21 C
আবহাওয়া
৭:২৬ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২০, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ৪ দাবিতে রাস্তায় জাবির সাংবাদিকরা

৪ দাবিতে রাস্তায় জাবির সাংবাদিকরা

৪ দাবিতে রাস্তায় জাবির সাংবাদিকরা

বিএনএ, জাবিঃ সাংবাদিক নির্যাতনের বিচার নিশ্চিত করা সহ ৪ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সংবাদকর্মীরা।

শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) বিশ্বিবদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে জাবিসাস সভাপতি বেলাল হোসেন এ চার দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলোর মধ্যে অন্যান্য দাবি গুলো হলো, দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল প্রশাসনের পদত্যাগ করা, নিরপেক্ষ আচরণ না করায় তদন্ত কমিটির গাফিলতি খতিয়ে দেখা ও আবাসিক হলের নিয়ন্ত্রণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে নেওয়া।

জাবিসাসের সভাপতি বেলাল হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য গনতন্ত্র চর্চার একটি মসৃণ পথ তৈরি করা। আর এ গনতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ হলো গণমাধ্যম ও সাংবাদিকরা। পরিতাপের বিষয় এ সাংবাদিকরা সবসময়ই নির্যাতিত আর নিপিড়ীত হয়ে আসছে। গত ২ আগস্ট সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় পর আর ২ সেপ্টেম্বর চলে এসেছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ন্যায্য বিচার প্রদানে ব্যার্থ্ হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এরকম একটি ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরও সেদিন রাতে হল প্রশাসন থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাউকে আমরা ঘটনাস্থলে পাইনি। এমনকি তাদের সাথে বহুবার যোগাযোগ করেও তাদের ঘটনাস্থলে আসেনি। তারা বলেছে তারা নাকি অনেক বেশি ক্লান্ত ছিলো তাই তাদের কারো দ্বারাই সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনার সময় উপস্থিত হওয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়াও নির্যাতন ঘটনার রাতে ছাত্রলীগ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তাদের ৮ জন কর্মীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। কিন্তু দিনের আলোর মত পরিষ্কার ঘটনার কোনো সত্যতা নাকি তদন্ত কমিটি খুঁজে পায় নি।’

‘আমাদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে তদন্ত কমিটির রিপোর্টে ভুক্তভোগীর কোনো বক্তব্য সংযুক্ত করা হয়নি, অভিযুক্ত অভিযোগ বিষয়ে কোনো তথ্য উঠে আসেনি, অভিযুক্তদের বক্তব্য বিস্তারিত উঠে এসেছে কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য সংকোচন করা হয়েছে।’

সাংবাদিক সমিতির সভাপতি শঙ্কা প্রকাশ করছেন যে প্রশাসন নিরপেক্ষ তদন্ত করেনি।

মানববন্ধনে ছাত্র অধিকার পরিষদের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের নেতা জহির ফয়সাল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চামড়া গন্ডারের মতো হয়ে গেছে। লজ্জার সাথে বলতে হয় এই প্রশাসনের গাফিলতির জন্যই জাতির বিবেক সাংবাদিকদের ও মানববন্ধন করতে হয় সুষ্ঠ বিচারের জন্য। প্রশাসন বলেছে, গণরুম সংস্কৃতি রোধে জিরো টলারেন্স কিন্তু কোনো হল প্রশাসন এই ব্যাপারে ভ্রুক্ষেপ-ই করছে না। হলের সিট বন্টনে প্রশাসন কোনো ভূমিকা পালন করে না। হলের সিট লিস্ট করা, বন্টন করার ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন পূর্ণভাবে হস্তক্ষেপ করে। এই অথর্ব প্রশাসন যদি তাদের দায়িত্ব পালন করতে না ই পারে তাহলে তাদের উচিৎ পদত্যাগ করা।’

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সামি আল জাহিদ প্রীতম বলেন, ‘হলগুলো প্রশাসন চালায় না, চালায় ছাত্রলীগ। প্রশাসন শুধু দাপ্তরিক কাজগুলো কোনমতে করছে। হলের আসন দখলে রেখে ছাত্রলীগ আসন সংকট সৃষ্টি করেছে। আজকের এই মানববন্ধন থেকে আমার দলের পক্ষে আমি বলতে চাই, অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্টের ধারা অনুযায়ী সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তির আওতায় আনা হোক।’

ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি রাকিবুল হক রনি বলেন, ‘যখন সাংবাদিককে গেস্টরুমে পেটানো হয় তখন হল প্রশাসন কোথায় ছিলো। আসলে হল প্রশাসন ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের লেজুড়বৃত্তি করে। পাঁচ দিনের মধ্যে নির্যাতনের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু আজ একটা মাস পার হলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারে নি। আসলে তদন্ত কর্মকর্তারা সাংবাদিকের দোষ খোজার চেষ্টা করেছেন।আজকে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একে অপরের পরিপূরক হয়ে দাড়িয়েছে। একজনের দোষ আরেকজন ঢাকার চেষ্টা করে। আমরা সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনার শাস্তির দাবি জানায়।’

এর আগে গত মাসের ২ আগস্টে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে কর্মরত এক গণমাধ্যমকর্মীকে ‘গেস্ট রুমে’ ডেকে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরবর্তীতে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে হলটির ৮ ছাত্রলীগ নেতাকে সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে ‘অবাঞ্ছিত’ করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা। অভিযুক্তরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬ তম ব্যাচের নৃবিজ্ঞান বিভাগের আসাদ হক ও আরিফ জামান সেজান, ৪৭ তম ব্যাচের অর্থনীতি বিভাগের জিয়াদ মির্জা, দর্শন বিভাগের হাসিবুল হাসান রিশাদ, নৃবিজ্ঞান বিভাগের রাইহান বিন হাবিব, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মুনতাসির আহমেদ তাহরীম, আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ্ এবং ৪৮ তম ব্যাচের রসায়ন বিভাগের জাহিদ হাসান।

এছাড়া অভিযুক্ত এসব ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ৩ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী। তবে দীর্ঘ সময় পার হলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিএনএনিউজ/সানভীর/এইচ.এম।

Loading


শিরোনাম বিএনএ