30 C
আবহাওয়া
৫:০৭ পূর্বাহ্ণ - মে ৩০, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ইমরান-বুশরার বিয়ে বাতিল!

ইমরান-বুশরার বিয়ে বাতিল!


বিএনএ, ডেস্ক : “ক্যাঙ্গারু কোর্ট” শব্দটি মূলত একটি বাগধারা যা দ্বারা এমন এক আদালতকে বোঝায় যার কার্যধারা স্বীকৃত আইনি নিয়মের সাথে মেলে না এবং সেগুলো ন্যায্য বলে বিবেচনা করা যায় না। এক সপ্তাহের মধ্যে ইমরান খানকে তৃতীয় এবং তার স্ত্রীকে দ্বিতীয় কারাদণ্ড দিয়েছে পাকিস্তানের আদালত। সর্বশেষ ৪ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের একটি আদালত দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তার তৃতীয় স্ত্রী বুশরার বিয়ে বাতিল করেছে। অবৈধ বিয়ের অভিযোগে তাদের সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।

বিবিসি জানিয়েছে, ২০১৮ সালে আধ্যাত্মিক পরামর্শদাতা বুশরা বিবির সাথে ইমরান খানের যে বিয়ে হয়েছে, তা ছিল অনৈসলামিক এবং অবৈধ ঘোষণা করেছে আদালত।

দেশটির সাধারণ নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে, এই দম্পতিকে রাষ্ট্রীয় উপহার থেকে সুবিধা নেয়ার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।৭১ বছর বয়সী ইমরান খান বলেছেন, তার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা রয়েছে যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দুর্নীতির দায়ে ইমরান খান ইতিমধ্যেই কারাগারে রয়েছেন।তার স্ত্রী বুশরাও নিজ বাড়িতে কারাভোগ করছেন।

পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক এবং বর্তমানে এই রাজনীতিবিদকে ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

সর্বশেষ মামলার জন্য রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারের ভিতরে একটি আদালত স্থাপন করা হয়েছিল, যেখানে ইমরান খান তার আগের সাজা ভোগ করছেন।

বুশরা বিবির প্রাক্তন স্বামী খাওয়ার মানেকা নতুন এই মামলা দায়ের করেছেন। সর্বশেষ ২০১৭ সালের বিবাহবিচ্ছেদের আগে বুশরা বিবির সাথে তার ২৮ বছরের সংসার ছিল। খাওয়ার মানেকা দাবি করেছেন যে ইমরান খানের সাথে বুশরা বিবির বিয়ে প্রতারণামূলক ছিল। সরকারি কর্মচারী এবং সুপরিচিত এক রাজনীতিবিদের ছেলে খাওয়ার মানেকা।
২০২৩ সালে নভেম্বরে তিনি বুশরার নামে ‘বিয়েতে প্রতারণা এবং ব্যভিচারের’ অভিযোগ দায়ের করেন। ব্যভিচারের অভিযোগ বাতিল করলেও প্রতারণার অভিযোগটি আমলে নেয় আদালত।

মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী, স্বামীর মৃত্যু বা বিবাহ বিচ্ছেদের পর তিন মাসের মধ্য নারীদের পুনরায় বিয়ে করা নিষিদ্ধ।

আদালত বলেছে যে বুশরা বিবি তার বিবাহ বিচ্ছেদের পর নির্ধারিত সময় পূর্ণ হওয়ার আগেই পুনরায় বিয়ে করেছেন। সাত বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি, আদালত খান এবং বিবিকে পাঁচ লাখ রুপি জরিমানা করেছে।
ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার ৬ মাস আগে ২০১৮ সালে বুশরা বিবিকে বিয়ে করেছিলেন।
বিবি, একজন আধ্যাত্মিক পরামর্শদাতা এবং তার বয়স চল্লিশের মতো বলে বিশ্বাস করা হয়। তিনি সর্বদা জনসমক্ষে বোরকা পরেন এবং তিনি খানের তৃতীয় স্ত্রী।

১৯৯৫ সালে সুপরিচিত ব্রিটিশ নাগরিক জেমিমা গোল্ডস্মিথের সাথে বিয়ের আগ পর্যন্ত ইমরান খান তার ক্রিকেটে ক্যারিয়ারের বছরগুলোয় প্লেবয় খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।

তখন মি. খানের বয়স ৪৩ বছর আর জেমিমার বয়স ছিল ২১ বছর। মিজ গোল্ডস্মিথের বাবা সেসময় বিশ্বের সবচেয়ে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের একজন ছিলেন। তার সেই প্রথম বিয়ে নয় বছর স্থায়ী হয়েছিল এবং দুটি পুত্রের জন্ম হয়েছিল।
এরপর ২০১৫ সালে সাংবাদিক এবং বিবিসির সাবেক আবহাওয়া উপস্থাপক রেহাম খানের সাথে ইমরান খানের দ্বিতীয় বিয়ে হয়। কিন্তু সেই বিয়ে এক বছরও স্থায়ী হয়নি।

রেহাম খানের দাবি, ইমরান খানের সমর্থকরা তাকে হেনস্তা করেছিল এবং এ নিয়ে পরে একটি বইও লেখেন তিনি।এর বিপরীতে, ইমরান খানের ২০১৮ সালে বুশরা বিবির সাথে বিয়ে ছিল খুবই সাদামাটা।

পর্যবেক্ষকদের মতে, তাদের বিয়ে ইসলামের প্রতি ইমরান খানের আনুগত্যকে জনগণের সামনে বেশ ভালোভাবে উপস্থাপন করেছিল।

বলা হয়ে থাকে, একবার ইমরান খান ১৩ শতকে নির্মিত এক দরগায় পরামর্শের জন্য গিয়েছিলেন পাঁচ সন্তানের মা বুশরা বিবির কাছে। তখনও বুশরা বিবি তার প্রথম স্বামীর সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চার বছরের মধ্যেই মি. খানের রাজনৈতিক জীবনে ঝামেলা শুরু হয়। এক পর্যায়ে ২০২২ সালে তাকে সংসদ়ে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। গত বছরের আগস্টে গ্রেফতারের পর থেকে আটক রয়েছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

সর্বশেষ এই সাজা ঘোষণার আগেই, খান এবং তার দলকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কারণে অনেকেই আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে হতে যাওয়া নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কর্তৃপক্ষ ক্র্যাকডাউন চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করলেও পিটিআই নেতাদের অনেকেই কারাগারে আছেন বা দেশ ছেড়ে গিয়েছেন।

গত বছর ইমরান খানকে যখন পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়, তখন তার দলের হাজার হাজার সমর্থক বিক্ষোভ করে। যা এক পর্যায়ে সহিংসতায় রূপ নিয়েছিল।

পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে এবারও জয়ী হওয়ার পথে এগিয়ে আছেন নওয়াজ শরিফ। তিনি পাকিস্তানের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী।

২০১৮ সালের নির্বাচনে ইমরান খান জয়ী হওয়ার আগে তাকে দুর্নীতির জন্য জেলে পাঠানো হয়েছিল। অনেক বিশ্লেষক বলেছেন যে তিনি এখন পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক সংস্থার পক্ষ সমর্থন করছেন। নওয়াজ শরিফ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার।

বিএনএ/ শামীমা চৌধুরী শাম্মী, ওজি/এইচমুন্নী

 

Loading


শিরোনাম বিএনএ