20.7 C
আবহাওয়া
৭:৪৮ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » হ্রদের পানিতে ডুবে গেল ‘সিম্বল অব রাঙামাটি’

হ্রদের পানিতে ডুবে গেল ‘সিম্বল অব রাঙামাটি’


।।কাইমুল ইসলাম ছোটন।।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি, হ্রদ পাহাড়ের জেলা রূপের রানী রাঙামাটির ‘সিম্বল অব রাঙামাটি’ খ্যাত পর্যটন কর্পোরেশনের ঝুলন্ত ব্রিজটি কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ডুবে গেছে। কাপ্তাই হ্রদের পানি তুলনামূলক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সেতুটি ডুবে গেছে বলে জানা যায়।

জানা গেছে, সেতুটি তৈরি করার সময় কাপ্তাই হ্রদের রুল কার্ভ মেনে তৈরি না করায় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম শেষে কাপ্তাই হৃদের পানি বৃদ্ধি পেলে ডুবে যায় সেতুটি। রাঙামাটির পর্যটন শিল্পের আইকন খ্যাত ঝুলন্ত সেতুটি হ্রদের পানিতে তলিয়ে গেলে সেতু সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী এবং পর্যটকদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে দাবি পর্যটন সংশ্লিষ্টদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, হ্রদের পানি উঠে ডুবে গেছে সেতুর পাটাতন, অনেক জায়গায় ভেঙে গেছে পাটাতনের কাঠ। পানিতে ডুবতে থাকা ভাঙা পাটাতন দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে পর্যটকরা। অনেকে সেতুর দড়ি ধরে পার হচ্ছেন পানি উঠে যাওয়া পাটাতনের অংশগুলো। এতে একদিকে যেমন ঝুঁকি বাড়ছে চলাচলকারীদের, অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হচ্ছে সেতুর কাঠামোর।

কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক নুরুল হুদা বলেন, আগে আমরা ঝুলন্ত ব্রিজ দেখতে আসলে এই রকম ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়নি। বর্তমানের পরিবেশ নিয়ে অনেক পর্যটকদেরই অভিযোগ রয়েছে। আমি কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, এই ব্রিজটি সংস্কারের মাধ্যমে আরো উপরে উঠানো হোক। তাতে ব্রিজটি ডুবেও যাবেনা এবং বেড়াতে আসা পর্যটকদের হতাশও হতে হবেনা।

পর্যটক মোনালিসা বর্মন বলেন, আমরা পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছি। ঝুলন্ত ব্রিজে এসে আমরা সত্যিই হতাশ হয়েছি। কারণ ব্রিজে ইতোমধ্যেই  পানি উঠে গেছে। আর দু’একদিন পর যারা বেড়াতে আসবে তাদের হতাশ হয়ে ঝুলন্ত ব্রিজ ভ্রমণ না করেই ফিরে যেতে হবে, অথচ এই ব্রিজটিই রাঙামাটিকে রিপ্রেজেন্ট করে।

পানি উঠে সেতু ডুবে গিয়ে পর্যটক সমাগম বন্ধ হয়ে গেলে পর্যটকদের হতাশার পাশাপাশি ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে ঝুলন্ত ব্রিজ সংশ্লিষ্ট পর্যটক নির্ভর ব্যবসায়ীরা।

টুরিস্ট বোট চালক আবদুল মান্নান বলেন, আমরা যারা বোট চালাই আমাদের ব্যবসাটা সম্পূর্ণভাবে পর্যটকদের উপর নির্ভরশীল। ব্রিজ ডুবে গেলে আর পর্যটক আসবে না, তাতে করে আমাদের চরম ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হবে। এই সমস্যা নিরসনে আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করি।

রাঙামাটি ট্যুারিস্ট বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি ও পর্যটক ঘাটের ইজারাদার রমজান আলী বলেন, এই বর্ষায় রাঙামাটিতে আশানুরুপ পর্যটক সমাগম হয়নি। তার উপর ব্রিজে পানি উঠে ব্রিজ ডুবে গেছে। আপাতত ব্রিজে পর্যটক উঠা নিষিদ্ধ করেছে পর্যটন কর্পোরেশন। আমরা ব্যবসায়িক ক্ষতির সন্মুখিন হলাম।

ঝুলন্ত ব্রিজ সংলগ্ন পার্কে স্থানীয় পাহাড়ি পণ্য বিক্রেতা বিবেক মারমা বলেন, প্রতি বছর বর্ষা আসলে অথবা বর্ষার শেষে ব্রিজটি ডুবে যায়। আমাদের ব্যবসাগুলো টুরিস্টদের উপর নির্ভরশীল। এমনিতে এই বছর আমরা তেমন ব্যবসা করতে পারিনি। এখন যদি আবার পর্যটক আসা বন্ধ হয়ে যায় তবে তা আমাদের জন্য খুবই ভয়ানক হবে।
ব্রিজ ডুবে যাওয়ার খবরে ইতিমধ্যেই কমতে শুরু করেছে পর্যটক সমাগম। যারা আসছেন তারাও জানাচ্ছেন তাদের হতাশার কথা।

এই ব্যাপারে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন রাঙামাটির ব্যবস্থাপক অলক বিকাশ চাকমা বলেন, ব্রিজে পানি উঠাতে আমরা আপাতত পর্যটক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছি। আশা করছি দু’একদিনের মধ্যে পানি কমে যাবে, তখন আমরা আবার পর্যটকদের জন্য ব্রিজ উন্মুক্ত করে দিব।

পর্যটক সমাগম কমে গেলে ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্ভাবনাকে নাকচ করে তিনি বলেন, যেহেতু বর্ষা মৌসুম শেষ হয়ে গিয়েছে এবং কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সুইস গেটগুলো খোলা আছে তাই আমরা আশা করছি অচিরেই পানি কমে যাবে এবং পর্যটন সংশ্লিষ্ট কাউকেই ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবেনা।

বিএনএ/ ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ