বিএনএ ডেস্ক: আজ রোববার থেকেই সরকারের পদত্যাগের দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একই সঙ্গে আজই ঢাকাসহ সব মহানগর ও জেলার প্রতিটি ওয়ার্ডে কর্মী জমায়াতের ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
গত জুলাইয়ের মাঝামাঝি কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ছড়ায় সারা দেশে। সার্বিক পরস্থিতি বিবেচনায় কারফিউ পর্যন্ত জারি হয়েছে। এ অবস্থায় শনিবার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলীয় কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সে অনুযায়ী, রোববার কর্মী জমায়াত ছাড়াও শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে সোমবার বেলা ৩টায় হবে শোক মিছিল।
তিনি বলেন, ‘রোববার ঢাকা সিটির সব ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে জমায়েত, বাংলাদেশের সকল জেলা ও মহানগরে কর্মী জমায়েত কর্মসূচি। পরদিন ৫ আগস্ট রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইন্সটিটিউশন থেকে শুরু হয়ে ধানমন্ডি ৩২ এ বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শোক মিছিল করবে।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘অবুঝ শিশু কোনো রাজনৈতিক বিবেচনায় পড়ে না। অবুঝ শিশুকে হত্যা করে, অবুঝ শিশুর তাজা প্রাণ ঝরিয়ে সরকারি দলের কোনো লাভ নেই। ১/২, কয়েকটা শিশুকে মেরে আমাদের কী লাভ? লাভ তাদের, যারা শিশুর লাশ থেকে ফায়দা লুটতে চায়। ইউনিসেফকে বলব- ৩২ শিশুর নাম ঠিকানা সহ জানতে চাই। এটা পেলে আমরা ব্যবস্থা নিব, সত্য খুঁজে বের করব।’
আর শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় কর্মসূচি শেষে নতুন দাবি জানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দেন ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা।
এক দফা ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ‘আমরা বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করছি। একই সাথে সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্বে একটি গ্রহণযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানাচ্ছি।’
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ‘যেহেতু, বর্তমান সরকারের নির্দেশে নির্বিচারে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। নারী-শিশু-ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিক কেউ এই গণহত্যা থেকে রেহাই পাননি। যেহেতু, সরকার এই হত্যাযজ্ঞের বিচার করার পরিবর্তে নির্বিচারে ছাত্র-জনতাকে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করছে। যেহেতু, সরকারের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মরণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে হত্যাযজ্ঞ সংঘটন করেছে। যেহেতু, ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিক-মজুরসহ আপামর জনগণ মনে করছে এই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ বিচার এবং তদন্ত সম্ভব নয়। সেহেতু, আমরা বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করছি। একই সাথে সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্বে একটি গ্রহণযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানাচ্ছি।’
কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় গত ১৬ জুলাই থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় এখন পর্যন্ত সরকারি হিসাবে নিহতের সংখ্যা ১৫০। তবে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই সংখ্যা ২৬৬ জন।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ