25 C
আবহাওয়া
৩:৫৫ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home »  উদ্বোধনের এক বছর পরও কুবি‘র ডরমেটরিতে উঠেননি কোনো শিক্ষক

 উদ্বোধনের এক বছর পরও কুবি‘র ডরমেটরিতে উঠেননি কোনো শিক্ষক


বিএনএ,কুবি :২০২৩ সালের জানুয়ারী মাস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডরমিটরি উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি। পরবর্তীতে আগস্ট মাসে নতুন এই ডরমিটরিতে শিক্ষকদের সীট বরাদ্দ বাবদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে এখনও পর্যন্ত সীটের জন্য আবেদন পড়েছে মাত্র ১০ টি।নতুন এই ডরমিটরির সীট সংখ্যা ৩৯ টি, যা শিক্ষকদের আবেদন প্রেক্ষিতে বরাদ্দ দেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, পুরাতন ডরমিটরিতে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন শিক্ষক অবস্থান করছেন যাদের সাথে থাকছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারাও।নানা অপ্রতুলতা নিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন ২টি ডরমিটরিতে কর্মকর্তাদের সাথে ভাগাভাগি করে থাকছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।পাঁচ তলা বিশিষ্ট দুটি ডরমেটরিতে নানা অপ্রতুলতা নিয়ে বসবাস করছেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা।

পুরাতন ডরমিটরিগুলো ঘুরে দেখা যায়, ভবন দুটির বহিরাংশের রং বিবর্ণরূপ ধারণ করেছে অনেক আগে থেকেই। অনেক স্থানে রং খসে পড়েছে। ভবনের ভিতর এবং বাইরের অংশ অপরিচ্ছন্ন। এছাড়াও অধিকাংশ কক্ষের বৈদ্যুতিক পয়েন্টগুলো ত্রুটিপূর্ণ। শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানাযায়, ব্যক্তিগতভাবে রান্নার সুযোগ না থাকা, ভাড়া বেশি , সাপের উপদ্রব ,নানা কীটপতঙ্গের উৎপাত,নিজেদের কর্মব্যস্ততা,পুরাতন ডরমিটরিতে অবস্থানরত অধিকাংশ শিক্ষক বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজে জড়িত, দূরত্ব বেশিসহ নানা সমস্যা থাকায় নতুন ডরমিটরিতে উঠতে তারা অনিচ্ছা প্রকাশ করছেন। তাই নানান সমস্যা বিবেচনায় আমরা সেখানে যেতে চাই না। যেখানে আছি সেখানেই থাকতে চাই। এরপরেও যদি সেখানে থাকতে বলা হয় তাহলে বাইরে থাকবো।

কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পার্থ চক্রবর্তী বলেন, ” আমার খুব ইমার্জেন্সিতে ডরমিটরিতে উঠার প্রয়োজন ছিল এবং বরাদ্দও পেয়েছি তবে অন্যান্য শিক্ষক যারা বরাদ্দ পেয়েছেন তাদের সাথে কথা বলার পর তারা জানিয়েছেন আপাতত উঠবেন না। আমি একা এত বড় জায়গায় থাকা নিরাপদ বলে মনে করছি না এছাড়াও শুনেছি সাপের চলাচল থাকতে পারে যার জন্য এখনও পর্যন্ত উঠি নি আমি।”

গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাহবুব মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৫৮ হাজার টাকা ব্যয়ে শিক্ষকদের জন্য এই ডরমিটরি নির্মাণ করা হয়। ২০১৭ সালের মে মাসে নির্মাণ কাজ শুরু হওয়া ডরমিটরিটি ২০১৮ সালের নভেম্বরে সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও নির্মাণ কাজের সময়সীমা কয়েকদফা বাড়িয়ে ৫ পাঁচ বছর পর তা সম্পন্ন হয়। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে শিক্ষক রয়েছেন ২৬৫ জন। যার মধ্যে মাত্র ২৮ জন শিক্ষক পাচ্ছেন আবাসন সুবিধা। যা মোট শিক্ষকদের তুলনায় ১০ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট কর্মকর্তাদের মধ্যে ডরমিটরিতে থাকছেন ১০ জন।

২০২৩ সালের ০২ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নবনির্মিত ডরমিটরি শিক্ষক, পুরাতন ডরমিটরি ভবন-২ কর্মকর্তা এবং পুরাতন ডরমিটরি ভবন-১ কর্মচারীদের আবাসন বরাদ্দের জন্য বন্টন করা হয়েছে। পাশাপাশি পূর্বে বরাদ্দপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মকর্তাদেরকেও পুনরায় আবেদন করতে বলা হয়।

ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো: মিজানুর রহমান বলেন, শিক্ষকদের মধ্যে বড় একটি অংশই যে নতুন ডরমিটরিতে যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন বিষয়টি এমন নয়। কয়েকজন শিক্ষকই বিভিন্ন সংকটের বিষয়ে জানিয়েছেন, এছাড়াও ইতোমধ্যে কিছু শিক্ষক জানুয়ারি মাসে ডরমিটরিতে উঠবেন বলে জানিয়েছেন। তবুও যেসকল সংকটের বিষয়ে শিক্ষকরা জানিয়েছেন আমরা মাননীয় উপাচার্যকে সেসকল বিষয়ে অবগত করেছি তিনি আস্বস্ত করেছেন। শিক্ষকদের যদি ডরমিটরিতে থাকতে কোনরকম সমস্যা হয় তা সমাধান করবেন। এরপরও কিছু সংকট হয়তো থেকেই যাবে। সর্বোপরি, আমাদের সকলেরই বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো বিষয়ে পজিটিভ থাকা উচিত, কিছুটা কম্প্রোমাইজ, পজিটিভ চিন্তা থাকলে এরকম ছোট সমস্যা গুলোও সমাধান করা সম্ভব। ”

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ” শিক্ষক ডরমিটরি গুলো মূলত ব্যাচেলর শিক্ষকদের থাকার সুবিধার্থে তৈরী করা হয়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষক ডরমিটরিও সে অনুযায়ী তৈরী করা হয়েছে।শিক্ষকরা যেসকল সংকট উল্লেখ করে সেখানে যেতে অনিচ্ছা পোষণ করছেন তারা সেখানে শীফট করে যদি কোনপ্রকার সমস্যা বা প্রয়োজন অনুধাবন করেন তাহলে সে অনুযায়ী আবেদন করলে সেগুলোর সমাধান প্রশাসন করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।”

বিএনএ/ আদনান, রেহানা, ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ