বিএনএ, ডেস্ক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল থেকে এক হাজার ৯৬৬ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন ৭৪৭ জন।শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) ইসি থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।সব মিলিয়ে এই নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন মোট দুই হাজার ৭১৩ জন। হিসাব অনুযায়ী প্রার্থী হতে আগ্রহীদের মধ্যে ২৭ দশমিক ৫৩ শতাংশই স্বতন্ত্র। অর্থাৎ প্রায় প্রতি চার জনের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী একজন।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা শেষ হয়। এদিকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপিসহ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ১৪টি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে না। বাকি ৩০টি দলের মধ্যে আওয়ামী লীগ পাঁচটি আসনে দুজন করে প্রার্থী দিয়েছে। জাতীয় পার্টি দুজন করে প্রার্থী দিয়েছে ১৮টি আসনে।
কোন দলের কত প্রার্থী
২৯৮টি আসনে নৌকা প্রতীকে ৩০৩ জন প্রার্থী দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। অর্থাৎ পাঁচটি আসনে তাদের প্রার্থী রয়েছেন দুজন করে। অন্যদিকে লাঙ্গল প্রতীকে ২৮৬ আসনে ৩০৪ জন প্রার্থী দিয়েছে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। সে হিসাবে ১৮টি আসনে দুজন করে প্রার্থী দিয়েছে দলটি।
এই নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী দিয়েছে জাতীয় পার্টি। আওয়ামী লীগের অবস্থান দ্বিতীয়তে। তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রার্থী দিয়েছে জাকের পার্টি। গোলাপ ফুল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা দলটি প্রার্থী দিয়েছে ২১৮ জন।
এই নির্বাচনের আগে বিএনপির বর্তমান ও সাবেক নেতাদের দলে ভিড়িয়ে বহুল আলোচিত ছিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও তৃণমূল বিএনপি। নোঙ্গর প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে যাওয়া বিএনএম প্রার্থী দিয়েছে ৪৯ জন। আর সোনালি আঁশ প্রতীকের তৃণমূল বিএনপি নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে ১৫১ জন। এ দিকে একদম শেষ দিকে এসে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১২ দলীয় জোটের শরিক দল বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি। হাতঘড়ি প্রতীকের এই দলটি ১৮ জন প্রার্থী দিয়েছে।
এ ছাড়া ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (আম) প্রার্থী দিয়েছে ১৪২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেস (ডাব) প্রার্থী দিয়েছে ১১৬ জন। এ ছাড়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ, প্রতীক মশাল) ৯১ জন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (একতারা) ৮২ জন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (ছড়ি) ৭৪ জন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (ফুলের মালা) ৪৭ জন ও ইসলামী ঐক্যজোট (মিনার) ৪৫ জন প্রার্থী দিয়েছে।
এদিকে ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ (চেয়ার) ৩৯ জন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (মোমবাতি) ৩৭ জন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (গামছা) ৩৪ জন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (হাতুড়ি) ৩৩ জন, গণফ্রন্ট (মাছ) ২৫ জন, জাতীয় পার্টি (জেপি, বাইসাইকেল) ২০ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশ (কুলা) ১৪ জন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (বটগাছ) ১৩ জন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল) ১৩ জন ও গণতন্ত্রী পার্টি (কবুতর) ১২ জন প্রার্থী দিয়েছে নির্বাচনে।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া আটটি দলের প্রার্থীর সংখ্যা ১০ জনের কম। দলগুলোর মধ্যে গণফোরাম (উদীয়মান সূর্য) ৯ জন, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (চাকা) ছয় জন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ, কুড়েঁঘর) ছয়জন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল, পাঞ্জা) পাঁচজন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (হারিকেন) দুজন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ (রিকশা) একজন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মই) একজন এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (খেঁজুর গাছ) একজন প্রার্থী দিয়েছে।
গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। এরপর ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। বাছাইয়ে বাতিল প্রার্থীরা আপিল দায়ের করতে পারবেন। সেই আপিল ও নিষ্পত্তি চলবে ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর। এরপর চূড়ান্তভাবে বৈধ প্রার্থীরা ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারবেন।
প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষে নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বিতরণ করা হবে ১৮ ডিসেম্বর। ওই দিন থেকেই প্রার্থীরা প্রচার চালাতে শুরু করবেন। নির্বাচনি প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। ৭ জানুয়ারি দিনভর ভোট নেওয়া হবে।
বিএনএ/ ওজি