বিএনএ লাইফস্টাইল ডেস্ক: শীত এলেই ঘরে ঘরে সর্দি-কাশি লেগেই থাকে। শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সি মানুষ জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হন। ওষুধ খেয়েও অনেক সময় কাশির সমাধান মেলে না। কাশি দীর্ঘসময় থাকলে এক ধরনের যন্ত্রণা কাজ করে। এটি স্বরযন্ত্রের শব্দও পরিবর্তন করে দেয়। অনেক সময় ভেতরে কফ আটকে থেকে অস্বস্তির সৃষ্টি হয়।
চিকিৎসকরা বলছেন, কাশি ফুসফুসের একটি আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা। ফুসফুসে কোনো কিছু ঢুকলে কাশির মাধ্যমে তা জানান দেয়। শ্বাসনালি, স্বরযন্ত্র, গলবিলে বাইরে কোনো বস্তু গেলে আমাদের কাশি হয়। ফুসফুসের সাধারণ স্বাস্থ্য রক্ষা করার জন্য কাশি প্রয়োজনীয়।
তাই বলে কি মানুষ ক্রমাগত কাশবে? মানুষ কাশলে বুঝতে হবে তিনি কোনো না কোনো অসুখে ভুগছেন। শুধু ফুসফুসের রোগের কারণেই কি কাশি হয়? ফুসফুসবহির্ভূত কারণেও কাশি হতে পারে।
কাশি থেকে রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. রাজাশিস চক্রবর্তী।
১-২ সপ্তাহ কাশি স্থায়ী হলে তাকে স্বল্পস্থায়ী কাশি বলে।
দুই সপ্তাহের অধিক কাশি হলে তাকে দীর্ঘস্থায়ী কাশি বলে। স্বল্পস্থায়ী কাশি সাধারণ সর্দি-জ্বর, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও নিউমোনিয়ার কারণে হয়ে থাকে। কাশি তিন সপ্তাহের অধিক হলে অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস, ফুসফুসের টিউমার, যক্ষ্মার জন্য হয়ে থাকে। কাশির সঙ্গে থুতু বা কফ বের না হলে তা শুকনো কাশি। এ কাশি অ্যাজমা, কিছু ওষুধ এসিই ইনহিবিটর বা বিটা ব্লকার খেলেও হয়। কাশির সঙ্গে প্রচুর কফ ফুসফুসের ফোড়ার জন্য হয় বা ফুসফুসের কোনো কোনো জায়গায় স্থায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ব্রঙ্কাইটিস হয়।
কিছু কাশি শ্বাসতন্ত্রের ওপরের অংশ অর্থাৎ নাক থেকে শ্বাসনালির সমস্যায় হয়। অ্যালার্জিক রাইনাইটিস বা অ্যালার্জিজনিত সর্দি, সাইনোসাইটিস ও গলাব্যথায় শ্বাসনালির ওপরের অংশের সমস্যার জন্য হয়।
নাকের পেছনেও সর্দি হয়। এ রোগীরা শুয়ে পড়লে কাশি হয়। সাইনোসাইটিসে নাকের পানি গলায় পড়ে কাশি হয়। গলাব্যথা ফ্যারিনজাইটিসের জন্য হয়। রোগীর গলা প্রচণ্ড ব্যথাসহ কাশি হয়। কথা বলার যন্ত্র বা ল্যারিংসে প্রদাহ হলে কথা বলার সময় কাশি হয়।
ফ্যাসফ্যাসে কাশিতে রোগী বলে গলা ভেঙে গেছে। ভোকাল কর্ডে ইনফেকশন হলে কাশিতে জোর থাকে না, একে বভাইন কফ বলে। এ কাশি দিলে হালকা শব্দ হয়।
ভোকাল কর্ড প্যারালাইসিস থেকে এমনটি হতে পারে। এ কর্ডে টিউমার বা ফুসফুসের টিউমার ভোকাল কর্ডকে আক্রান্ত করলে এমনটি হয়ে থাকে।
কাশি দিলে বুকের মাঝখানে প্রচণ্ড ব্যথা হলে শ্বাসনালি বা ট্রাকিয়া আক্রান্ত হয়। অ্যাজমার কাশি দিন-রাতের সঙ্গে বাড়ে-কমে। রাতে বা সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর কাশি বাড়ে। বাগানের ফুলের রেণু বেশি থাকলে অ্যাজমা রোগীর কাশি বেড়ে যায়।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ