কেন বৃহস্পতিবার রাতের আমলের এত ফজিলত- এই প্রশ্নের উত্তরে প্রথমে আনতে হয় একটি হাদীস। আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের একটি বিশেষ গুণ হলো তারা রাসুলুল্লাহ (স.)-এর সুন্নতের প্রতি দুর্বল। তাই যত কষ্টই হোক তারা বিশেষ দিনের সুন্নত পালনে তৎপর হয়ে ওঠেন। আর প্রিয়নবী (স.) বৃহস্পতিবারে বিশেষ কিছু নফল ইবাদতে মনোযোগী হতেন। এর মধ্যে প্রধান আমলটি হলো রোজা।
বৃহস্পতিবার রাতে পুরো সপ্তাহের আমল আল্লাহর সামনে উপস্থাপন করা হয়। এজন্য বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
এ বিষয়ে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-
বৃহস্পতি ও সোমবার আল্লাহ তায়ালার সামনে বান্দার আমল উপস্থাপন করা হয়, তাই আমি চাই- আমার আমল পেশ করার সময় আমি যেন রোজা অবস্থায় থাকি। -সুনানে নাসায়ী, ২৩৫৮
সুরা দুখান
হাদিসে সুরা দুখান পাঠ করার বেশকিছু ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ইবনে মারদুবিয়া হজরত আবু উমামা বাহেলি রাদিয়াল্লাহু আনহুর সূত্রে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি জুমআর রাতে অথবা জুমআর দিনে সুরা দুখান তেলাওয়াত করে, আল্লাহ তাআলা তাঁর জন্য জান্নাতে একটি মহল তৈরি করেন।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেন- যে ব্যক্তি জুমার রাত্রিতে (বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে) সুরা দুখান পাঠ করবে সকাল হওয়ার আগেই তার সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।
হজরত উমামা (রা.) হতে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেন- যে ব্যক্তি জুমার রাত্রিতে অথবা জুমার দিন সুরা দুখান পাঠ করবে তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করা হবে। (কুরতুবী)
সুরা দুখান ও সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত
বাইহাকি বর্ণনা করেছেন, যে ব্যক্তি জুমআর রাতে এ সুরা এবং সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করে। সে সকালে এমন অবস্থায় জাগ্রত হবে যে, তার সকল গোনাহ মাফ করে দেয়া হয়েছে।
ইমাম তিরমিজি ও বাইহাকি হজরত আবু হুরায়রা থেকে বর্ণনা করেছেন, যে ব্যক্তি রাতে সুরা দুখান তেলাওয়াত করবে, সত্তর হাজার ফেরেশতা সকাল পর্যন্ত তার জন্য মাগফিরাতের দোয়া করতে থাকবে।
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি সন্ধ্যা বেলায় সুরা দুখান, সুরা গাফের ও আয়াতুল কুরসি তেলাওয়াত করবে, সকাল পর্যন্ত তাঁর হেফাজত করা হবে এবং সে কোনো প্রকার মন্দ কিছু দেখবে না।
আরও পড়ুন : জুমার দিন, শুক্রবার ইসলামে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন কেন
পূর্ণ হজ ও পূর্ণ ওমরার নেকি
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ফজরের নামাজ মসজিদে আদায় করে অতিরিক্ত কিছু সওয়াব অর্জন করা সম্ভব।
আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের সালাত জামাতে আদায় করে, তারপর সূর্য ওঠা পর্যন্ত বসে বসে আল্লাহর জিকির করে, তারপর দুই রাকাত সালাত আদায় করে, তার জন্য একটি হজ ও একটি ওমরার সওয়াব আছে। আনাস (রা.) বলেন, রাসুল (স.) বলেছেন, পূর্ণ, পূর্ণ, পূর্ণ (হজ ও ওমরার সওয়াব)। (তিরমিজি: ৫৮৬)।
সকল কাজে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা মুমিনের কর্তব্য। কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর নিকটে এ দুআ করতেন—
হে আল্লাহ ! আমি আপনার কাছে হেদায়াত ,তাক্বওয়া, নৈতিক পবিত্রতা এবং স্বচ্ছলতা বা অন্যের অমুখাপেক্ষিতা প্রার্থনা করছি।
জুমার দিনে যে দোয়া পড়লে ৮০ বছরের গুনাহ মাফ হয়
বিএনএ,জিএন