31 C
আবহাওয়া
৭:৩১ অপরাহ্ণ - মে ২১, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » মিরসরাইয়ে র‌্যাব-পুলিশ ও যুবকের অপ্রীতিকর ঘটনা!

মিরসরাইয়ে র‌্যাব-পুলিশ ও যুবকের অপ্রীতিকর ঘটনা!

মিরসরাইয়ে র‌্যার্ব-পুলিশ ও যুবকের অপ্রীতিকর ঘটনা

বিএনএ ডেস্ক: শুক্রবার দুপুর ১টার দিকের ঘটনা। মিরসরাই থানা মসজিদের সামনে জড়ো মুসল্লিরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মসজিদের পাশে আলমগীরের কুলিং কর্ণার। তার দোকানে ৪ ব্যক্তি প্রবেশ করে দোকানের প্রবেশের সরু পথে চেয়ার টেবিল নিয়ে বসে পড়েন। ফলে দোকানে অন্য কাস্টমারদের যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছিলো। এসময় দোকানদার আলমগীর ওই ৪ ব্যক্তিকে পথ ছেড়ে বসার অনুরোধ জানান। এতে আলমগীরের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অশোভন আচরণ করেন তারা। পাশাপাশি দোকানদার আলমগীরের নাম, পিতার নাম নথিভূক্ত করেন ওই চার ব্যক্তি।

এসময় দোকানে বসে থাকা অন্য আরও ১০/১২ জনের মধ্যে তৌহিদুল ইসলাম মনা নামে এক যুবককে নাম, পিতার নাম জিজ্ঞাসা করেন তারা। মনা তাদের কাছে নিজের পরিচয় দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে ওই ৪ চার ব্যক্তি মনার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তখন রাস্তায় দাড়িয়ে থাকা একটি গাড়ি থেকে নেমে আরও ২ ব্যক্তি তাদের সাথে যোগ দেন। এসময় তৌহিদুল ইসলাম মনাকে চড়-থাপ্পড় দেয়ার অভিযোগ ওঠে।

তৌহিদুল ইসলাম মনাকে গাড়িতে তোলার চেষ্টা
তৌহিদুল ইসলাম মনাকে গাড়িতে তোলার চেষ্টা

এঘটনায় মনাসহ দোকানে উপস্থিত অন্যরা থাপ্পড় দেয়ার প্রতিবাদ করলে মনাকে ৬ জন মিলে মারধর করেন। পরে তার হাতে হ্যান্ডক্যাপ পরিয়ে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করেন তারা।

ঘটনাটি জুমার নামাজ আদায়ে মসজিদে আগত মুসল্লিদের নজরে আসে। মুসল্লিদের মধ্যে মিরসরাই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) কবির হোসেন, সাবেক ওসি মুজিবুর রহমান, ওসি তদন্ত ওলিউর রহমান ও উপপুলিশ পরিদর্শক খাইরুল সেখানে এগিয়ে যান। স্থানীয় যুবককে (তৌহিদল ইসলাম মনা) মারধর করে জোরপূর্বক গাড়িতে তোলার প্রতিবাদ করেন তারা। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে।

তবে ঘটনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগেই মনাকে হ্যান্ডক্যাপ পরানো ব্যক্তিরা নিজেদের র‌্যাব সদস্য বলে পরিচয় দেন। পাশাপাশি পুলিশকে র‌্যাবের প্লাকার্ড ও পোশাক (কালো কোটি) দেখান তারা। এতে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনার অবসান হয়। এসময় মিরসরাই থানা মসজিদে আগত শত শত মুসল্লি, পুলিশ ও মিরসরাই প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

র‌্যাব ৭ এর ফেনী ক্যাম্পের এএসপি জুনায়েদ উপস্থিত মিরসরাই থানা পুলিশ ও সাংবাদিককের জানান, একটি অভিযানের স্বাক্ষী নিতে গিয়ে স্থানীয় যুবক তৌহিদুল ইসলাম মনার সাথে তাদের ভুলবোঝাবুঝি হয়েছে। কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়ার চেষ্টা করা হবে। তবে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষ মনাকে ক্যাম্পে নিয়ে যেতে বলেছেন, এজন্য তাকে এখন ছেড়ে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

র‌্যাব ৭ এর কোম্পানি কমান্ডার জানান, তৌহিদল ইসলাম সরকারি কাজে বাধা দিয়েছেন। এজন্য তাকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হবে।

এ বিষয়ে জানতে মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেনকে ফোন করা হয়। তিনি মিটিংয়ে থাকায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে ওসি (তদন্ত) ওলিউর রহমান জানান, ঘটনার সময় তিনিও পেছনে ছিলেন। জুমার নামাজ আদায় করতে যাওয়ার সময় এক যুবককে কিছু লোক টেনে হিচড়ে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করতে দেখেন তারা। ওই যুবককে রক্ষা করতে ওসি সাহেবসহ পুলিশ সদস্যদের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হয়। এতে তাদের সাথে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। পরে তারা নিজেদের র‌্যাব সদস্য বলে পরিচয় দিলে পুলিশ আর কোন পদক্ষেপ নেয়নি।

দোকানদার আলমগীর ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তৌহিদুল ইসলাম মনার কোন দোষ নেই। সে শুধু তার নাম পরিচয় দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এতে তাকে এভাবে মারধর করে হ্যান্ডক্যাপ পরিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ণ করবে। ওই বাহিনীর প্রতি মানুষ আস্থা হারাবে। নিরাপরাধ তৌহিদুল ইসলামকে অবিলম্বে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান স্থানীয়রা।

বিএনএ/ এ আর

Loading


শিরোনাম বিএনএ