30 C
আবহাওয়া
৪:২৮ অপরাহ্ণ - অক্টোবর ২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » জরুরি বৈঠকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ: ইরান-ইসরায়েল পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ কী শুরু ?

জরুরি বৈঠকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ: ইরান-ইসরায়েল পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ কী শুরু ?

ইসরায়েল ইরান যুদ্ধের খবর

বিশ্ব ডেস্ক: ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে স্থানীয় সময় আজ বুধবার সকাল ১০ টায় বৈঠকটি হওয়ার কথা রয়েছে।

নিরাপত্তা পরিষদকে লেখা চিঠিতে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন অভিযোগ করেন, ‘ইসরায়েলকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে ইরান।’

ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ফিলিস্তিনের গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের প্রতিশোধ হিসেবে এবং হামাস, হিজবুল্লাহ ও আইআরজিসির নেতাদের গুপ্তহত্যার জবাবে তারা ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে।

মঙ্গলবার রাতজুড়ে ইরান রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) প্রায় ১৮০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে। যদিও অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগেই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) ধ্বংস করে দিয়েছে, কিছু ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধের বাইরে ছিল। হামলার পর ইসরায়েল থেকে হতাহতের খবর প্রকাশ করা হয় নি, তবে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

এদিকে বিবিসি জানায়, ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর তেহরানের রাস্তায় লোকজন উৎসব করছে। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন ‘ইরান বড় ভুল করেছে এবং এজন্য তাকে মূল্য দিতে হবে’।

ইসরায়েলের সহযোগীরা বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ইসরায়েলের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন অব্যাহত থাকবে।

ইরান-ইসরায়েল পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরু ?

গতকাল মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি। তিনি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে তেহরান। হামলার প্রতিশোধ নেওয়া হবে।

অপরদিকে ইরানের রেভ্যুলশনারি গার্ড বলছে, ইসরায়েল যদি এই হামলার জবাব দেয়, তাহলে আরও হামলা চালানো হবে।

সাবেক ইসরায়েলি গোয়েন্দা কর্মকর্তা আভি মেলামেদ বলেছেন, “ইরানের হামলা হলো ইসরায়েলকে বড় ধরনের পাল্টা হামলার জন্য উস্কানি দেয়া…আমরা ইরানি লক্ষ্যবস্তু গুলোতে উল্লেখযোগ্য ও তাৎক্ষণিক ইসরায়েলি জবাব দেখতে পাবো”।

ইসরায়েল ইরান যুদ্ধের খবর

ইরান বলেছে, ইসরায়েল যদি পাল্টা হামলা চালায়, তাহলে ইসরায়েলের সব অবকাঠামোর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হবে।

ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর যুগ্ম প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি এই ঘোষণা দিয়েছেন।

“যদি [ইসরায়েল]… এই ধরনের অপরাধ অব্যাহত রাখে বা আমাদের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিরুদ্ধে কিছু করতে চায়, তাহলে আজকের রাতের অভিযান আরও কয়েকগুণ শক্তিশালী হবে এবং তাদের সমস্ত অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে,” বাঘেরি বলেন।

তিনি আরও বলেছেন যে ইরানের বিশেষায়িত সামরিক শাখা রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করার জন্য প্রস্তুত।

ইরান ইসরায়েল কনফ্লিক্ট

গাজা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। সোমবার (১ এপ্রিল) সিরিয়ার ইরানি দূতাবাসে ইসরাইলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসলামী বিপ্লবী গার্ডের শীর্ষ কমান্ডারসহ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। তেহরানের নেতারা এই হামলাকে নজিরবিহীন উল্লেখ করে এর কড়া জবাব দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন। নিহত জেনারেলদের জানাজায় অংশ নিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ইসরাইলের জন্য কঠিন পরিণতির হুঁশিয়ারি দেন।

যদিও ইসরাইল আনুষ্ঠানিকভাবে হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবুও মধ্যপ্রাচ্যের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি আরও অস্থির হয়ে পড়তে পারে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানাচ্ছে, ইরান পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে, তবে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়েছে তেহরান, যেন নেতানিয়াহুর ফাঁদে না পা দেয়।

ইরান ইসরাইলের যুদ্ধ: কার কত সামরিক শক্তি ? 

আন্তর্জাতিক সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষণ ওয়েবসাইট গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের তথ্যমতে, ইরান ১৪তম ও ইসরাইল ১৭তম অবস্থানে রয়েছে সামরিক সক্ষমতায়। ইরানের নিয়মিত সেনা সংখ্যা ৬ লাখ ১০ হাজার, whereas ইসরাইলের ১ লাখ ৭০ হাজার। তবে রিজার্ভ সেনার দিক দিয়ে ইসরাইল এগিয়ে, তাদের রয়েছে ৪ লাখ ৬৫ হাজার রিজার্ভ সেনা, যেখানে ইরানের সংখ্যা ৩ লাখ ৫০ হাজার।

এছাড়া, ইরানের ৬১২টি সামরিক বিমান ও ৫৫১টি সামরিক বিমান রয়েছে, যেখানে ইসরাইলের সংখ্যা যথাক্রমে ২৪১ এবং ১১৬। যুদ্ধবিমান এবং সামরিক যানবাহনের দিক থেকেও ইরান কিছুটা এগিয়ে রয়েছে। তবে ইসরাইলের ‘আয়রন ডোম’ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিশ্বজুড়ে পরিচিত।

দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে, এবং পরিস্থিতি শান্ত করতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অত্যন্ত জরুরি।

বিএনএ, এসজিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ