বিএনএ,চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ ও নেপালের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর ও বন্ধুত্বপূর্ণ। উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোভিড মহামারির আগে বাংলাদেশের কাছাকাছি ৭ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে নেপাল। উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রচুর সম্ভাবনা থাকলেও তার সদ্ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন নেপালের রাষ্ট্রদূত ড. বংশীধর মিশ্রা।
সোমবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কৃতজ্ঞতা জানান।
এ সময় চেম্বার পরিচালক মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), অঞ্জন শেখর দাশ, মো. আবদুল মান্নান সোহেল, তাজমীম মোস্তফা চৌধুরী ও সাকিফ আহমেদ সালাম, রাষ্ট্রদূতের সেক্রেটারি রিয়া সেট্রি, চেম্বার সচিবালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত ড. বংশীধর মিশ্রা বলেন, রাষ্ট্রদূত এক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি রোড ম্যাপ প্রণয়ন, আকাশপথে ফ্লাইটের সংখ্যা বৃদ্ধি, সড়ক যোগাযোগের উন্নয়ন, চিলমারীর মাধ্যমে রেল সংযোগ স্থাপন, নদীপথে ভারতের গঙ্গা হয়ে বাংলাদেশের পদ্মা নদী দিয়ে পণ্য পরিবহন, বর্ষা মৌসুমে পানি থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ বাংলাদেশে রফতানি করা এবং শীত মৌসুমে একইভাবে বাংলাদেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা, গ্রীষ্মের সময় নেপালে উৎপাদিত সবজি, ফলমূল ইত্যাদি বাংলাদেশ কর্তৃক আমদানি ইত্যাদি কার্যক্রমের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে যুগান্তকারী পরিবর্তন সাধিত হবে।
এ ছাড়া পিপল টু পিপল যোগাযোগ বৃদ্ধি, কৃষি ও প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে উভয় সরকার প্রদত্ত সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
৫০ হাজার মেট্রিকটন ইউরিয়া সার সরবরাহ, আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের জন্য নেপালকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের সুযোগ এবং আকাশপথে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন নেপালের রাষ্ট্রদূত ড. বংশীধর মিশ্রা।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম, চেম্বারের নানা উদ্যোগ এবং নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস তুলে ধরেন।
তিনি আগামী ফেব্রুয়ারিতে সম্ভাব্য পিটিএ স্বাক্ষর উভয় দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
তবে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জনে চেম্বার সভাপতি শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূরীকরণ, প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সহজীকরণ, সীমান্তে সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা, সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং মিরসরাই ইকনোমিক জোনে নেপালি বিনিয়োগ আকর্ষণে রাষ্ট্রদূতের ব্যক্তিগত উদ্যোগ কামনা করেন।
চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ ধর্মীয় পর্যটন ও পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার ভ্রমণে নেপালি পর্যটকদের আহ্বান জানান।
চেম্বার পরিচালক সাকিফ আহমেদ সালাম নেপালি বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন।
মতবিনিময় শেষে রাষ্ট্রদূত ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের পারমানেন্ট এক্সিবিশন হল পরিদর্শন করেন।
বিএনএনিউজ/মনির