27 C
আবহাওয়া
৯:৩০ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ৭, ২০২৫
Bnanews24.com
Home » বালু হুজুর পাপ্পী কানাডা থেকে নিয়ন্ত্রণ করছেন নদী সাম্রাজ্য!

বালু হুজুর পাপ্পী কানাডা থেকে নিয়ন্ত্রণ করছেন নদী সাম্রাজ্য!


মনসুর আলম পাপ্পী। যার আরেক নাম বালু হুজুর। তাকে এই উপাধি দিয়েছেন চট্টগ্রামের প্রয়াত মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী। পাপ্পির মূল ব্যাবসা কর্নফুলী নদীর বালু। প্রতিমাসে কালুরঘাট ফেরী থেকে ও তার অন্যান্য অবৈধ ব্যাবসা থেকে প্রতিমাসে কমপক্ষে ১কোটি টাকা আসে।

YouTube player

এক সময় আওয়ামী লীগের আশ্রয়ে থাকা কথিত বালু হুজুর এখন পরিবারসহ কানাডা পালিয়েছে। কিন্তু তার প্রভাব এখনো অব্যাহত রয়েছে। কর্ণফুলী নদীতে বিএনপি- যুবদলের নেতাদের সঙ্গে মিলে-মিশে বালু ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা পাপ্পী।তার রয়েছে অবৈধ অস্ত্রে সজ্জিত ক্যাডার বাহিনী। নদী বানিজ্যের টাকা হুন্ডির মাধ্যমে কানাডায় যাচ্ছে। আর সেখানে বিলাসী জীবনযাপন করছে পাপ্পী ও তার পরিবার।

বোয়ালখালী আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মনসুর আলম পাপ্পী এবং তার সিন্ডিকেট শুধু বালি ও কর্ণফুলী নদী কেন্দ্রিক পরিবহন ব্যবস্থা খাস জমি দখল করে ক্ষান্ত হয়নি, সড়ক ও জনপথ বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ কালুরঘাট ফেরি পথের ইজারাও নিয়েছেন। তার ফেসবুক ওয়ালে দেখা যায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের সাবেক সচিব আমানুল্লাহ নুরীকে ‘ভাইজান’সম্মোধন করে ছবিও ট্যাগ করেছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মনসুর আলম পাপ্পী নিজেকে বোয়ালখালী আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ- সভাপতি দাবি করেন। তার বিরুদ্ধে মাদক পাচার, চাঁদাবাজি, জুট ব্যবসা, জমি দখল এককভাবে বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তার ক্যাডার বাহিনীর মধ্য রয়েছে, জামাল,ইমন, আরমান, মিজান, আব্দুল্লাহ, বদি, নরুদ্দিন, সামির, মফজল রুবেল, সাগর, মামুন, আফছার, শিশিরসহ বিশাল একটি বাহিনী। পাপ্পী পালিয়ে গেলেও তার বাহিনী পুরোদমে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।

হত্যাসহ বহু মামলার আসামি বাপ্পী কখনো রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে, কখনো আবার প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়ে বারবার আইনের ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকেছেন। ২৪ পরবর্তী জুলাই গণ আন্দোলনের পর তার ব্যতিক্রম হয়নি। জুলাই হত্যা মামলার আসামি হওয়ার পর স্বপরিবারে কানাডা পালিয়েছেন।

পাপ্পীর বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত নাঈমুল রহমান রব্বি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন। তার অভিযোগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জাল সনদ ও ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে মুঞ্জুর আলম কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা সংগ্রহ করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে দেওয়া আবেদনে নাঈমুল রহমান রব্বি শুধু, ভিসা বাতিল নয়, ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে দেশে ফেরানোরও দাবি জানান।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাল সনদ ও ভুয়া তথ্য দিয়ে ভিসা নেওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ। কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র চাইলে তদন্ত করতে পারে, আর বাংলাদেশ চাইলে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ‘রেড নোটিশ’ জারি করে তাকে দেশে ফেরাতে পারে।
অভিযোগ রয়েছে, মুঞ্জুর আলম পাপ্পী তার সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালান। গুলিবিদ্ধদের মধ্যে রব্বির নাম সরকারি গেজেট (নং: ৭৭৮)-এ স্বীকৃত ভুক্তভোগী হিসেবে অন্ত র্ভুক্ত হয়েছে। তার অভিযোগ পাপ্পী ও তার লোকজন তাকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ প্রয়োগ করার পাশাপাশি জীবননাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।

সূত্র জানায়, পাপ্পী কানাডায় করেছেন রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন। জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ায়, আবেদন বাতিল হয়েছে। পাপ্পী কিছুদিন কানাডা কিছুদিন যুক্তরাষ্ট্রে আসা যাওয়া করে থাকছেন।

অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মনসুর আলম পাপ্পীর কাহিনী শুধু একজন মানুষের গল্প নয়; এটি বাংলাদেশের রাজনীতি, অপরাধ ও প্রভাবশালীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ের এক নগ্ন প্রতিচ্ছবি।

সৈয়দ সাকিব

Loading


শিরোনাম বিএনএ