।।রেহানা ইয়াছমিন।।
মাদক সেবন ও অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির মুখপাত্র ফাতেমা খানম লিজাসহ ৩ জনকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ১৭ই মে সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক আরিফ মঈন উদ্দীন এবং সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

বহিষ্কার আদেশে বলা হয়, ‘সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির মুখপাত্র ফাতেমা খানম লিজার মাদক সেবন এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রায় ১৪০০ শহীদ ও অর্ধ লাখ আহতের ওপর দাঁড়ানো এই প্ল্যাটফর্মের কোনো সদস্যের এমন অনিয়ন্ত্রিত এবং অসামাজিক কার্যকলাপ জনমনে প্রশ্ন তৈরি করেছে। তাই ফাতেমা খানম লিজাকে চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির মুখপাত্র পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।’
এ দিকে, বহিষ্কারের পর লিজার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণে দুই ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন তিনি। এই সময়ের মধ্যে মাদক সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করতে না পারলে নগর কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন লিজা।
শনিবার(১৭ মে )রাতে এক ভিডিও বার্তায় ফাতেমা খানম লিজা বলেন, ‘আজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রাম নগর আহ্বায়ক আরিফ মঈনুদ্দিন এবং সদস্য সচিব নেজাম উদ্দিন আমার বিরুদ্ধে দুটি অ্যালিগেশন এনেছে। প্রথমত অ্যালিগেশন এনেছে, আমি মাদক সেবনকারী।’
হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আল্টিমেটাম দিচ্ছি, আগামী দুই ঘণ্টার মধ্যে যদি তারা আমার মাদক সেবন প্রুভ করতে না পারে; তাহলে আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
লিজা বলেন, ‘দ্বিতীয়টি হচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত জীবন নিয়ে। সম্পূর্ণ বেইসলেস একটি ইস্যু। আমার কথা একটাই, যদি তারা আগামী দুই ঘণ্টার মধ্যে মাদকের বিষয়ে কোনো প্রমাণ দিতে না পারে, তাহলে আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো’।
ফাতেমা খানম ছাড়াও আরও দুজনকে বহিষ্কার করা হয়। তাঁরা হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সদস্যসচিব আবুল বাছির নাঈম ও সংগঠক শাহরিয়ার সিকদার।
তাঁদের মধ্যে আবুল বাছিরকে বন্দর থানায় ব্যবসায়ীকে হেনস্তা করে চাঁদাবাজির অভিযোগে আর শাহরিয়ারকে চাঁদাবাজির অভিযোগে ডবলমুরিং থানায় আটক হওয়ার ঘটনায়।
‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন–চট্টগ্রাম’ নামের ওই ফেইসবুক পেজ থেকেই তিনজনের বহিষ্কারের চিঠি পোস্ট করা হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের একক সিদ্ধান্তে তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে বলে একই পেজ থেকে পোস্ট করেন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রাম মহানগর এর সদস্যবৃন্দ’।
ওই পোস্টে বলা হয়, সম্প্রতি সংগঠনের পক্ষ থেকে যেসব অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তা সম্পূর্ণভাবে আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের একক সিদ্ধান্তে গ্রহণ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তে সংগঠনের অন্য সদস্যদের কোনো প্রকার মতামত বা পরামর্শ নেওয়া হয়নি এবং অব্যাহতির পেছনে কোনো যথাযথ প্রমাণ বা যুক্তিও উপস্থাপন করা হয়নি।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক আরিফ মঈনউদ্দীন বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন অভিযোগে তিনজনকে বহিষ্কার করেছি। আমাদের নামে অনেক পেজ চালানো হয় ফেইসবুকে। আমাদের স্বাক্ষর দেওয়া চিঠিগুলোই আসল। বাকি বিষয়গুলো আমাদের না।
বিএনএ