31 C
আবহাওয়া
৩:১৫ অপরাহ্ণ - মার্চ ২৮, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » প্রফেসর মাসুদা এম রশীদ চৌধুরীর ১ম মৃত্যুবার্ষিকী

প্রফেসর মাসুদা এম রশীদ চৌধুরীর ১ম মৃত্যুবার্ষিকী

প্রফেসর মাসুদা এম রশীদ চৌধুরীর ১ম মৃত্যুবার্ষিকী

বিএনএ, ঢাকা:  একাদশ জাতীয় সংসদের ৩৪৫ মহিলা আসন-৪৫ সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর, বীরমুক্তিযোদ্ধা, ড. মাসুদা এম, রশীদ চৌধুরীর আজ ১ম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

মরহুমার আত্মার মাগফিরাতের জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বাসভবনে এবং রাউজানের পারিবারিক বাসভবনে পবিত্র কোরআনখানি, মিলাদ মাহফিল এবং দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।

মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী ২২ জুলাই ১৯৫১ সালে চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার এক সভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম আবুল মনসুর পাকিস্তানের শীর্ষ ব্যবসায়ী, মাতা মৌসুফা মনসুর বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা সংস্থার সভানেত্রী ও চট্টগ্রাম বাওয়া স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা। নানা খাঁন বাহাদুর আবুল মজিদ জিয়াউস সামস্ ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান পার্লামেন্টের শিক্ষামন্ত্রী। দাদা খাঁন বাহাদুর টি আহম্মেদ উপমহাদেশের প্রথম মুসলিম ডিপিআই ও ঢাকা ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা।

পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের বিরোধী দলের নেতা একেএম ফজলুল কবির চৌধুরী’র জ্যেষ্ঠ পুত্রবধূ তিনি। তাঁর স্বামী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট এবিএম ফজলে রশীদ চৌধুরী। তিনি পুত্র ব্যারিস্টার সানজীদ রশীদ চৌধুরী এবং কন্যা সানজানার জননী। রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী তাঁর দেবর।

মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৩ সালে সিনিয়র ক্যামব্রিজ পাশ করেন। চট্টগ্রাম কলেজ থেকে অনার্স এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। তিনি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ও বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানের সাথে ডক্টরেট সম্পন্ন করেন।

মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপনা করেন। এছাড়া, তিনি বুয়েটে খন্ডকালীন অধ্যাপনা এবং পিপলস ইউনির্সিটির ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮২ সালে মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে যুক্ত হন। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হন। জাতীয় মহিলা পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তীতে ১৭ বছর জাতীয় মহিলা পার্টির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।

মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী চিত্র শিল্পী হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতি ৪ বছর পর পর অনুষ্ঠিত এশিয়ান আর্ট বিএনএল এর সমন্বয়কারী দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে দীর্ঘ ২৮ বছর শিশু, কিশোর ও শিক্ষা বিষয়ক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোভার স্কাউট লিডার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টুরিস্ট সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন।

ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট, শিক্ষক, চিত্রশিল্পী, নারী উদ্যোক্তা, রাজনীতিবিদসহ বহুগুণের অধিকারিণী (ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার) এর সংরক্ষিত আসনের এমপি ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন প্রফেসর মাসুদা।  তিনি একমাত্র নারী ব্যবসায়ী নেত্রী যিনি সর্বোচ্চ ভোটে এফবিসিসিআই পরিচালক নির্বাচিত হন। সর্বোচ্চ ভোটে একাধারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ বার সিনেট সদস্য, ৩ বার সিন্ডিকেট সদস্য ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য হন। তিনি সার্ক চেম্বার অব কমার্স এর ভাইস প্রেসিডেন্ট, ইউনেস্কো ক্লাব অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট, ওআইসি টাস্কফোর্সে বাংলাদেশের প্রতিনিধি, এসএমই ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি, বিসিক এবং ইপিবি’র পরিচালক, নাসিবের সহ-সভাপতি, বাংলা ক্রাফ্ট এর সভাপতি, আন্তর্জাতিক এশিয়ান আর্ট বিএনএল এর সমন্বয়কারী এবং অর্জন করেন ৭৬ টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।

১৯৮৬ সালে ফিলিপাইনস থেকে ১৫ হাজার নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টির কারণে সে দেশের সর্বোচ্চ পদকে ভূষিত হন। সমাজ বিজ্ঞান, নারী উদ্যোক্তা, রাজনীতি, চিত্র কলার উপরে লিখেছেন তিনি ৭৪টি বই। দেশে নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি, শিক্ষা’র প্রসার, সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘর কে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, চট্টগ্রামের মুসলিম ইনস্টিটিউট এর পুনঃ নির্মাণে তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের বিএফএ ছাত্রী থাকাকালীন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের নেতৃত্বে তিনি সরাসরি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

বিএনএ/এমএফ

Loading


শিরোনাম বিএনএ