25 C
আবহাওয়া
৭:৪৯ পূর্বাহ্ণ - মে ৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » কবে হবে নিরাপদ সড়ক?

কবে হবে নিরাপদ সড়ক?

নিরাপদ সড়ক

বিএনএ ডেস্ক: জাতিসংঘ ২০২১- ৩০ সময়কালকে বিশ্ব ‘সড়ক নিরাপত্তা কার্যক্রম দশক’ ঘোষণা করার পরে প্রায় দুই বছর অতিবাহিত হয়েছে। তা সত্ত্বেও সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাণহানি ও আহত হওয়ার ঘটনা হ্রাসে এখন পর্যন্ত খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি। প্রতি বছর সারাবিশ্বে প্রায় ১৩ লাখ মানুষ প্রাণ হারায় সড়ক দুর্ঘটনায়।

বাংলাদেশে গত এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে প্রতিদিন ১৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে। গত ১০ বছরে সড়কে প্রতিদিন মারা গেছেন গড়ে ১৪ জন। সড়কে নেমে নিরাপদে ঘরে ফেরার নিশ্চয়তা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। সড়ক নিরাপত্তায় করা হয়েছে সড়ক পরিবহন আইন। সেটি এখনো পুরোপুরি কার্যকর হয়নি । তৈরি হয়নি আইনের বিধিমালা। নিরাপদ সড়কের প্রতিশ্রুতিও বাস্তবায়ন হয়নি। আইনের বাস্তবায়ন না হওয়ায় কমছে না সড়ক দুর্ঘটনা, নিরাপদ হচ্ছে না সড়ক।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪ হাজার ৬৯৬টি, এতে মারা গেছেন ৫ হাজার ২১১ জন। এরপর করোনার বছরে ২০২০ সালে ৪ হাজার ৭৩৫টি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৫ হাজার ৪৩১ জন। ২০২১ সালে ৫ হাজার ৩৭১টি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৬ হাজার ২৮৪ জন এবং সর্বশেষ চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৮৩১টি। এসব দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ১ হাজার ৯১১ জন। রোড সেফটি বলছে, ২০২১ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় যে পরিমাণ মানবসম্পদের ক্ষতি হয়েছে তার আর্থিক মূল্য ৯ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা, যা জিডিপির দশমিক ৩ শতাংশ।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন‘নিরাপদ সড়কের জন্য সরকার কাজ করছে। নিরাপদ সড়কের জন্য আইন আছে এবং আইনের প্রয়োগও হচ্ছে। নিয়মিত ৬৪ জেলায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক ও দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দেশের মহাসড়কে প্রায় ৮৪ ভাগ দুর্ঘটনা ঘটে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে। সুতরাং মহাসড়কে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দুর্ঘটনার মধ্যে সোজা মহাসড়কে ৬৩ ভাগ এবং সড়কের যেখানে বাঁক আছে সেখানে ৩৭ ভাগ দুর্ঘটনা হচ্ছে। সুতরাং গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে পর্যাপ্ত বাঁক রাখতে হবে তাতে কমবে দুর্ঘটনা।

মহাসড়কে দুর্ঘটনায় প্রতি ১০০ জনের মধ্যে গাড়ির বেপরোয়া গতির কারণে মারা যান ৪৯ জন পথচারী এবং ৫১ জনের মধ্যে আছেন গাড়ির চালক ও যাত্রী। ঢাকা শহরের মধ্যে দুর্ঘটনায় ৭১ দশমিক ৭২ শতাংশ পথচারী নিহত হন। বাকি ২৯ শতাংশ হলো মোটরসাইকেল চালক, যাত্রী। রাজধানীতে ৪৪ শতাংশ দুর্ঘটনা হচ্ছে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে।

২০১৮ সালের ২৯ জুলাই বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজউদ্দিন কলেজের দুজন শিক্ষার্থী নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন। সে সময় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন। আন্দোলনের ফলে সড়ক পরিবহন আইন গেজেট আকারে পাস হয়েছিল ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর। এরপর গত ৪ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো আইনটি কার্যকর হয়নি।

ঢালিউডের চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন। এই নারী ১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর চট্টগ্রামের পটিয়ায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। তার মৃত্যু দেশে নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের পটভূমি তৈরি করে, যার পরিক্রমায় ইলিয়াস কাঞ্চন গড়ে তোলেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’। সংগঠনটি নিরাপদ সড়কের দাবি বা আন্দোলনকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

নিরাপদ সড়কের বিষয়ে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ (নিসচা)-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি, মানুষকে বলছি সরকারকে বলছি। তবে দুর্ঘটনা রোধ করার জন্য কোনো সরকারের আমি স্ট্রং মনোভাব পাইনি।’

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ