বিএনএ, ঝিনাইদহঃঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের ৮ গ্রামের পুরুষ মানুষ গ্রেফতার আতংকে বাড়িছাড়া রয়েছে। পুলিশের ওপর হামলা মামলার আসামী হয়ে তারা বাড়ি ছেড়েছে। গ্রামগুলোতে দেখা গেছে কোন পুরুষ সদস্য বাড়ি নেই। শিশু ও মহিলারা চরম আতংকে দিন কাটাচ্ছে।
জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শৈলকুপা উপজেলার ৭ নং হাকিমপুর ইউনিয়নের বিপ্রবগদিয়া গ্রামে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশসহ আহত হন ২০/২৫ জন লোক। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৭৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৬শ’ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে মামলা মামলা দায়ের করে পুলিশ। আর এই মামলার জের ধরে উপজেলার বিপ্রবগদিয়া, চামটাইলপাড়া, হরিহরা, সাধুহাটি, রাগপাড়া, খুলুমবাড়ি, নলখোলা ও বরিয়া গ্রামের বেশীরভাগ পুরুষই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ফলে অন্যান্য ইউনিয়নে নির্বাচনী আমেজ লক্ষ্য করা হলেও হাকিমপুর ইউনিয়নে নির্বাচনী কোন আমেজ নেই। সব সময় আতংক বিরাজ করছে।
হরিহরা গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজুর রহমান বলেন, অনেক আশা ছিল উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে নির্বাচন করবো কিন্তু তা আর হল না। আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে সব কিছু পন্ড করে দিয়েছে। ফলে বেশীর ভাগ পুরুষরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
বরিয়া গ্রামের বাসিন্দা রেহানা বেগম বলেন, আমার স্বামী শ্রমিকের কাজ করে। আমরা নিরাপরাধ মানুষ। পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে মামলা হওয়ায় সেও ভয়ে পালিয়ে আছে। কাজ করতে না পারায় সংসার চলছে না।
হাকিমপুর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামান জিকু বলেন, প্রতিদিনই পুলিশ কোন না কোন বাড়িতে তল্লাশী চালাচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়ছে। পুরুষশূণ্য হয়ে পড়েছে ইউনিয়নের ৮টি গ্রাম। এভাবে চলতে থাকলে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট হবে। তিনি পুলিশ প্রশাসনের কাছে নির্বাচনের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ দাবী করেন।
শৈলকুপা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা মানুষের জানমালের রক্ষায় কাজ করতে এসেছি। যারা নিরাপরাধ মানুষ তাদের হয়রানি করার প্রশ্নই আসে না। তবে যারা অপরাধী তাদেরকে আইনের আওতায় আসতেই হবে। পুলিশের ওপর যারা হামলা করেছে, যারা নিরাপরাধ মানুষের বাড়ি ভেঙ্গেছে তারা আইনের আওতায় আসবে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ নভেম্বর হাকিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শৈলকুপার বিপ্রবগদিয়া গ্রামে বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী কামরুজ্জামান জিকু ও অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী বিপ্রবগদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান সাচ্ছুর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ৩ পুলিশসহ ২০ ব্যক্তি আহত হন।
বিএ্নএ নিউজ/আতিক রহমান, ওজি