বিএনএ, চট্টগ্রাম : ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব একটি সুযোগসন্ধানী চক্রের হাতে দখল হয়ে আছে। মব সৃষ্টির মাধ্যমে দখলের পর দখলদাররা ক্লাবের সহায় সম্পদ ও অর্থ নিয়ে বর্তমানে ছিনিমিনি খেলছে। ক্লাবের নিয়মিত আয় থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের অর্থ তছরূপ করা হচ্ছে। যা অনাকাক্সিক্ষত ও উদ্বেগজনক।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রায় এক বছর হতে চলেছে, দখলদারদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করে সদস্যরা ক্লাবে যাতায়ত থেকে বিরত রয়েছেন। এরপরও সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব নিয়ে সৃষ্ট দুঃখজনক এবং কলংকময় পরিস্থিতির অবসানে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। অথচ চট্টগ্রামে সুষ্ঠু রাজনীতি, প্রশাসনিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ভূমিকা অগ্রণী ও অপরিসীম।
গত বছরের ৩ নভেম্বর চট্টগ্রামের ডিসির নেতৃত্বে ক্লাব নিয়ে কথিত চার সদস্যের একটি অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ডিসির এহেন হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট মামলা চলমান রয়েছে। কথিত সেই কমিটির আহ্বায়কের পদ থেকে ডিসি গত ৩১ জুলাই তারিখে নিজে নিজে অব্যাহতি নিয়েছেন। অব্যাহতি নেয়ার আগে কথিত ওই কমিটি যখন ইচ্ছে তখন গঠনতন্ত্রকে উপেক্ষা করে ক্লাবের অনেক সদস্যকে কথিত বহিষ্কারের যেমন স্পর্ধা দেখিয়েছে তেমনি ঢালাওভাবে অবৈধ প্রক্রিয়ায় সদস্যপদ ও প্রদান করেছে। ক্লাবের গঠনতন্ত্র অনুসরণ না করে এসব অপকর্ম ডিসি এবং কথিত অন্তর্বর্তী কমিটির কথিত সদস্য সচিবের স্বাক্ষরেই হয়েছে। গুরুতর এসব অভিযোগ ওঠার পর ডিসি ওই পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন বলে প্রতীয়মান।
শুরু থেকে ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকে ডিসিকে সাবধান করা হয়েছিল যে, এ ক্লাব সরকারি অর্থে বা অনুদানে পরিচালিত নয়। এটি কোনো ট্রেডবডিও নয়। এটি কর্মরত সাংবাদিকদের মালিকানার সম্পূর্ণ বেসরকারি একটি ক্লাব। দেশের কোনো আদালতের নির্দেশ ছাড়া এ ক্লাবের কর্মকান্ড নিয়ে কারও হস্তক্ষেপের অবকাশ নেই। যে কেউ ইচ্ছেমাফিক কিছু করার সুযোগ নেই। তারপরও ডিসি সম্পূর্ণ অবৈধভাবে কথিত একটি অন্তর্বর্তী কমিটি করে কিছু সুযোগসন্ধানীদের হাতে ঐতিহ্যবাহী এ ক্লাবকে সঁপে দিয়ে নজিরবিহীন ও ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন। মব সৃষ্টিকারীদের সকল কুকর্ম গ্রহণযোগ্যতা প্রদানের অপচেষ্টা চালিয়েছেন। ক্লাবের একটি গঠনতন্ত্র রয়েছে। গঠনতন্ত্রের বাইরে কোনো ধরনের কর্মকান্ড চালানোর সুযোগ নেই।
বিবৃতিতে বলা হয়, এ অবস্থায় ডিসির অব্যাহতি গ্রহণের পর কথিত ওই অন্তর্বর্তী কমিটির খন্ডিত অংশ ভাড়া দেয়ার নামে ক্লাবের গুরুত্বপূর্ণ একটি ফ্লোর স্পেস হাতছাড়া করার অপচেষ্টা শুরু করেছে। ক্লাবের নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত ব্যাতিরেকে এ ধরনের কর্মকান্ড গ্রহণযোগ্য নয়। সঙ্গত কারণে এ কাজে অংশ না নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হচ্ছে। যদি কেউ অংশ নেন ভবিষ্যতে এর দায়দায়িত্ব তাদেরকেই বহন করতে হবে। পাশাপাশি অবিলম্বে নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটির হাতে ক্লাবের সকল কর্মকান্ড পরিচালনার দায়দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার জন্য সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
– প্রেস বিজ্ঞপ্তি