বিএনএ, ডেস্ক : সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে গত শনিবার থেকে বিক্ষোভ করছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা। রোববার তাঁরা দিনভর রাজধানীর শিশুমেলা মোড়ে মিরপুর সড়ক অবরোধ করেন। সন্ধ্যায় মিরপুর সড়ক ছেড়ে বিক্ষোভকারীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে যাত্রা করেন। সন্ধ্যা ৭টা ৩৯ মিনিটে শাহবাগ এলাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে পৌঁছান তাঁরা। সেখানে পুলিশের ব্যারিকেডে আটকা পড়েন। তখন ওই জায়গায় বসে বিক্ষোভ শুরু করেন গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা।
এরপর রাত পৌনে ১২টার দিকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনের ব্যারিকেড ভেঙে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে এগিয়ে আসেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের শান্ত করতে মধ্যরাতে সেখানে উপস্থিত হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
এ সময় হাসনাতকে উদ্দেশ্য করে আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘আমাদের আরও গুলি করুন, আমরা মরতে চাই। এই পঙ্গুত্ব জীবন নিয়ে আমরা বাঁচতে চাই না। হয় স্বীকৃতি দিন, না হয় আমাদের গুলি করে মেরে ফেলুন। স্বীকৃতি না দিলে আমরা আত্মহত্যা করব।’
নিজের অসহায়ত্বের কথা বলতে গিয়ে এক পর্যায়ে হাসনাত বলেন আহতদের পক্ষে কেউ নেই, সবাই আসন ভাগাভাগিতে ব্যস্ত!
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আহতদের সুচিকিৎসা দিতে পারে নাই, এটা সরকারের ব্যর্থতা। এ জন্য সরকারের আমলাতান্ত্রিক পদ্ধতি দায়ী, সচিবরা দায়ী, আমলারা দায়ী। যারা আহত হয়েছেন, তাদের আমরা সুচিকিৎসা দিতে পারি নাই, এ জন্য আমি নিজে ব্যথিত উল্লেখ করে আমলা, সচিবদের দিকে অস্ত্র তাক করার কথাও বলেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের এই আহ্বায়ক।
এ সময় আহতদের হাসপাতালে ফেরত যাওয়ার অনুরোধ করেন হাসনাত। কিন্তু আহতরা তার কথাতে আস্থা আনতে পারছিলেন না। আহতরা বলেন,শনিবার রাত থেকে তারা সড়কে অবস্থান করলেও সরকারের দায়িত্বশীল কেউ তাদের সঙ্গে দেখা করা তো দূরের কথা, ন্যূনতম সহানুভূতিও দেখাননি। অথচ জুলাই আন্দোলনে নিহত ও আহত মানুষদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে উল্লেখ করে হট্টগোল শুরু করে আহতরা।
এতে কিছুটা বিরক্ত ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্ববায়ক। তিনি বলেন শেখ হাসিনাকে তাড়িয়ে ভুল করেছি!
হাসনাত আব্দুল্লাহ আহতদের উদ্দেশ্যে বলেন, আহতদের দাবিগুলো নিয়ে সরকারের সঙ্গে তিনি আলোচনা করবেন। আহতদের দাবি অন্য কোনো সরকার নয়, একমাত্র অন্তর্বর্তী সরকারই পূরণ করবে।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়কের এমন আশ্বাসের পর আন্দোলনরত আহতরা রাত পৌনে ২টার দিকে যমুনার সামনের সড়ক ছেড়ে হাসপাতালে ফেরত যান।
বিএনএ/শামীমা চৌধুরী শাম্মী