বিএনএ, বিশ্ব ডেস্ক: ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের মাঝে ইউরোপের বৃহত্তম জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আগুন লেগেছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা এর জন্য রুশ সেনাদের গুলিকে দায়ী করছে। খবর-বিবিসি।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম জানায়, দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছয়টি পারমাণবিক চুল্লির মধ্যে একটির কাছে আগুন লেগেছে। প্ল্যান্টের মুখপাত্র বলছে, রুশ গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে এবং দমকলকর্মীরা এখনো আগুন নেভাতে পারেনি।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি জরুরি সাহায্যের জন্য আবেদন জানিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। শুক্রবার ভোর রাতে সম্ভাব্য পারমাণবিক বিপর্যয়ের বিষয়ে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয়রা, দয়া করে জাগো!’
এ বিষয়ে জেলেনস্কির নেতৃত্বাধীন দলের সঙ্গে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি।
আইএইএ জানায়, প্ল্যান্টে ‘প্রয়োজনীয়’ সরঞ্জাম এখনো কাজ করছে। সংস্থাটি টুইটারে পোস্ট বলছে, ইউক্রেন জানিয়েছে জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অগ্নিকাণ্ডে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামকে প্রভাবিত করেননি। একই কথা বলছেন প্ল্যান্টটির কর্মকর্তারা।
জাপোরিঝিয়া আঞ্চলিক রাজ্য প্রশাসনের প্রধান আলেক্সান্ডার স্টারুক জানান, কেন্দ্রের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত হয়েছেন। এ আগুনের খবর তখনই এলো যখন ইউক্রেনের শীর্ষ কর্মকর্তারা রাশিয়ার গোলাবর্ষণের কারণে সম্ভাব্য পারমাণবিক বিপর্যয়ের বিষয়ে সতর্ক করেছেন। আইএইএ প্ল্যান্টের কাছাকাছি হামলা বন্ধ করার জন্য আবেদন করেছে। সতর্ক করে দিয়েছে যে, চুল্লিতে আঘাত লাগলে মারাত্মক বিপদ হবে।
তারা জানায়, প্ল্যান্টে বিকিরণের মাত্রার কোন পরিবর্তন শনাক্ত করা যায়নি, তবে ক্রমাগত রাশিয়ান গোলাগুলির মধ্যে উদ্বেগ রয়ে গেছে।
এ দিকে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পারমাণবিক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ গ্রাহাম অ্যালিসন বলেছেন, আগুন অব্যাহত থাকলে চুল্লিটি গলে যেতে পারে। সতর্ক করে বলেন, তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ছে ১৯৮৬ সালের সালের চেরনোবিল দুর্যোগের মতো আশপাশের অঞ্চল দূষিত হয়ে পড়বে। যা বছরের পর বছর চলতে থাকবে।
অ্যালিসনের মতে, আশপাশের এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করতে রুশ বাহিনী কেন্দ্রটিকে অফলাইন করার চেষ্টা করছে। ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র জাপোরিঝিয়া ইউক্রেনের প্রায় এক-চতুর্থাংশ বিদ্যুতের জোগান দেয়।
বিএনএনিউজ২৪/এমএইচ