29 C
আবহাওয়া
৮:২৩ অপরাহ্ণ - মার্চ ২৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-৪ (ঠাকুরগাঁও-২)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-৪ (ঠাকুরগাঁও-২)


বিএনএ, ঢাকা: বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী হালচাল নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। আজ থাকছে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের হালচাল।

বালিয়াডাঙ্গী, হরিপুর উপজেলা এবং রানিসংকাইল উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়ন ও কাশিপুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয় ঠাকুরগাঁও-২। এটি জাতীয় সংসদের ৪ নম্বর আসন।

১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি রংপুর ৪ সংসদীয় আসন হিসেবে পরিচিত ছিল। বঙ্গবন্ধু সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত এই সংসদীয় আসনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ১৫ হাজার ১ শত ৪৮ জন। এর মধ্যে ভোটাধকিার প্রদান করেন ৭০ হাজার ৮শত ৮৪ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আলীম উদ্দিন বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৪২ হাজার ৬শত ৮২ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ন্যাপ মোজাফফর এর মোহাম্মদ আব্দুল হাফিজ। ‘কুড়েঘর’ প্রতীকে তিনি পান ২৩ হাজার ৬ শত ৫৬ ভোট।

১৯৭৯ সালের ১৮ ই ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনটি দিনাজপুর -৪ নামে পরিচিত ছিল। ওই সময় ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ৭ শত ৬১ জন। ভোট প্রদান করেন ৮৫ হাজার ৮শত ৫৩ জন। নির্বাচনে বিএনপির মির্জা রুহুল আমিন বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৩০ হাজার ৯শত ৯৯ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের আলী আকবর। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ২৭ হাজার ৪শত ২৪ ভোট।

১৯৮৬ সালের ৭ই মে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনটি ঠাকুরগাঁও-২ নামে পরিচিত হয়। নির্বাচনে ৮২ হাজার ২ শত ৩২ জন ভোট প্রদান করেন। সিপিবি’র মোহাম্মদ দবিরুল ইসলাম বিজয়ী হন। কাস্তে প্রতীকে তিনি পান ৩৪ হাজার ৭২ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ইজাব উদ্দিন আহমেদ। তিনি পান ২৩ হাজার ৮ শত ৮৩ ভোট। বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করে।

১৯৮৮ সালের ৩রা মার্চ চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি আওয়ামী লীগ বিএনপিসহ প্রধান প্রধান বাজনৈতিক দলসমূহ। জাতীয় পার্টির প্রার্থী মির্জা রুহুল আমিন বিজয়ী হন। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ১৯ হাজার ২ শত ৫৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ফ্রিডম পার্টির বদরুল আলম চৌধুরী। ‘কুড়াল’ প্রতীকে তিনি পান ৭ হাজার ৪ শত ৯৯ ভোট।

এরশাদ সরকারের পতনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-২ আসনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩ শত ১৭ জন। নির্বাচনে সিপিবি’র দবিরুল ইসলাম বিজয়ী হন। ‘তারা’প্রতীকে তিনি পান ৪৬ হাজার ৪ শত ৫২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির আলতাফুর রহমান। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ১৭ হাজার ৭ শত ৭ ভোট।

১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে মোট ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৫১ হাজার ৮ শত ৪৪ ভোট। নির্বাচনের আগে দবিরুল ইসলাম আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং মনোনয়ন পান। নির্বাচনে বিজয়ী হন তিনি। নৌকা প্রতীকে দবিরুল ইসলাম পান ৪৮ হাজার ৩ শত ৪৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির আসাদুজ্জামান বাবু। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ২৮ হাজার ৭ শত ৫৭ ভোট।

২০০১ সালে ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-২ আসনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩ শত ৬২ জন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী দবিরুল ইসলাম বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৬২ হাজার ৪ শত ৮৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জামায়েত ইসলামীর আবদুল হাকিম। দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে তিনি পান ৫৭ হাজার ১ শত ৯৬ ভোট।

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ১৮ হাজার ৩ শত ৩৮ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দবিরুল ইসলাম বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ২ হাজার ৮ শত ৩৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জামায়েত ইসলামীর আবদুল হাকিম দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে তিনি পান ৯৮ হাজার ৪ শত ৫৬ ভোট।

২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে দবিরুল ইসলাম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় বিজয়ী হন। বিএনপি ও জামায়াত ইসলামীসহ তাদের সমমনা দল গুলো নির্বাচন বর্জন করে।

২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে ভোটার ছিল ২ লাখ ৭৩ হাজার ৪ শত ৩৩ জন। নির্বাচনে মহাজোট প্রার্থী দবিরুল ইসলাম বিজয়ী হন। তিনি পান ২ লাখ ৩৬ হাজার ৬ শত ১৬ ভোট। অন্যদিকে ঐক্যজোট সমর্থিত বিএনপি প্রার্থী আব্দুল হাকিম পান মাত্র ১ লাখ ৫ হাজার ৬ শত ৪৮ ভোট। ঐক্যজোট নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে ফলাফল প্রত্যাখান করে।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, দ্বিতীয় সংসদে বিএনপি, তৃতীয় সংসদে সিপিবি, চতুর্থ সংসদে জাতীয় পার্টি এবং পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে, সিপিবি প্রার্থী বিজয়ী হয়।

১৯৯৬ সালে সিপিবির বিজয়ী প্রার্থী দবিরুল ইসলাম আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। পরবর্তীতে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হন। এরপর সপ্তম, অষ্টম, নবম, দশম সর্বশেষ একাদশ বিজয়ী হন দবিরুল ইসলাম। এলাকায় তার নিজের জনপ্রিয়তার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের শক্ত সাংগঠনিক অবস্থান রয়েছে। বলা যায়, ঠাকুরগাঁও-১ সংসদীয় আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে নিয়ে পরিচালিত জনমত জরিপে এ আসনে বিএনপির চেয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এগিয়ে আছেন। তবে দবিরুল ইসলাম বিরুদ্ধে হিন্দুদের জমি দখল স্বজনদের আওয়ামী লীগের কমিটিতে গুরুত্বর্পূণ বিভিন্ন পদে আসীন করা এবং নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করার অভিযোগ রয়েছে।

বিএনএ/ শিরীন, ওজি, ওয়াইএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ