বিএনএ ডেস্ক: বৈশ্বিক উদ্ভাবনী সূচক (জিআইআই) ২০২৩-এ তিন ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। ১৩২টি দেশের মধ্যে এবার ১০৫তম অবস্থানে নেমে এসেছে বাংলাদেশ। আগেরবার ১৩২ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১০২তম। উদ্ভাবনী সূচকে বাংলাদেশ এবার ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে পিছিয়ে আছে।
জাতিসংঘের সংস্থা ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি অর্গানাইজেশন (উইপো) গত বুধবার বৈশ্বিক উদ্ভাবনী সূচকের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বিশ্বের অর্থনীতিগুলোর উদ্ভাবনী ক্ষমতা অনুসারে এ র্যাঙ্কিং তৈরি করে সংস্থাটি।
এতে বলা হয়েছে, বেসরকারি খাতে ঋণের সম্প্রসারণ এবং দেশের অভ্যন্তরীণ শিল্প বহুমুখীকরণ সূচকে অন্য দেশের তুলনায় পিছিয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান ৩ ধাপ নিচে নামল। বাংলাদেশের অবস্থান ভারত, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের পেছনে হলেও দক্ষিণ এশিয়ায় নেপালের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে।
২০২০ ও ২০২১ সালে জিআইআই সূচকে বাংলাদেশের ১১৬তম অবস্থানে ছিল। ২০২২ সাল ১৪ ধাপ এগিয়ে এ র্যাঙ্কিংয়ে ১০২তম অবস্থানে উঠে আসে।
১০০-এর মধ্যে ৬৭.৬ স্কোর নিয়ে এ বছরও জিআইআই সূচকে বিশ্বের সবচেয়ে উদ্ভাবনী অর্থনীতির দেশের তালিকায় প্রথম স্থান দখল করেছে সুইজারল্যান্ড। এ তালিকায় এরপরই আছে সুইডেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সিঙ্গাপুর।
২০.২ স্কোর নিয়ে চলতি বছর বিশ্বের ৩৭টি নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের মধ্যে ২২তম এবং মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার ১০টি অর্থনীতির মধ্যে ৭ম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় ৪০তম অবস্থান দখল করে এই অঞ্চলে এবং নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো পারফর্ম করেছে ভারত।
দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরই সবচেয়ে উদ্ভাবনী দেশের স্থান দখল করেছে পাকিস্তান (৮৮তম), শ্রীলঙ্কা (৯০তম), বাংলাদেশ (১০৫তম) ও নেপাল (১০৮তম)।
দেশের গণমাধ্যমে প্রায়ই খবর আসে, দেশের কোনো এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে কেউ বিশেষ কিছু উদ্ভাবন করেছেন। যেমন রাজু নামে ভোলার এক কিশোর তৈরি করেছে জ্বালানিবিহীন মোটরসাইকেল। বগুড়ার যন্ত্রকৌশলী আমির হোসেন উদ্ভাবন করেছেন জ্বালানিবিহীন গাড়ি। বলা হয়েছে, মাত্র ২৫ টাকার কার্বন খরচ করেই এ গাড়ি টানা ৮ ঘণ্টা চলতে পারে, বহন করতে পারে যাত্রী ও মালামাল।
ফরিদপুরের স্বল্পশিক্ষিত দরিদ্র যুবক হাবিবুর রহমান ইমরান এমন একটি গাড়ি উদ্ভাবন করেছেন, যা জলে, স্থলে সমানভাবে চলাচল করতে পারে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ ছাড়া বাল্ব জ্বালানো, মোবাইল-নিয়ন্ত্রিত হুইলচেয়ার বানানোসহ নানা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন এ দেশের তরুণ উদ্ভাবকেরা।
বাংলাদেশ উদ্ভাবনে ভালো করছে। কিন্তু দেখা গেছে, উদ্ভাবনকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টায় ঘাটতি আছে। বিশ্লেষকেরা বলেন, এসব উদ্ভাবন বাণিজ্যিক পর্যায়ে নেয়ার উদ্যোগ নেই। সেগুলোর পেটেন্ট বা মেধাস্বত্ব নিয়ে কেউ চিন্তাই করেন না। বাস্তবতা হচ্ছে, উদ্ভাবনকে টেকসই করতে হলে অবশ্যই তাকে বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক করে তুলতে হবে। মানুষের কাছে তা পৌঁছে দিতে হবে। তা না হলে নতুন উদ্ভাবনে কেউ উৎসাহিত হবেন না। সে কারণেই বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ছে।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ