বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হবে করোনা টিকা কার্যক্রম। শিক্ষা উপ-মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এ টিকা কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী দিনে চিকিৎসক-নার্সসহ সম্মুখসারির ২৫ জনকে টিকা দেয়া হবে।
চমেক সূত্রে জানা যায়, চমেক হাসপাতালের চতুর্থ তলায় করোনার টিকাদানের বুথ স্থাপনের কাজ চলছে। চারটি বুথ স্থাপনের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। পাশাপাশি স্থাপন করা হবে অবজারভেশন কক্ষও। যাতে টিকাগ্রহীতাকে নির্দেশনা অনুযায়ী পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। ইতোমধ্যে টিকাদানের কক্ষে কমপিউটার ও ইন্টারনেটের সংযোগ স্থাপন শেষ হয়েছে।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, করোনার টিকা দেওয়ার জন্য থাকছে ১০টি টিম। চারটি বুথের মধ্যে নারী পুরুষদের জন্য আলাদা কক্ষে টিকা দেওয়া হবে। পর্যবেক্ষণ কক্ষও হবে পৃথক। এছাড়া টিকাগ্রহণকারীদের পর্যবেক্ষণে ১২ জনের একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিমও থাকবে তাতে। যারা টিকা দিতে আসবেন, তাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো দেখেই টিকাদানের বিষয় নিশ্চিত করবেন তারা।
এদিকে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ১৫টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে টিকাদানের সাথে ১৭০ জন নার্স, মিডওয়াইফসহ অন্য কর্মীদের দুইদিনের প্রশিক্ষণ শেষ হচ্ছে আজ (বৃহস্পতিবার)। তারা আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে টিকাদানে নির্ধারিত কেন্দ্রগুলোতে সরাসরি টিকা প্রদানে সংযুক্ত থাকবেন।
চট্টগ্রামের যে ১৫ হাসপাতালে করোনার টিকা দেওয়া হবে, সেগুলো হলো— চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম সেনানিবাস হাসপাতাল, চট্টগ্রাম পুলিশ হাসপাতাল, সিটি কর্পোরেশন জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম নৌ-বাহিনী হাসপাতাল, চট্টগ্রাম বিমান বাহিনী হাসপাতাল, চট্টগ্রাম বন্দর হাসপাতাল, চসিক বন্দরটিলা হাসপাতাল, চসিক মোস্তফা হাকিম মাতৃসদন হাসপাতাল, চসিক ছাফা মোতালেব মাতৃসদন হাসপাতাল, ইউএসটিসি হাসপাতাল, সাউদার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মা ও শিশু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
অন্যদিকে চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলায় করোনার টিকা দেয়া হবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে দুটি (দুজন টিকাদানকারী ও চারজন স্বেচ্ছাসেবক) করে টিম টিকাদানে নিয়োজিত থাকবে।
জানা যায়, করোনার ভ্যাকসিন পেতে অগ্রাধিকার তালিকাভুক্তদের অবশ্যই অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কেউ ভ্যাকসিন পাবে না। এজন্য ‘সুরক্ষা’ নামে একটি অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। ভ্যাকসিন পেতে তালিকাভুক্তরা সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মের ওয়েব এপ্লিকেশনে (www.surokkha.gov.bd) গিয়ে অথবা মোবাইলে অ্যাপ ডাউনলোড করে নিবন্ধন করা যাবে। এছাড়া অ্যাপটি বিনামূল্যেই ডাউনলোড করা যাবে।
রেজিস্ট্রেশন করতে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও মোবাইল নম্বর দিয়ে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের সময় কেন্দ্রও পছন্দ করা যাবে। রেজিস্ট্রেশনকারী ব্যক্তি করোনার গ্রহণের তারিখ ও কেন্দ্র সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তার মোবাইল ফোনে পেয়ে যাবে। নির্দিষ্ট তারিখে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ভ্যাকসিন নিতে পারবে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের জন্য ৩৮ কার্টন টিকা ও অতিরিক্ত আরো ৪ কার্টনসহ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪২ কার্টন। এসব কার্টনে ৫০ হাজার ৪০০ ভায়াল হিসেবে মোট ৫ লাখ ৪ হাজার ডোজ টিকা রয়েছে। প্রথম দফায় বরাদ্দের ৩৮ কার্টন (৪ লাখ ৫৬ হাজার ডোজ) টিকা পাঠানো হয়েছে। এসব টিকা রাখা হয়েছে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ইপিআই স্টোরে। এই স্টোরে ১ লাখ ডোজ টিকা সংরক্ষণের ধারণক্ষমতা রয়েছে।
বিএনএনিউজ/মনির