কুমিল্লা : আঞ্চলিক তথ্য অফিস, পিআইডি চট্টগ্রামের উদ্যোগে এবং জেলা প্রশাসন ও জেলা তথ্য অফিস কুমিল্লার সহযোগিতায় ‘‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দশ বিশেষ উদ্যোগ : প্রেক্ষিত আশ্রয়ণ প্রকল্প ” শীর্ষক মতবিনিময় সভা মঙ্গলবার (২ মে ২০২৩) কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
পিআইডি চট্টগ্রামের উপপ্রধান তথ্য অফিসার মীর হোসেন আহসানুল কবীর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন।
এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. মতিউল ইসলাম, জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার নন্দন চৌধুরী, পিআইডি চট্টগ্রামের সিনিয়র তথ্য অফিসার মারুফা রহমান ঈমা, মো. নুরুল হক, জেলা তথ্য অফিসের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. নাছির উদ্দিন, প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক সাইয়েদ মোহাম্মদ ফারভেজ প্রমূখ।
পিআইডি চট্টগ্রামের তথ্য অফিসার জি.এম সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ ও আশ্রয়ণ বিষয়ে কুমিল্লায় গৃহীত কার্যক্রম তুলে ধরেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. কাবিরুল ইসলাম খান। উপকারভোগী মো. হান্নান ও লাইলি খানম অনুষ্ঠানে তাদের আবেগাপ্লুত অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
মুল প্রবন্ধে বলা হয়- ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে লক্ষীপুর জেলার রামগতি উপজেলায় ভূমিহীন গৃহহীন অসহায় ছিন্নমূল মানুষের পুনর্বাসনের যে কার্যক্রম শুরু হয়েছিল পরবর্তিতে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ১৯৯৭ সাল হতে তা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। আজ গৃহহীন মানুষের নিশ্চিত নির্ভরতার ঠিকানা আশ্রয়নের ঘর। অসহায় মানুষের জীবন পাল্টে দিয়েছে শেখ হাসিনা প্রদত্ত উপহারের এ ঘর। তাইতো শেখ হাসিনা হয়ে উঠেছেন ছিন্নমূল অসহায় মানুষের নিশ্চিত নির্ভরতার প্রতীক, অতি আপনজন। এতে আরো বলা হয়-এ পর্যন্ত আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যারাক, ূফ্ল্যাট, বিভিন্ন প্রকার ঘর ও মুজিববর্ষের একক গৃহে মোট ৫ লক্ষ ৭ হাজার ২৪৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। পাশাপাশি মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে একক গৃহ নির্মাণের জন্য ২০২২ সাল পর্যন্ত ৫ হাজার ৫ শত ১২ একর খাসজমি উদ্ধার করা হয়েছে যার বাজার মূল্য ২ হাজার ৯ শত ৬৭ কোটি ৯ লক্ষ টাকা।
প্রবন্ধে আশ্রয়ণ বিষয়ে কুমিল্লা জেলার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে বলা হয়-জেলার ১৭টি উপজেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। জেলার মোট ৫ হাজার ৭ শত ৫৮টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ৫ হাজার ৪ শত ৭১টি ঘর বরাদ্দ করা হয়েছে। অল্প যে কয়টি পরিবার বাকি আছে তাদের মধ্যেও পর্যায়ক্রমে ঘর বরাদ্দ করা হবে। এতে আরো বলা হয়-১ম, ২য় ও ৩য় পর্যায় সফলভাবে সম্পন্নের পর ৪র্থ পর্যায়ে একক গৃহ নির্মাণের কাজ শতকরা ৬৪ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে ৪র্থ পর্যায়ের গৃহ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হবে।
জেলার চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, লালমাই, চান্দিনা ও ব্রাক্ষণপাড়া – এ ৬টি উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে বলে প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকগণ আশ্রয়ণ বিষয়ে জেলার বিভিন্ন তথ্য জানতে চান। সাংবাদিকগণ আশ্রয়ণ প্রকল্পকে প্রধানমন্ত্রীর সাহসী পদক্ষেপ উল্লেখ করে প্রকৃত অসহায় ও গৃহহীন মানুষ যেন প্রকল্পের সুফল ভোগ করতে পারে সে বিষয়ে প্রশাসনকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান।
জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তৃতায় বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ শুধু চাকরির জন্য এ প্রকল্পে কাজ করেন না। মানবতার জন্য গৃহীত এ প্রকল্পে সবাই অন্তর থেকে কাজ করেন। তিনি বলেন, বড় কাজ করলে ভূলত্রুটি হতে পারে। তবে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কেউ অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে অতীতেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে। ঘর নির্মাণ ও বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় কোন অনিয়ম দেখলে তা সরাসরি তাঁকে জানাতে তিনি সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ করেন।
মতবিনিময় সভায় সরকারি কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, উপকারভোগী ও গণমাধ্যমকর্মী মিলে প্রায ৬০ জন অংশ নেয়।
বিএনএনিউজ২৪,জিএন