।।মিজানুর রহমান মজুমদার।।
আজ লাইলাতুল কদর বা মহিমান্বিত রজনী। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ রাত। প্রিয় নবী (সা) এরশাদ করেছেন, ‘রমজান মাসে এমন একটি রজনী রয়েছে যেটি হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। যে এটা থেকে বঞ্চিত হলো সে সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো। এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত করা হয় শুধু হতভাগা ব্যক্তিকে’।
এ মহান রজনীতে হযরত জিব্রাইল (আ) ফিরিস্তাদের বহর নিয়ে নূরের পতাকা নিয়ে পৃথিবীতে আগমন করেন। পৃথিবীর চারটি স্থানে নূরের পতাকা উত্তোলন করেন। পবিত্র বায়তুল্লাহ শরীফে, মসজিদে নববী শরীফে, বায়তুল মোকাদ্দাসে,তুরে সীনা মসজিদে।
এরপর ফেরেশতাগণ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েন। যে সব বান্দা এবাদতে মশগুল থাকেন তাদের গুনাহ মাফ করার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন। শবে ক্বদরের রজনীতে ক্বিয়ামুল লাইল, কুরআন তেলাওয়াত, যিকর আজকার, নবী (সা)এর উপর দোয়া দরুদ পাঠ, সালাত সালাম প্রদান, মা বাবা আত্মীয় স্বজনের কবর জেয়ারত, দান সাদকা পূণ্যময় আমল।
এ রাতে কি দোয়া পড়া উত্তম নবী (সা) কে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি এরাশাদ করেছেন, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউবুন কারিমুন তুহিব্বুল আফওয়া ফাআফু আন্নী’-অর্থাং হে আল্লাহ আপনি বড় ক্ষমাশীল। আপনি ক্ষমা করতে পছন্দ করেন। আমাকে ক্ষমা করুন।
মহিমান্বিত এ রজনীতে পবিত্র কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। পবিত্র কুরআনের সূরা কদরে আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমি ক্বদরের রাতে কুরআন অবতীর্ণ করেছি’।
আল্লাহ পাক লওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আসমানে ক্বদর রাতে কুরআন অবতীর্ণ করেছেন। । সে কারণেই এ রজনী এমন মর্যাদার। এ রাতে মানব সন্তানের ভাগ্য বা বাজেট নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
সুতরাং এই রাতের ফজিলত লাভে সচেষ্ট হওয়া প্রত্যেকের কর্তব্য। অন্তত এশা ও ফজরের নামাজ যদি জামাতের সঙ্গে আদায় করা যায়, তবুও সারা রাত নামাজ পড়ার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে। এক হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি এশা ও ফজর জামাতের সঙ্গে পড়ল সে যেন সারা রাত দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ল।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৫৬)
লাইলাতুল কদরের এ রাতে দেশের মানুষের মঙ্গল ও কল্যাণ কামনায় জাতীয় নেতারা সহ ওলামা কেরামগণ তাদের দুহাত তুলে মোনাজাত করবেন। যাতে এ রহমত ও বরকতময় মাস রমজানের অন্যতম মর্যাদাবান রাত লায়লাতুল ক্বদর কারো জীবন থেকে বিফলে না যায়।দেশ গড়ার কাজে যাতে শবে ক্বদরের শিক্ষা্ যেন আমাদের জীবনের পাথেয় হয়।