বিএনএ নোয়াখালী: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামালায় দুই জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।
সোমবার (০৪ অক্টোবর) এই রায় ঘোষণা করেন নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জয়নাল আবেদীন। এরআগে সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করানো হয়।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলু ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোহাম্মদ আলী ওরফে আবুল কালাম। আসামিরা বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ লাবলু, বাদীপক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন এবং আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বাদল।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ লাবলু জানান, আলোচিত গৃহবধূ ধর্ষণ মামলাটিতে আদালতে সাক্ষী উপস্থাপন, জেরা ও জবানবন্দি সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ১২ জন ও আসামিপক্ষে ৩ জন সাফাই সাক্ষী দিয়েছেন। এ রায়ে তারা সন্তুষ্ট বলে জানান অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ লাবলু।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে আদালত। পরে গত ১৮ আগস্ট আসামিদের উপস্থিতিতে বাদির সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই নারীর সঙ্গে তরা আগের স্বামী দেখা করতে তার বাবার বাড়ি একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে এসে তাদের ঘরে প্রবেশ করেন। বিষয়টি দেখতে পেয়ে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেন দেলু রাত ১০টার দিকে লোকজন নিয়ে ওই গৃহবধূর ঘরে গিয়ে পর পুরুষের সঙ্গে অনৈতিক কাজ করছে-এমন অভিযোগ তোলে তাকে কুপ্রস্তাব দেয়। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গৃহবধূকে মারধর শুরু করে তারা। এক পর্যায়ে তাকে পিটিয়ে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করা হয়। পরে নির্যাতনের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
ধর্ষণের ঘটনায় গত ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর দেলোয়ার হোসেন ও আবু কালামকে আসামি করে বেগমগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন নির্যাতিতা ওই নারী। মামলায় অভিযুক্ত দুই আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরবর্তীতে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) স্থানান্তর করা হয়।
বিএনএনিউজ/আরকেসি