বিএনএ বগুড়া: বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় গুলিতে নারীসহ ৪ জন নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) রাতে ভোটগণনা চলাকালে উপজেলার বালিয়াদিঘী ইউনিয়নে কালাইহাটা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। সে সময় বিজিবির গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলেও খবর পাওয়া গেছে।
নিহতরা হলেন, বালিয়াদীঘি ইউনিয়নের কালাইহাটা গ্রামের খোকনের স্ত্রী (মেম্বার প্রার্থীর এজেন্ট) কুলসুম আক্তার, মকবুল হোসেনের ছেলে আলমগীর হোসেন, মৃত ইফাত উল্লাহর ছেলে আব্দুর রশিদ ও আব্দুর রাজ্জাক। নিহত চার জনই কালাইহাটা গ্রামের বাসিন্দা। তাৎক্ষণিকভাবে নিহত রাজ্জাকের বাবার নাম জানা যায়নি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বুধবার ইউপি নির্বাচনে ভোট নেয়া শেষে গণনা ও ফল ঘোষণা না করেই ওই ব্যালট বাক্স উপজেলা সদরে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। এই নিয়ে ইউপি নির্বাচনের প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। কেন্দ্রেই ভোটগণনা করে ফল ঘোষণার দাবি জানান তারা। সে সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের হটিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ, বিজিবি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রের গাড়িতে হামলা চালায় বিক্ষুদ্ধ কর্মী-সমর্থকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালান পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা। পরে রাত ৮টার দিকে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আসলে ভোটকেন্দ্রেই ব্যালট পেপার গণনা করে ফল ঘোষণা করা হয়।
গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ব্যালট বাক্স উপজেলা সদরে নিয়ে যাওয়া নিয়ে সেখানে প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ফল ঘোষণা শেষে নিরাপদে উপজেলা সদরে পৌঁছেছেন। এই ঘটনায় হতাহতদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তথ্য পেলে বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে, বিকেলে ভোটগ্রহণ চলাকালে গাবতলীর রামেশ্বরপুর ইউনিয়নে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের সময় ছুরিকাঘাতে জাকির নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। নিহত জাকির উপজেলার রামেশ্বরপুর গ্রামের মৃত লয়া মিয়ার ছেলে। ভোট চলাকালীন ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে লাইভ করেছিলেন তিনি। এই তথ্য নিশ্চিত করেন গাবতলী মডেল থানার ওসি মো. জিয়া লতিফুল ইসলাম। এতে বগুড়ায় বগুড়ায় নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতায় এক দিনেই পাঁচ জনের প্রাণ গেল।
এর বাইরেও পঞ্চম ধাপের এই ইউপি নির্বাচন ঘিরে সহিংসতার শিকার হয়ে দেশের আরও পাঁচ জেলায় ছয় জন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার জুমারবাড়ি ইউনিয়নের দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে ধারলো অস্ত্রের আঘাতে এক জন এবং ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সারুটিয়া ইউনয়নে নির্বাচনি সহিংসতায় এক জন
চাঁদপুরের হাইমচর ও কচুয়ায় নির্বাচনী সহিংসতায় দুই জন, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাচামারা ইউনিয়নে ভোটকেন্দ্রে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া দেখে স্ট্রোক করে এক জন নিহতত হন।
এছাড়াও, চট্টগ্রামের আনোয়ার উপজেলার চাতরী ইউনিয়নে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আরও এক জন নিহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে পঞ্চম ধাপের এই ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় এক দিনেই প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন।
বিএনএনিউজ/আরকেসি