34 C
আবহাওয়া
২:০০ অপরাহ্ণ - মে ২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ব্রডকাস্টিংয়ে পরিবর্তন : ধারাভাষ্যে নতুন মুখ

ব্রডকাস্টিংয়ে পরিবর্তন : ধারাভাষ্যে নতুন মুখ


বিএনএ, ঢাকা: বিভিন্ন সময়ে খেলা দেখানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)-কে শুনতে হয়েছে নানা সমালোচনা। অন্যান্য দেশের বোর্ডগুলো যখন ঘরোয়া খেলাগুলো বেশ গুরুত্ব দিয়ে ব্রডকাস্ট করছিল; বিসিবি সেখানে নীরব ছিল। তবে দেরিতে হলেও, বেশ রয়েসয়ে নেমেছে এবার দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ এই নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলছে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। বিসিবি’র তত্ত্বাবধানে সেই ম্যাচগুলো বেশ গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করা হচ্ছে বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন ইউটিউব চ্যানেলে। মিরপুরে চলমান ভারতের বিপক্ষে নারী দলের সিরিজ, খুলনা-রাজশাহীতে দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে সিরিজ এবং এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এ দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ এ দলের সিরিজের সবগুলো ম্যাচ বিসিবি’র ইউটিউব চ্যানেলে সম্প্রচার করা হয়েছে। ব্রডকাস্টিংয়ে এমন ইতিবাচক পরিবর্তন আসায় খুশি বাংলাদেশের ভক্ত-সমর্থকরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যেই বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।

দেশীয় ক্রুদের নিয়ে মানসম্পন্ন সম্প্রচার

ব্যাটার- বোলারদের দক্ষতা প্রদর্শন, সময়োপযোগী পরিসংখ্যান উপস্থাপন, দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিক্স, কিংবা স্টেডিয়াম ও এর আশেপাশের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য—শ্রোতাদের চোখ থেকে কান অবধি খেলার প্রতিটি খুঁটিনাটি পৌঁছে দিতে ব্রডকাস্টিং এবং শ্রুতিমধুর ধারাভাষ্য—সম্প্রচারের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়। ঠিক এই জায়গাতেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ধন্যবাদ পেতে শুরু করেছে সাম্প্রতিক কিছু ম্যাচের ব্রডকাস্টিং থেকে শুরু করে ধারাভাষ্যের ক্ষেত্রে বাড়তি মনোযোগ দিয়ে।

মিরপুরে চলমান ভারতীয় নারী দলের সফর কিংবা খুলনা এবং রাজশাহী তে সম্প্রতি শেষ হওয়া অনুর্ধ ১৯ দলের একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ, সব গুলোতেই যেমন দেখা গেছে ব্রডকাস্টিং এর উন্নতি, তেমনি ধারাভাষ্যে শোনা গেছে কিছু নতুন প্রতিভাবান কণ্ঠস্বর। তেমনই একটি দেশীয় ব্রডকাস্টিং প্রতিষ্ঠান ক্লাউড লাইভ। ম্যাচের গ্রাফিক্স থেকে শুরু করে স্কোর বোর্ড এবং ড্রোন ভিউ সহ সামগ্রিক সম্প্রচারে তারা এনেছে নতুনত্ব। খেলোয়ারদের প্রোফাইল, পরিসংখ্যান, স্কোরিং, সাক্ষাৎকার, টস এবং ম্যাচ পরবর্তী প্রেজেন্টেশনেও দেখা গেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন।

প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার জনাব সাদেক সামি এ প্রসঙ্গে বলেন, “একসময় নির্দিষ্ট কিছু এঙ্গেল এবং সীমিত কিছু তথ্য ছাড়া দর্শক কিংবা শ্রোতাদের কাছে বিশ্লেষণধর্মী প্রোডাকশনের তেমন কোনো চাহিদা ছিলো না! কিন্তু যুগের পরিবর্তন, সাথে দর্শক-শ্রোতাদের জ্ঞানের পরিধি এবং খেলাটির প্রতি ভালোবাসা-কৌতুহল বৃদ্ধির মাধ্যমে নতুন ও বিশ্লেষণধর্মী প্রোডাকশনেরও চাহিদা তৈরি হয়েছে। তাই এটা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে, দর্শক -শ্রোতাদের জন্য ভিন্নধর্মী কিছু প্রেজেন্টেশনের ব্যবস্থা করা যাতে তারা খেলাটির নানা উদ্ভাবনী দিক সম্পর্কে জানতে এবং বুঝতে পারেন, যা তাদের এই খেলাটির প্রতি আরও উন্মুখ করবে ভবিষ্যতে।”

ক্লাউড লাইভের প্রধান ব্যবস্থাপক রনি শাহ্‌ বলেন, বিসিবির চাহিদা মোতাবেক ১০টির বেশি ক্যামেরা এঙ্গেল এবং ২টি ড্রোন ভিউয়ের মাধ্যমে প্রতিটি ম্যাচের খুঁটিনাটি দর্শকদের সামনে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে দর্শকরা আন্তর্জাতিক প্রোডাকশন মানের কাছাকাছি একটা স্বাদ পেতে পারেন। তিনি মনে করেন, এটা শুধু দর্শকদের জন্যই নয়, বরং খেলোয়াড় থেকে শুরু করে সামগ্রিক ক্রিকেটের মানোন্নয়নে সাহায্য করবে যা ক্রিকেট এর ভালোবাসা কে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মত এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

ধারাভাষ্যে যুক্ত হচ্ছে নতুন মুখ

প্রোডাকশন ছাড়াও ধারাভাষ্যে এবার যুক্ত হয়েছে কিছু নতুন কন্ঠস্বর। ওয়েস্ট ইন্ডিজে এ দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ এ দলের সিরিজ (আনঅফিসিয়াল টেস্ট) থেকে শুরু করে সদ্য সমাপ্ত দক্ষিণ আফ্রিকা অনুর্ধ ১৯ দলের সফর কিংবা ভারতের নারী দলের চলমান বাংলাদেশ সফর, সব জায়গাতেই কিছু প্রতিভাবান ধারাভাষ্যের সরব উপস্থিতি বেশ লক্ষণীয়। সরাসরি ক্রিকেট বোর্ডের তত্ত্বাবধানে এই ধারাভাষ্য প্যানেল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ পাচ্ছেন। তাদেরই একজন সমন্বয় ঘোষ, যিনি বাংলাদেশের আয়ারল্যান্ড সফর থেকে শুরু করে, ভারতীয় নারী দলের সাথে চলমান সিরিজে পরিচিত কণ্ঠস্বর হয়ে উঠছেন। সমন্বয় ঘোষের মতে, “প্রবীণ যারা আছেন, তাঁদের দেখানো পথেই সামনের দিনগুলোতে শ্রোতাদের নতুন ধারার এবং আন্তর্জাতিক মানের ধারাভাষ্যের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বাড়ছে।”

এছাড়া নারী দলের এই সিরিজে অভিষিক্ত হয়েছেন ক্রীড়া বিশ্লেষক ও সাংবাদিক সৈয়দ আবিদ হোসেইন ও তায়েব অনন্ত। এদের পাশাপাশি বেশ কিছু তরুণ রেডিও ধারাভাষ্যকারদের উপর আস্থা রাখছে ব্রডকাস্টিং প্রতিষ্ঠানগুলো। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন ধারাভাষ্যকার হলেন: তানজিম- উল- ইসলাম, প্রান্তর দাস অনয়, সৈয়দ সাকিব এবং জাহিন আলম।

ধারাভাষ্যকক্ষে তরুণদের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান ক্লাউড লাইভের প্রধান ব্যবস্থাপক রনি শাহ্‌ বলেন, “দেখুন ওরা প্রথমত তরুণ; বেশ এনার্জেটিক লেগেছে আমার কয়েকজনকে। যেহেতু ম্যাচগুলো ইউটিউবে যায়, সারা বিশ্বের মানুষ খেলাটা দেখছে। তাই ইংরেজি ধারাভাষ্যটাকে আমরা প্রাইওরিটি দিচ্ছি। সেক্ষেত্রে, তরুণ এই ধারাভাষ্যকারদের উচ্চারণ আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। পর্যাপ্ত সুযোগ পেলে ওরা আরও ভালো করবে।”

বিএনএ/সাকিব, এমএফ/ হাসনাহেনা

Loading


শিরোনাম বিএনএ