বিএনএ, জাবিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ধর্ষণকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে মশাল মিছিল করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের’ ব্যানারে মিছিল শুরু করেন তারা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে পরিবহন চত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
তাদের অন্য দাবিগুলো হলো- মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্তপূর্বক নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং র্যাগিং সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা; ‘নিপীড়ক শিক্ষক’ মাহমুদুর রহমানের বিচার নিষ্পত্তি করাসহ ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা; নিপীড়কদের সহায়তাকারী প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্টের অপরাধ তদন্ত করা এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাঁদের তদন্ত চলাকালে প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা; মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে জড়িত ব্যক্তিদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব জামানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ ১৬ দিন যাবৎ নিপীড়ক ও তাদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে আসছি৷ কিন্তু এখনো প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিপীড়কদের বিরুদ্ধে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখিনি৷ আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা রয়েছে। সেখানে যদি যৌন নিপীড়ক শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে কোনো শাস্তির ব্যবস্থা না করা হয় তাহলে আমরা সিন্ডিকেট সদস্যদের ঘেরাও করবো৷’
নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী কনোজ কান্তি রায় বলেন, ‘প্রশাসনের নাকের ডগায় থাকার পরেও এখনো নিপীড়কদের বিচার হচ্ছে না। অন্যদিকে অছাত্ররা রাজার মতো হলগুলোতে অবস্থান করছেন এবং বহাল তবিয়তে নিজেদের রাজত্ব কায়েম করছেন। স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, আগামীকালের সিন্ডিকেটে নিপীড়ক মাহমুদুর রহমান জনির সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করুন, বৈধ শিক্ষার্থীদের হলে সিট নিশ্চিত করুণ- তা না হলে আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো৷’
দাবি না মানলে ভর্তি পরীক্ষায় বাধা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের সদস্য সচিব মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেন, ‘মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করা ও যৌন নিপীড়ক শিক্ষক জনির বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করাসহ সকল দাবি প্রশাসনকে মেনে নিতে হবে। আগামীকালের সিন্ডিকেটে এ বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা চাই, নয়তো আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা আটকাতে বাধ্য হবো৷ এর দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে।’
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ রেজাউল রকিব বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে একটি দাবিও অযৌক্তিক হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানাতে পারেন। আর যদি দাবিগুলো যৌক্তিক হয়ে থাকে তাহলে সেগুলো মেনে নিতে হবে। এছাড়া দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করতে হবে।’
বিএনএ/ সানভীর, এমএফ /এইচমুন্নী