28 C
আবহাওয়া
১২:৪৩ পূর্বাহ্ণ - জুলাই ৭, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » জোরালো হচ্ছে কোটাবিরোধী আন্দোলন

জোরালো হচ্ছে কোটাবিরোধী আন্দোলন

sahbug

বিএনএ ডেস্ক: সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন জোরালো হচ্ছে। উচ্চ আদালতের রায়ে চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল হওয়ায় আবারও ফুঁসে উঠেছেন কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা। হাইকোর্টের রায়ের পর থেকে দাবি আদায়ে বিক্ষোভ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ হয়েছে আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়েও। শিক্ষার্থীদের এমন আন্দোলন ২০১৮ সালের স্মৃতি মনে করিয়ে দিচ্ছে।

দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের তুমুল আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। সেখানে বলা হয়েছিল, ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। ওইসব গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা বাতিল করা হয়।

তবে গত ৫ জুন ২০১৮ সালের জারিকৃত পরিপত্রটি এক আদেশে বাতিল করেন হাইকোর্ট। এরপর আবারও ফুঁসে ওঠে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। হাইকোর্টের এমন আদেশের পর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাসগুলোতে। গতকাল বুধবারও ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা। এতে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। কোটা পদ্ধতি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন শিক্ষার্থীরা।

শাহবাগ অবরোধের সময় বক্তব্য দেন ফারাবী আলম শ্রাবণ নামে এক শিক্ষার্থী। তিনি মুক্তিযোদ্ধা কোটাধারী হয়েও কোটার বিরুদ্ধে বলে জানান। শ্রাবণ বলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। আমার কোটার প্রয়োজন নাই। আমাদের কারোরই কোটার দরকার নাই। ৩০ শতাংশ কোটা দেওয়াটা অন্যায্য। আমি নিজে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হয়েও আমার ব্যক্তিগত জায়গা থেকে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারকে আহ্বান করছি আপনারা দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ান। আপনাদের দেশের মানুষ চায়। বিজয় আমাদের আসবেই।’

রামিয়া হৃদি নামে কুয়েত মৈত্রী হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘২০২৪ সালে এসে নারী কোনো দুর্বলতার পরিচয় নয়৷ নারীরা এখন যথেষ্ট উন্নত৷ আমরা পুরুষদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই চাকরি করতে চাই, চাকরি পেতে চাই।’

তাওহীদা নামে উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডি ডিপার্টমেন্টের দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘কোটা পদ্ধতির কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি অবিচার করা হবে। কোটার এই নীতি বাদ দেয়া হোক। যারা যোগ্য তারা তাদের স্থান পাক।’

তামান্না নামে এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি আমরা চাই না। মেধার ভিত্তিতে আমাদের প্রশাসন চাই। কোটা ব্যবস্থা যেন দ্রুত বাতিল করা হয় সেই দাবি করছি।’

একই দাবিতে গতকাল আরো দেশের ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও অবরোধ করেছেন। এর মধ্যে ময়মনসিংহে রেললাইনে ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে কিছু সময়ের জন্য অবস্থান নেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও।

আজ সরকারি চাকরিতে কোটার পরিপত্র বাতিলসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উচ্চ আদালতে শুনানির জন্য দিন ধার্য আছে। কোটা বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জমায়েতের কর্মসূচি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ