27 C
আবহাওয়া
৬:৪৬ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » চা শ্রমিকদের ঘর দেয়ার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর

চা শ্রমিকদের ঘর দেয়ার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর

চা শ্রমিকদের ঘর দেয়ার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর

বিএনএ ডেস্ক: আওয়ামী লীগ সরকার চা শ্রমিকদের উন্নত জীবন নিশ্চিত করার জন্য সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। জাতির পিতা যেমন নাগরিকত্ব দিয়েছিলেন, তেমনি নিজের দায়িত্ববোধ থেকে ঘর করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চা শ্রমিকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি মতবিনিময়কালে একথা বলেন তিনি। ভিডিও কনফারেন্সে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট ও চট্টগ্রাম থেকে যোগদানকারী চা শ্রমিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ দায়িত্ব সরকার নেওয়ার পর থেকেই চা শিল্পকে বিকশিত করার পাশাপাশি চা শ্রমিকরা যাতে উন্নত জীবনযাপন করতে পারে সে বিষয়ে সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, চা শ্রমিকদের সকল সমস্যা সমাধান এবং চা শিল্পকে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য সর্বদা সচেষ্ট রয়েছি। পরিকল্পনা অনুযায়ী পঞ্চগড়ে নতুন করে চা চাষ শুরু হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতাই চা বোর্ডের প্রথম চেয়াম্যান ছিলেন। পরে ১৯৫৮ সালে তিনি গ্রেফতার হলে ২৩ অক্টোবর স্বৈরশাসক আইয়ুব খান সে দায়িত্ব কেড়ে নেন। কিন্তু তিনি সেই সময়েই চা-বাগান এবং শ্রমিকদের অবস্থা ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পেরেছিলেন। দায়িত্ব পালনকালে চা শিল্প যেন নব উদ্যোমে যাত্রা শুরু করতে পারে সে পদক্ষেপও তিনি নেন।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা মতিঝিলে চা বোর্ডের প্রধান কার্যালয়ের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করেন এবং ‘টি অ্যাক্টের ৭ নম্বর ধারার সংশোধনীতে ‘টি লাইসেন্সিং কমিটি বিলুপ্ত করে কমিটির কার্যক্রমকে টি বোর্ডের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসেন। মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে চা গবেষণাগারও নির্মাণ করেন এবং বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানাবিধ সুযোগ-সুবিধারও ব্যবস্থা করেন এবং ’৭০ এর নির্বাচনের প্রাক্কালে চা শ্রমিকদের বিশাল সমাবেশেও তিনি ভাষণ দেন এবং চা শ্রমিকদের অধিকারের কথা বলেন বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানীরা জ্বালাও পোড়াও এবং দেশের বিভিন্ন শিল্প কারখানা, রাস্তা-ঘাট, অবকাঠামো ধ্বংসের পাশাপাশি চা বাগানেরও ক্ষতি সাধন করে। কিন্তু জাতির পিতা দেশ স্বাধীনের পর পুনরায় এ শিল্পের পুনরুজ্জীবনে পদক্ষেপ নেন। চা শ্রমিকদের সাম্প্রতিক বিক্ষোভের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, চা বাগানের মালিকদের সাথে আলোচনা করে চা শ্রমিকরা যাতে সঠিকভাবে জীবনযাপন করতে পারে সেজন্য তাঁর সরকার তাদের দৈনিক মজুরি এবং অন্যান্য সুবিধা বৃদ্ধি করেছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি যে আমরা তাদের (চা শ্রমিকদের) দাবিগুলো উপলব্ধি করতে পারি।’
এর আগে গত শনিবার প্রধানমন্ত্রী চা বাগান মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন যেখানে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয় এবং তাদের জন্য অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা আনুপাতিক হারে বাড়ানো হবে বলেও জানানো হয়।

চা শ্রমিকদের বেতনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কথা মেনে নেয়ায় চা বাগান মালিকদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। মালিকরা তাদের কথা মেনে চলবেন এবং শ্রমিকদের প্রতি যত্নবান হবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, চা শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সুযোগ পেয়ে তিনি সত্যিই খুব খুশি এবং শ্রীমঙ্গলে চা বাগান পরিদর্শনকালে চা শ্রমিকদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলার অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমনকি উপহার নিয়ে চা শ্রমিকরা গণভবনে তাঁর সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে আসেন। যেটা তাঁর জন্য অনেক সম্মানের এবং চা শ্রমিকদের জমানো পয়সা এবং ভালবাসা দিয়ে প্রদান করা এত বড় উপহার আর কোনদিনও পাননি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সরকার সকলের জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা সহ সকল মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করছে। গৃহহীনদের বিনামূল্যে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করে দিচ্ছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান চা শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সকলের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা আমি করে দেব। এই মাটির ওপর আপনাদের অধিকারটা যেন থাকে সেই ব্যবস্থাটাই করে দিয়ে যাব ইনশাল্লাহ।

চা বাগানের মালিকদের পরিচালিত স্কুলগুলো জাতীয়করণের পাশাপাশি চা শ্রমিকদের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষসাধনের এবং চা শ্রমিকদের মাত্রিত্বকালীন ছুটি ছয় মাস করার ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

মত বিনিময়কালে চা শ্রমিকদের ছোট খাটো কয়েকটি প্রয়োজনের কথা জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে তা পূরণের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চা শিল্পটা যেন ধ্বংস না হয় সেজন্য তাঁর সরকারের প্রচেষ্টা সবসময় অব্যাহত থাকবে।

বিএনএ/ ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ