্রমুখ।
বিএনএনিউজ/এসকেকে, জেবি