বিএনএ ডেস্ক: মৌলভীবাজারে নামাজ পড়া ও মাদক থেকে বিরত থাকাসহ কয়েকটি শর্তে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে মুক্তি দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান তার মুক্তির আদেশ দেন।
বিচারক বলেন, মানুষ অপরাধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে না। বিভিন্ন কারণে অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। ছোটখাটো অপরাধ হলে তাকে শাস্তি না দিয়ে সংশোধনের সুযোগ দেয়া উচিত। কারাগারের বাইরে রেখে সাজাপ্রাপ্তদের সংশোধনের সুযোগ দিতে দীর্ঘদিনের পুরোনো আইনটি সচল করা প্রয়োজন। বিশ্বের অনেক দেশে এমন আইন চালু রয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ৬ আগস্ট শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিরাজনগরে মারামারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাহমুদ মিয়া নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে নুর মিয়াসহ চারজনকে আসামি করে মামলা করেন। দীর্ঘ সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে নুর মিয়ার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৩২৫ ধারার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় মঙ্গলবার তাকে তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। যা আজ থেকে শুরু হবে।
অভিযুক্ত নুর মিয়ার দুজন নাবালক সন্তান আছে এছাড়া পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ায় তাকে কারাগারে না পাঠিয়ে সংশোধনের সুযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন আদালত। ‘প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্সের ১৯৬০’ অধীনে নামাজ পড়া, ১০০টি গাছ রোপণ, নতুন করে কোনো অপরাধে জড়িত না হওয়া, মাদক সেবন থেকে বিরত থাকা, শান্তি রক্ষা ও সদাচরণ করা, আদালতের নির্দেশমতো হাজির হওয়াসহ বেশ কয়েকটি শর্তে তাকে মুক্তি দেন আদালত।
প্রবেশনকালে এসব শর্তের কোনোটি ভঙ্গ করলে তাকে তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। এসব শর্ত প্রতিপালনের জন্য জেলা প্রবেশন কর্মকর্তাকে পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত। তিনি নুর মিয়ার বিষয়ে আদালতকে অবহিত করবেন।
মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এস এম আজাদুর রহমান বলেন, আদালতের এমন ব্যতিক্রমী রায় ইতিবাচক। তিনি তার পেশাজীবনে এ ধরনের ব্যতিক্রমী রায় দেখেননি। অপরাধ সংশোধনে এমন রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানান তিনি।
বিএনএ/এ আর
