27 C
আবহাওয়া
৬:১৯ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ‘প্রত্যয়ের’ প্রভাবে অচল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

‘প্রত্যয়ের’ প্রভাবে অচল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়


বিএনএ, ইবি: ‘প্রত্যয়’ স্কিম বাতিলের দাবি জানিয়ে সারা দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মত কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)’র শিক্ষকরা কঠোর আন্দোলনে শামিল হয়েছেন। এতে করে বন্ধ রয়েছে শিক্ষক সংশ্লিষ্ট সকল ধরনের কার্যক্রম। ফলে প্রত্যয় স্কিম এর প্রভাবে ইতোমধ্যেই অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক চিত্র। এদিকে ক্লাস-পরিক্ষা বন্ধ থাকায় সেশনজট শঙ্কায় দুশ্চিন্তার ভাঁজ শিক্ষার্থীদের কপালে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাধ্যম দিয়ে জানা যায়,অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক সর্বজনীন পেনশন ‘প্রত্যয়’ স্কিমের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবি তাদের। এসব দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রথমদিকে সাধারণ কর্মসূচি পালন করে আসলেও এবার চুড়ান্ত অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে তারা। ক্লাস পরিক্ষা বন্ধ রেখে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে পহেলা জুলাই থেকে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে একঘন্টা করে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে দাবি দাওয়া সমূহ দ্রুত সময়ে মেনে নেওয়ার আহবান জানাচ্ছেন শিক্ষকরা।

এদিকে ফেডারেশনের প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ই মার্চ ২০২৪ তারিখ, বুধবার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত (এস,আর,ও নং-৪৭- আইন/২০২৪) পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জানিয়ে ৪ঠা জুন ২০২৪ মঙ্গলবার সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করে। কর্মবিরতিতে তারা পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবি জানান। সেখানে তারা ২৪শে জুন ২০২৪ তারিখের মধ্যে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার না হলে (২৫-২৭) জুন ২০২৪ পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি এবং ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের কথা বলেন। তবে এসময়ে পরীক্ষাসমূহ কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে বলে উল্লেখ্য করা হয়। তবে এসময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে পহেলা জুলাই ২০২৪ তারিখ থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করে হবে বলে জানান ফেডারেশন।

তবে এসব দাবি দাওয়ার ভিড়ে খানিকটা সেশনজটের আশংকায় দুশ্চিন্তার কালো ভাঁজ শিক্ষার্থীদের কপালে। কত সময়ের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান ঘটবে এবং কবে নাগাদ পুনরায় ক্লাস পরিক্ষায় তারা বসতে পারবেন এমন চিন্তায় দিন পার করছেন তারা। ঈদের ছুটি শেষে ক্যাম্পাসে আসা অনেক শিক্ষার্থীই অনিশ্চিত এই অচল অবস্থার কথা ভেবে পুনরায় ধরছেন বাড়ির পথ। তাদের দাবি যতদ্রুত সম্ভব এই স্থবির অবস্থার অবসান ঘটিয়ে ইতিবাচক সমাধান এর মাধ্যমে ক্লাস পরিক্ষা’সহ স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরতে চান তারা।

যদি সেশনজট হয় তবে তা নিরসনে কোন বিশেষ প্ল্যান আছে কিনা জানতে চাইলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান বলেন, আমরা পরবর্তীতে অতিরিক্ত খাটুনি দিয়ে হলেও তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিবো ইনশাআল্লাহ। তবে আমরা আশাকরি সরকার বিষয়টি আমলে নিয়ে দ্রুত সমাধান করবে এবং শিক্ষার্থীদের অপূরণীয় ক্ষতি করবে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা শুরুতেই সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাই নি। বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে চেয়েছিলাম যেনো আগেই এর সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু কোনো সুরাহা না পেয়ে আজকের এই সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছি আমরা।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, এ ধরণের আন্দোলন বা কর্মসূচি চলমান থাকলে অবশ্যই সাময়িকভাবে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হতে পারে৷ তবে শিক্ষকরা চাইলে আবার সেই ক্ষতিটুকু পুষিয়ে নিতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন, আমার শিক্ষকদের প্রতি আহবান থাকবে যখন বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে তারা যেনো এই বিষয়ে নজর দিয়ে শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিতে সহায়তা করে। আমি চাইবো যেনো দ্রুত এর একটা সমাধান হয়ে যায়।

প্রসঙ্গত, এদিকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ৭টি কর্মসূচি হাতে নেয় ইবি শিক্ষক সমিতি। কর্মসূচির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের ক্লাশসমূহ বন্ধ রাখা, অনলাইন ক্লাস, ইভনিং ক্লাস, আই, আই, ই. আর-এর ক্লাসসহ সকল প্রকার ক্লাস বন্ধ, সেমিস্টার ফাইনাল, অভ্যন্তরীন মূল্যায়ন, ভর্তি-পরীক্ষা, ব্যবহারিক পরীক্ষাসহ সকল প্রকার পরীক্ষা বর্জন করা, ডিনের অফিস, প্রভোস্টের অফিস, বিভাগীয় সভাপতির অফিস, ডিরেক্টরের অফিস, সেমিনার লাইব্রেরী ও ল্যাবসমূহের কার্যক্রম বন্ধ, একাডেমিক কমিটি ও প্লানিং কমিটির সভা, পরীক্ষা কমিটির সভা, সিলেকশন বোর্ডের সভাসহ শিক্ষক-সংশ্লিষ্ট সকল প্রকার সভা বন্ধ রাখা, শিক্ষকগন কোন সেমিনার, কনফারেন্স ও ওয়ার্কশপ আয়োজন অথবা অংশগ্রহন করা থেকে বিরত থাকা, এছাড়াও সর্বশেষ অর্থাৎ সপ্তম কর্মসূচি হিসেবে সর্বাত্মক আন্দোলন চলাকালে অনুষদ ভবনের নিচে প্রতিদিন বেলা ১২ টা থেকে ১টা পর্যন্ত ০১ ঘন্টা অবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে যেখানে সকল শিক্ষকগন উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়।

বিএনএ/তারিক, এমএফ/ হাসনা

Loading


শিরোনাম বিএনএ