34 C
আবহাওয়া
৯:২০ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২৭, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » চট্টগ্রামে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, ব্যবসায়িদের রক্ষার আহ্বান

চট্টগ্রামে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, ব্যবসায়িদের রক্ষার আহ্বান

চট্টগ্রামে বৃষ্টিতে সড়কে জলাবদ্ধতা, ক্ষতি থেকে ব্যবসায়ীদের রক্ষার আহ্বান

বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে সোমবার (৩১ মে) মধ্যরাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনো ভারী, কখনো হালকা বৃষ্টি আর বজ্রপাত। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এই বৃষ্টিপাত জনসাধারণের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। এই বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে নগরবাসীকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।

মঙ্গলবার (১ জুন) দুপুর ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রায় ১৩৪.৮ মিলিমিটার। এছাড়া চট্টগ্রাম আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় যা আরও বাড়তে পারে। চট্টগ্রামের প্রধান আবহাওয়া কার্যালয়ের পূর্বাভাস কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে মাঝারি ধরণের ভারী বর্ষনের সতর্কবার্তা রয়েছে। এভাবে থেমে বৃষ্টি হতে পারে আগামীকাল (বুধবার) পর্যন্ত। ওই সময়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে। সেই সাথে ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী থেকে মাঝারি ধরণের ভারী বর্ষণের সম্ভাবনাও রয়েছে।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চট্টগ্রামের নদী বন্দরের জন্য ২ নম্বর নৌ-হুঁশিয়রি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। যদিও সমুদ্রবন্দরে কোন সংকেত দেখানো হয়নি। চট্টগ্রাম আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে—আগামী ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ১৫ থেকে ১৮ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। যা সর্বোচ্চ ৩৫ থেকে ৪৪ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে।

বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরীর প্রবর্তক মোড়, চকবাজার, বাকলিয়া, হালিশহর, আগ্রাবাদ সিডিএসহ বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এ সময় হাঁটু পানিতে ডুবে গেছে সড়ক। অলিগলি-ঘরবাড়িতে ঢুকে পড়েছে পানি। সড়কে আটকা পড়েছে যানবাহন। চলাচল করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন মানুষ।

নগরীর আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ইশতিয়াক হোসেন বলেন, সিডিএ আবাসিকে হাঁটু পানি জমে গেছে। তাই সকাল থেকে বাসায় বসে ছিলাম। পরে বাধ্য হয়ে পানিতে ভিজে বের হয়েছি।

চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনী। এই প্রকল্পের আওতায় নগরের খাল খনন ও নালা-নর্দমা পরিষ্কার এবং রেগুলেটর নির্মাণের কাজ চলছে।এছাড়া ওই প্রকল্পের অধীনে নগরীর বিভিন্ন খালে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। সিডিএ’র খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ১ জুলাই। ২০২০ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার লক্ষ্য থাকলেও তা এখনও সম্ভব হয়নি।

এদিকে আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান মো. জহিরুল আলম দোভাষের সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম মহানগরে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ে সিডিএ সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। সভায় স্থপতি আশিক ইমরান, সিডিএ ও সিটি কর্পোরেশন’র প্রকৌশল বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন। তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক লেঃ কর্ণেল শাহ আলী।
চট্টগ্রামে বৃষ্টিতে সড়কে জলাবদ্ধতা, ক্ষতি থেকে ব্যবসায়ীদের রক্ষার আহ্বান

সভায় চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, কর্ণফুলী নদী বাঁচলে চট্টগ্রাম বন্দর বাঁচবে, চট্টগ্রাম বন্দর বাঁচলে দেশ বাঁচবে। প্রায় কয়েক মিটার গভীর পলিথিন স্তরের কারণে কর্ণফুলী নদীর ক্যাপিটাল ড্রেজিং বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে জলাবদ্ধতার কারণে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ-আছাদগঞ্জ-কোরবানীগঞ্জ পাইকারী বাজার এলাকায় শত শত কোটি টাকার মালামাল নষ্ট হচ্ছে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমকে ঘিরে ব্যবসায়ীরা এবারও শঙ্কিত।  ব্যবসায়ীদেরকে এ ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা হারানো, অতীতের ন্যায় জলাধারের অভাব, খাল, নালা-নর্দমা ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ ও অবৈধ দখলের ফলে জলাবদ্ধতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আরএস খতিয়ান অনুযায়ী পুরানো খালগুলো উদ্ধার করতে হবে এবং অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে সেবা সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। তিনি এক্ষেত্রে জনসচেতনতা সৃষ্টি, আইন প্রয়োগ এবং প্রয়োজনে দোষীদের জরিমানা করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন। একই সাথে উদ্ধারকৃত খালের রক্ষণাবেক্ষণ জরুরী উল্লেখ করে সিটি কর্পোরেশন ও সিডিএ’র প্রকৌশল বিভাগ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দেন।

সিডিএ’র চেয়ারম্যান মো. জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, চলমান প্রকল্পগুলো সম্পন্ন হলে তা সিটি কর্পোরেশনের নিকট হস্তান্তর করা হবে। এক্ষেত্রে কর্পোরেশনের পক্ষে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগের অনুরোধ জানান তিনি। চাক্তাই, রাজাখালী, মহেশখাল ইত্যাদি খালে স্লুইস গেট নির্মাণ সম্পন্ন হলে চট্টগ্রাম শহর জলাবদ্ধতা মুক্ত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন সিডিএ’র চেয়ারম্যান।

বিএনএনিউজ/মনির

Loading


শিরোনাম বিএনএ