36 C
আবহাওয়া
১১:২৬ পূর্বাহ্ণ - মে ১, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » কবি নজরুলের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী; সিক্ত হলেন শ্রদ্ধায়

কবি নজরুলের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী; সিক্ত হলেন শ্রদ্ধায়

কবি নজরুলের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী

বিএনএ ডেস্ক: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। নানা আয়োজন ও কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিনটি পালন করেছেন নজরুল ভক্তরা।

শনিবার (২৭ আগস্ট) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবি নজরুল ইসলামের কবরে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। এসময় তারা বলেন, কবি নজরুল মানবতার জয়গান গেয়েছেন। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ দূর করতে লিখেছেন মুক্তির গান। কবি নজরুল চেতনা মানুষের মাঝে ছড়িতে দেয়ার আহ্বান জানান সকলে।

নজরুল ভক্তরা বলেন, তিনি বাংলা কবিতায় নতুন এক সুর যুক্ত করেছিলেন। নজরুলের চেতনা ও আদর্শ বাঙালির জীবনে চিরন্তন। বাংলাদেশের উত্থান-পতনময় সংগ্রামী ইতিহাসে অবিস্মরণীয়। নির্মম দারিদ্র্য থেকে অসামান্য প্রতিভায় তিনি অভিষিক্ত হয়েছেন মহাপুরুষে। আজীবন সংগ্রাম করেছেন শোষিত মানুষের মুক্তির জন্য। সোচ্চার ছিলেন সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, কুসংস্কারে বিরুদ্ধে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি নিয়েছে। সকালে কবি পরিবারের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে তারা কবির রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন।

এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, নজরুল ইনস্টিটিউট, বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে কবির কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

শ্রদ্ধা জানাতে এসে কবি পরিবারের সদস্য ও সুধীজনেরা বলেন, কবিকে শুধু বাংলার মধ্যে সীমাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বিদ্রোহী কবিকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে হবে। ছড়িয়ে দিতে তার জীবনী ও অমর সৃষ্টি। বলেন, বাঙালি সমাজ ও সংস্কৃতি বিনির্মাণে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টিকর্ম সবসময় প্রেরণা দেয়। কাজী নজরুল সাম্যের কবি তার চিন্তা ও সমাজভাবনা পথ দেখাতে সাহায্য করে।

কবির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নজরুল ইসলাম ছিলেন যৌবনের কবি, প্রেমের কবি, বিদ্রোহের কবি। বিএনপি নেতারা বলেন, আজকের দিনে কবি নজরুল খুবই প্রাসঙ্গিক। কবি নজরুল যেমন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তার তরবারি উন্মুক্ত করেছিলেন কলমের মধ্যদিয়ে। আজকে যেন সেই কলমের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের বিদ্যমান অনাচারের প্রতিবাদ করে সত্যিকার গণতন্ত্রকামী বাংলাদেশ পুনরায় গড়ে তুলব।

মাত্র বাইশ বছর শিল্প সৃষ্টিতে সক্রিয় থাকতে পেরেছিলেন। এই ক্ষুদ্রসময়ে পৌনঃপুনিকভাবে তিনি মানুষের মুক্তির কথাই বলেছেন। তাই এক হাতে বাঁশের বাশরি, আর হাতে রণ-তুর্য এই যুগলবন্ধী যেন অবধারিত ছিল। দ্রোহ আর প্রেম সত্তার নিবিড় যোগ নজরুল কাব্যে স্বতন্ত্র মাত্রা যোগ করেছে।

স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ২৪ মে নজরুলকে নাগরিকত্ব দিয়ে তাঁকে সপরিবারে এদেশে নিয়ে আসেন। বাংলাদেশের এই জাতীয় কবিকে ১৯৭৪ সালে সম্মানসূচক ডি-লিট উপাধি দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। মৃত্যুর কিছুদিন আগে সাম্যের কবিকে একুশে পদকেও ভূষিত করে রাষ্ট্র।

১৮৯৯ সালের ২৪ মে ও বাংলা ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কাজী নজরুল ইসলাম। শৈশবেই স্বজন হারানো ‘দুখু মিয়া’ দারিদ্র্য আর সব বাধা ঠেলে একসময় বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা হয়ে ওঠেন।

১৯৪২ সালে দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে ক্রমশ বাকশক্তি হারান তিনি। ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র ও ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট ঢাকার তৎকালীন পিজি হাসপাতালে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম।

মসজিদের পাশে কবর দেয়ার জন্য মৃত্যুর আগে কবি গানে গানে বলেছিলেন ‘মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই, যেন গোর থেকে মুয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই’। তার শেষ ইচ্ছানুযায়ীই কবি নজরুল ইসলামকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে দাফন করা হয়।

বিএনএ/এ আর

Loading


শিরোনাম বিএনএ