22 C
আবহাওয়া
৬:১৮ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ১৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » চুয়েটের ২১তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আজ

চুয়েটের ২১তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আজ


বিএনএ, চুয়েট : দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশল শিক্ষা ও গবেষণার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর ২১তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আজ। এ উপলক্ষ্যে দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।

২০০৩ সালে স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে চুয়েট ইতিমধ্যে দেশের প্রকৌশল শিক্ষা ও গবেষণার অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উন্নীত হয়েছে। ২০২৪ সালের জন্য প্রকাশিত কিউএস র‌্যাংকিংয়ে এশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ৪০১-৪৫০ এর মধ্যে এবং দক্ষিণ এশিয়ার ৯২তম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্থান অর্জন করেছে। দেশের শীর্ষ ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৫ম, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২য় সেরা এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ৩য় সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে র‌্যাংকিংয়ে স্থান পেয়েছে চুয়েট।

চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার পাহাড়তলি ইউনিয়নের চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কের পাশে উনসত্তরপাড়া মৌজায় চুয়েট অবস্থিত। চট্টগ্রাম শহরের উত্তর-পূর্বে বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে এবং কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে প্রায় ২০ কিলোমটার দূরে এক মনোরম প্রাকৃতিক পাহাড়ি ভূমিতে প্রায় ১৭১ একর জায়গা জুড়ে চুয়েট ক্যাম্পাসের অবস্থান।

মূল শহর থেকে দূরে গ্রামীণ জনপদে অবস্থান ও নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সীমিত বাজেটের মধ্যে চুয়েট উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় নানা সাফল্য অর্জন করে ইতিমধ্যে দেশে-বিদেশে সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে।

প্রতিবছর নিয়মিতভাবে একাধিক আর্ন্তজাতিক কনফারেন্স, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম আয়োজন, বিশ্বমানের ল্যাব ও যন্ত্রপাতি সংযোজন, রোবট গবেষণায় যুগান্তকারী উদ্ভাবন, কর্ণফুলী ও হালদা নদী সম্পর্কিত গবেষণা, বহুবিধ শিল্পসমস্যার সমাধান ও কারিগরি সহায়তা প্রদান এবং বৃহত্তর চট্টগ্রামের ভূমিকম্প, পরিবহন-যানজট, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণ সমস্যা বিষয়ক জনগুরুত্বপূর্ণ গবেষণা, শক্তিশালী ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া কোলাবোরেশন, বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিনিময় ও যৌথ গবেষণা প্রকল্প গ্রহণ, বিভিন্ন খ্যাতনামা জার্নালে নিয়মিত গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ, বহির্বিশ্বের বিভিন্ন খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে উচ্চশিক্ষা-গবেষণায় সমঝোতা চুক্তি গড়ে তোলা এবং সরকারের রূপকল্প অনুসরণে স্মার্ট বাংলাদেশ ও ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নের নিত্যনতুন কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ চুয়েটের উল্লেখযোগ্য সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

জাতীয় উন্নয়ন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পেশাদার প্রকৌশলীদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তি শিক্ষা-গবেষণাকে জনকল্যাণে বিস্তৃত করতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে চুয়েট। পাশাপাশি বিশ্ববাজারের চাহিদার সাথে সমন্বয় ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার লক্ষ্যে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে যথোপযুক্ত মানবসম্পদ তৈরিতে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে চুয়েট কাজ করে যাচ্ছে।

এটি ১৯৬৮ সালে ‘চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ’ হিসেবে মাত্র ৩টি বিভাগ এবং ১২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে পরবর্তীতে ১৯৬৮ সালে ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি), চট্টগ্রাম’ হিসেবে উন্নীত হয়। ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর ‘চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়’ নামে নবরূপে আত্মপ্রকাশ করে। বর্তমানে ১৮টি বিভাগে ৯২০ আসনের (উপজাতি কোটাসহ মোট ৯৩১ আসন) বিপরীতে স্নাতক পর্যায়ে ৪ হাজার ৫০০ জন এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে আরও ১২০০ জন মিলিয়ে মোট ৬ হাজার ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়নরত রয়েছেন। একইসাথে ১০১ জন পিএইচডি ডিগ্রিধারীসহ ৩৩৩ জন শিক্ষক, ১৭১ জন কর্মকর্তা এবং ৪৫৯ জন কর্মচারী মিলে প্রায় ১ হাজার দক্ষ ব্যক্তিত্ব চুয়েটকে এগিয়ে নেওয়ার ব্রতে নিযুক্ত রয়েছেন।

দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সফল উদ্যোক্তা তৈরি, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমকে উৎসাহিত করা এবং ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া কোলাবোরেশনকে আরও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে প্রায় ১১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে নির্মিত সর্বপ্রথম ‘চুয়েট শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’ প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে উদ্বোধনের মাধ্যমে দৃশ্যমান অগ্রগতি ও চুয়েটের সাফল্যের ধারায় নতুন পালক যুক্ত করেছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরির মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে এই ইনকিউবেটর ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এই ইনকিউবেটরে বাটারফ্লাই ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড, চালডাল ডটকম, মিস্ত্রি বাজার, ডিলিজিট, ক্লিগ টেক, সিম্স ইন্টারঅ্যাকটিভ-সহ অন্তত ৭টি প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সম্প্রতি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি ইনকিউবেটরে আরও ১৭টি স্টার্টআপ ও প্রযুক্তি কোম্পানির মাঝে বরাদ্দপত্র হস্তান্তর করেছেন। মূলত তাঁরা গবেষণা ও উন্নয়ন সেক্টর নিয়ে ইনকিউবেটরে কাজ করছেন। এছাড়া ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া কোলাবোরেশন, যৌথ গবেষণা প্রকল্প, স্কিলস ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং, অন-ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্ট প্রভৃতি কার্যক্রম চালাচ্ছে।

উল্লেখ্য, প্রায় ৫ একর আয়তন জুড়ে স্থাপিত শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরে ১০ তলাবিশিষ্ট একটি ইনকিউবেশন ভবন এবং ৬ তলাবিশিষ্ট একটি মাল্টিপারপাস প্রশিক্ষণ ভবন রয়েছে। যেখানে থাকছে স্টার্টআপ জোন, আইডিয়া/ইনোভেশন জোন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিক জোন, ব্রেইনস্ট্রর্মিং জোন, এক্সিবিশন সেন্টার, ই-লাইব্রেরি জোন, ডাটা সেন্টার, রিসার্চ ল্যাব, ভিডিও কনফারেন্সিং কক্ষ, সম্মেলন কক্ষ প্রভৃতি।

প্রকৌশল ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা-গবেষণার অন্যতম সেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স’ হিসেবে গড়ার বহুমুখী প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।

বিএনএনিউজ/এইচ.এম/ হাসনাহেনা

Loading


শিরোনাম বিএনএ