বিএনএ: অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৫ জন কবি, লেখক ও গবেষকের হাতে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২২ তুলে দেন তিনি।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টায় বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে ঐতিহ্যবাহী এই বই মেলার উদ্বোধন করেন সরকার প্রধান।
এসময় তিনি বলেন, বাংলা সাতিহ্যের আলাদা একটা মাধুর্য আছে। এটাকে আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরতে হবে। এজন্য লেখক ও কবি-সাহিত্যিকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি ছড়িয়ে দিতে আন্তর্জাতিক সাহিত্য মেলা আয়োজনে বাংলা একাডেমিতে নির্দেশ দেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, হাতে নিয়ে বই পড়ার মতো তৃপ্তি অন্য কোনো ভাবে পাওয়া না। তবুও যুগের সাথে তাল মিলিয়ে প্রতিটি সাহিত্যের অডিও ও ডিজিটাল ভার্সন করার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, সাহিত্যের প্রতি নতুন প্রজন্মকে আগ্রহী করে গড়ে তুলতে হবে। তাহলে তারা মাদক ও সন্ত্রাস থেকে দূরে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু মানুষের দেশের স্থিতিশীলতা কখনই ভালো লাগে না। ক্ষমতার ইচ্ছে থাকলে তাদের জনগণের কাতারে দাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি। বলেন, দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার অনেক চেষ্টা করা হবে। এর মাঝেও তিনি দেশের সেবা করে যাবেন।
সরকার প্রধান বলেন, কৃষি ও খাদ্যে সব ধরনের ভর্তুকি দেয়া হবে। তবে জ্বালানী খাতে ভর্তুকী কেনো দিতে হবে। জ্বালানী খাতে ভর্তুকী দিলে উচ্চবিত্তদেরই বেশি লাভ, গরীবদের কোনো লাভ নেই। শেখ হাসিনা বলেন, অর্নিবাচিত সরকার ক্ষমতায় আসলে মহাভারত অশুদ্ধ হবে না, অশুদ্ধ হবে সংবিধান।
উদ্বোধনের আগে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত সাতটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রকাশিত সাতটি বইয়ের মধ্যে আছে-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পাদিত শেখ মুজিবুর রহমান রচনাবলি-১, কারাগারের রোজনামচা পাঠ বিশ্লেষণ, অসমাপ্ত আত্মজীবনী পাঠ বিশ্লেষণ ও আমার দেখা নয়াচীন পাঠ বিশ্লেষণ, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ রচিত আমার জীবন নীতি, আমার রাজনীতি এবং জেলা সাহিত্য মেলা ২০২২ (১ম খন্ড)।
এর আগে ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২২’ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। এবার বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন মোট ১৫ জন। পুরস্কার হিসেবে দুই লাখ টাকার চেক, একটি করে সম্মাননা পত্র ও সম্মাননা পদক দেয়া হয়।
বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন-কবিতায় ফারুক মাহমুদ ও তারিক সুজাত, কথা সাহিত্যে তাপস মজুমদার ও পারভেজ হোসেন, প্রবন্ধ/গবেষণায় মাসুদুজ্জামান, অনুবাদে আলম খোরশেদ, নাটকে মিলন কান্তি দে ও ফরিদ আহমদ দুলাল, শিশু সাহিত্যে ধ্রুব এষ ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় মুহাম্মদ শামসুল হক।
এছাড়া বঙ্গবন্ধুবিষয়ক গবেষণায় সুভাষ সিংহ রায়, বিজ্ঞান/কল্পবিজ্ঞান/পরিবেশবিজ্ঞানে মোকাররম হোসেন, আত্মজীবনী/স্মৃতিকথা/ভ্রমণ কাহিনিতে ইকতিয়ার চৌধুরী এবং ফোকলোরে পুরস্কার পেয়েছেন আবদুল খালেক ও মুহাম্মদ আবদুল জলিল বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন।
বাংলা একাডেমি আয়োজিত এ বছরের বইমেলার প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত অতিথিদের নিয়ে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বিভিন্ন বইয়ের স্টল ঘুরে দেখেন।
বিএনএনিউজ/এ আর