36 C
আবহাওয়া
১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ - এপ্রিল ২৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » আনসার আল ইসলামের সাখাওয়াত আরও ৩ দিনের রিমান্ডে

আনসার আল ইসলামের সাখাওয়াত আরও ৩ দিনের রিমান্ডে

৩ দিনের রিমান্ডে আনসার আল ইসলামের সাখাওয়াত

বিএনএ,চট্টগ্রাম: সিরিয়া ফেরত আনসার আল ইসলামের ‘আইটি বিশেষজ্ঞ’ সাখাওয়াত আলী ওরফে লালুকে (৪০) ফের তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। এর আগে গত ১২ জুন তাকে তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৫ জুন) বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের আদালত এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ।

সিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাছিব খান জানান, তিন দিনের রিমান্ড শেষে আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে সাখাওয়াত আলী লালুকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে ফের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

এর আগে গত শুক্রবার (১১ জুন) বিকেলে দক্ষিণ খুলশী আবাসিক এলাকাস্থ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় আহলে হাদীস জামে মসজিদের সামনে থেকে সিরিয়া ফেরত জঙ্গি নেতা আনসার আল ইসলামের ‘আইটি বিশেষজ্ঞ’ শাখাওয়াত আলী ওরফে লালুকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম। শাখাওয়াত আলী লালু খুলশী থানার ওয়াসা মোড়ের এমএমআলী রোড, এসএইচ পেট্টোল পাম্পের উত্তর পাশে গলির শমসের আলীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে খুলশী থানায় সন্ত্রাস বিরাধী আইনে একটি মামলা করেছে কাউন্টার টেরোরিজম।

সিএমপি সূত্রে জানা গেছে, সাখাওয়াত চট্টগ্রাম নগরীর দামপাড়ায় পুলিশ লাইন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর ভারতে চলে যান। সেখান থেকে এইচএসসি পাস করেন। সেখানে বসবাসরত আরিফ নামে এক বাংলাদেশির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ভারতে থাকা অবস্থায় আরিফের শ্যালিকাকে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে তিনি স্ত্রীসহ চলে যান লন্ডনে। ২০০৯ সালে গ্রিনিজ ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সাইয়েন্সে এমএসসি সম্পন্ন করেন। ২০১০ সালে তিনি বাংলাদেশে ফেরেন।

কয়েক বছর বেকার থাকার পর ২০১৪ সালে ‘কম্পিউটার অনলাইন ওয়েব ফার্ম’ নামে একটি অনলাইন ব্যবসা শুরু করলেও মাত্র ছয় মাসের মধ্যে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৫ সালে তিনি কিছুদিন চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লায় ‘তাজ সায়েন্টিফিক’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ২০১৬ সালে তাদের পারিবারিক ব্যবসা ‘ওয়াশো ড্রাই ক্লিনার্স’এ বসতে থাকেন। ২০১৭ সালে তুরস্কে চলে যাবার আগপর্যন্ত তিনি সেখানেই বসতেন।

কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট জানায়, মূলত লন্ডন থেকে ফেরার পর ২০১২ সালের দিকে সাখাওয়াতের মধ্যে পরিবর্তন আসতে থাকে। এসময় সে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তার স্ত্রীর দুই ভগ্নিপতি আরিফ ও মামুনই মূলত তাকে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের যুক্ত করে।

২০১৩ সালে আনসার আল ইসলামের সামরিক কমান্ডার বরখাস্ত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়ার সঙ্গে আরিফ ও মামুনের মাধ্যমে বৈঠক করেন সাখাওয়াত। তখন বরখাস্ত মেজর জিয়াকে মোয়াজ নামে তাকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। এরপর সে জিয়ার ভাবশিষ্যে পরিণত হয় এবং পুরোপুরি সশস্ত্র জিহাদি কর্মকাণ্ডে মনোনিবেশ করেন। এছাড়া আনসার আল ইসলামের পক্ষ থেকে দায়িত্ব পেলে সংগঠনটির তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডও পরিচালনা করতে থাকেন সাখাওয়াত। অর্থাৎ অনলাইনের মাধ্যমে জিহাদের প্রচার করতে থাকেন। এছাড়া নগরীর মনসুরাবাদ এলাকার হুজুর শফিক, লালখান বাজার এলাকার একটি এসি’র দোকানে কর্মচারি ওমর ফারুককে নিয়ে দেশজুড়ে আনসার আল ইসলামের সদস্যদের সংগঠিত করার কাজ শুরু করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১৯ জানুয়ারি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সরকার উৎখাতে ধর্মান্ধ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার একটি অভ্যুত্থান পরিকল্পনা নস্যাৎ করা হয়েছে। অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টাকারীদের নেতা হিসেবে তখন জানানো হয় মেজর জিয়ার নাম। এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়া জিয়া পালিয়ে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামে যুক্ত হন এবং পরবর্তীতে সামরিক কমান্ডারের দায়িত্ব পান। গুলশানের হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর জিয়াকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল সরকার।

বিএনএনিউজ/মনির

Loading


শিরোনাম বিএনএ