26 C
আবহাওয়া
৮:০১ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ২০২০ সালে চট্টগ্রামে খুন ৮১

২০২০ সালে চট্টগ্রামে খুন ৮১


।।আমিন মুহাম্মদ ।।

গত এক বছরে  চট্টগ্রাম মহানগরীতে খুন হয়েছে ৮১ জন।  মহানগরীর ১৬ থানা এলাকায় এসব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। তবে মাদকের বিরুদ্ধে বছরজুড়েই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছিল কঠোর অবস্থানে। প্রচুর মাদকদ্রব্য বিভিন্ন সময় ধরা পড়েছে। এ কারণে মাদকের মামলাও হয়েছে বেশি।

ওই সময়ে মহানগরীর থানাগুলোতে নানা অপরাধে মামলা হয় ৬ হাজার ২৭০টি।  যার মধ্যে প্রায় অর্ধেকের মতো দায়ের হয় মাদক আইনে।  দস্যুতা, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, অপহরণ, নারী ও শিশু নির্যাতনসহ নানা অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সমানে সমান।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) সূত্র জানায়, বিদায়ী ২০২০ সালে মহানগরীর ১৬টি থানায় নানা অপরাধে মামলা হয়েছিল ৬ হাজার ২৭০টি।  এরমধ্যে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা হয়েছে ২ হাজার ৮৮৪টি।  হত্যা মামলা হয়েছে ৮১টি।

এছাড়া ডাকাতি ২টি, দস্যুতা ৮১টি, দ্রুত বিচার আইনে ১০৬টি, নারী ও শিশু নির্যাতনের দায়ে ৭৯৭টি, অপহরণ ১১টি, পুলিশ আক্রান্ত ১৬টি, সিধেঁল চুরি ১১৫টি, চুরি ১৮৮টি, অজ্ঞান পার্টি ১টি, অস্ত্র মামলা ৪০৭টি, বি:দ্রব্য ৯টি, চোরাচালান অভিযোগে ৩০টি ও অন্যান্য ১৪৯০টি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও বাংলাদেশ ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স এসোশিয়েশনের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা পূরণ না হলে মানুষ অপরাধের দিকে ধাবিত হয়। একে অপরকে তারা খুন করতে দ্বিধাবোধ করে না। নৈতিক অবক্ষয় চরম পর্যায়ে  পৌঁছে গেছে। নীতি-নৈতিকতা বলতে এখন আর কিছু নেই।  নীতি-নৈতিকতা হারিয়ে মানুষ খুন-খারাবিতে লিপ্ত হচ্ছে। হাতের নাগালে নেশাদ্রব্য পাওয়া যাচ্ছে।

নেশাগ্রস্ত হয়ে বা নেশার টাকা যোগাড় করার জন্য হত্যার মতো ভয়ংকর অপরাধ করছে মানুষ। খুনাখুনির আরেক কারণ হচ্ছে পরকিয়া। পরকিয়ার কারণে পারিবারিক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এরপর দেখা যায় তারা হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে। ফেসবুক বা সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহারের তুলনায় অপব্যবহার বেশি হচ্ছে। এতে সমাজে অস্থিরতা তৈরি হয়। ফলে সমাজে খুনাখুনির ঘটনা ঘটছে মনে করছেন তিনি।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, চট্টগ্রাম নগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অপরাধ যাতে বৃদ্ধি না পায় এজন্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের মামলাগুলো খুব সতর্কভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। যাতে হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা পার পেয়ে না যায়।

সনাক-টিআইবি’র চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী বলেন, অপরাধিদের শাস্তির ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। শুধুমাত্র শাস্তি দিলে অপরাধ প্রবণতা কমে না। অপরাধ প্রবনতা কমানোর জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থার কাঠামো উন্নত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক ক্ষেত্রে শিথিলতার  কারণে অরপাধ প্রবণতা বেড়ে যায়।সুদ, ঘুষ  ও মাদকের কারণে সমাজে অপরাধ বাড়ছে। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কোনো উন্নয়ন নয়।

আসল উন্নয়ন হচ্ছে মানুষকে নৈতিক মূল্যবোধে তৈরি করা। সত্যিকারের শিক্ষা পাচ্ছে না সমাজ। ঠিকমত সন্তানকে তৈরি করতে পারছেন না অভিভাবকরা। প্রত্যেক ক্ষেত্রে অনিয়ম ব্যত্যয় ঘটনার কারণে আজকে এই অবস্থা হচ্ছে। এ বিষয়গুলো চিহ্নিত  না করলে এ রকম খুনাখুনি মারামারি চলতে থাকবে। সবখানে স্বআরোপিত ও রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত জবাবদিহিতা নেই। ফলে অন্যায়, অপরাধ, অনিয়ম, রাহাজানি ও দুর্নীতি বেড়েছে। এসব অপরাধ একটার সঙ্গে আরেকটা কো-রিলেটেড বলে জানান তিনি।

বিএনএ/ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ