39 C
আবহাওয়া
৪:১১ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ৩০, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » সাগর-রুনি হত্যা: ৪৮ ঘণ্টা থেকে ৫০ বছর

সাগর-রুনি হত্যা: ৪৮ ঘণ্টা থেকে ৫০ বছর


বিএনএ, ঢাকা: নাদের আলি, আমি আর কত বড় হবো ?
আমার মাথা এই ঘরের ছাদ ফুঁড়ে আকাশ স্পর্শ করলে
তারপর তুমি আমায় তিন প্রহরের বিল দেখাবে ?

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কেউ কথা রাখেনি কবিতাই যেন সাগর-রুনির বিচারের ক্ষেত্রে গত এক দশক ধরে পরিপূরক হয়ে উঠেছে। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি সাংবাদিক দম্পতি খুন হয়েছিলেন ঢাকায় তাদের পূর্ব রাজাবাজারের বাসায়। তখন তাদের সঙ্গে ছিলেন—তাদের একমাত্র শিশুপুত্র মেঘ।

হত্যার পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছিলেন, ‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাগর-রুনির হত্যাকারীরা আইনের আওতায় আসবে।’

এর কয়েকদিন পর সে সময়ের পুলিশ প্রধান হাসান মাহমুদ খন্দকার এক সপ্তাহের মধ্যে আসামীদের আইনের আওতায় এনে মামলার তদন্তে অগ্রগতির কথা বলেন। হত্যাকাণ্ড মামলার তদন্তের ভার কয়েকদিন পরই তেজগাঁ থানা পুলিশ থেকে ডিবিতে চলে যায়।

আর ওই বছরের ১৮ এপ্রিল ডিবির তখনকার উপকমিশনার মনিরুল ইসলাম হাইকোর্টে হাজির হয়ে এক মাসের মাথায় তদন্তে ব্যর্থতা স্বীকার করে তদন্তের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। আর ওইদিনই আদালত তদন্তের দায়িত্ব দেন র্যা পিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে। র‌্যাব এক যুগ ধরে এই মামলার শুধু তদন্তই করছে। র‌্যাব  ৩০ বছর পালিয়ে থাকা আসামিকে  গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হলেও শুধু সাগর-রুনির হত্যাকান্ডের ক্ষেত্রে তাদের শক্তি মেধা যেন ব্যর্থ।

র‌্যাব  এ পর্যন্ত আটজনকে সন্দেহজনকভাবে আটক করলেও তারা সাগর-রুনি হত্যার সঙ্গে জড়িত আছে কী নেই হলফ করে বলছে না। ফলে সবাই হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছে।  আবার মাঝে দুই বছর কাটিয়েছে ডিএনএ টেস্ট নিয়ে। আর এই কাজে তারা যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত গিয়েছে। কিন্তু তার ফলাফলও শূন্য। কারণ তারা আলামত থেকে দুইজনের ডিএনএ প্রোফাইল পেয়েছে। আর তার সঙ্গে তারা আটক করা আটজনসহ ২৫ জনের ডিএনএ ম্যাচ করে কারোর সঙ্গে মিল পায়নি।

মামলা তদন্তে র‌্যাব গত ১০ বছরে সময় নিয়েছে ১০৫ বার । তারা তদন্ত প্রতিবেদনও দিচ্ছে না, আবার ব্যর্থতা স্বীকার করে তদন্ত থেকে নিজেদের সরিয়েও নিচ্ছে না। তদন্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি। উল্টো আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এখন তাদের প্রয়োজনে ৫০ বছর সময় দিতে চাইছেন। কিন্তু আইনে নির্ধারিত সময়ে তদন্ত শেষ করার বাধ্যবাধকতা আছে।

আদালতও দফায় দফায় সময় দিয়ে যাচ্ছেন। এখন র‌্যাব এর সময় চাওয়া আর আদালতের সময় দেওয়া—এটাই হলো সাগর-রুনি হত্যার তদন্ত উপাখ্যান। মাঝে মাঝে তদন্ত কর্মকর্তা অবশ্য বদল হয়।

সাগর-রুনির সন্তান মেঘের বয়স এখন ১৭ বছর ছয় মাস। বাবা-মা নিহত হওয়ার সময় তার বয়স ছিলো সাড়ে চার বছর। রুনির মা নুরুন্নাহার মির্জা মারা গেছেন ২০২২ সালে। সাগরের মা সালেহা মুনির অসুস্থ। সাগরের মা আশা ছেড়ে দিয়েছেন। ৪৮ ঘণ্টা থেকে এক সপ্তাহ। এক সপ্তাহ থেকে এক দশক। তারপর এখন ৫০ বছরের তাগিদ। কিন্ত এখন প্রশ্ন সাগর-রুনির সন্তান মেঘ কি বিচার দেখে যেতে পারবে? এমন প্রশ্ন সামনে নিয়ে এসেছেন সাগর-রুনির স্বজনরা।

বিএনএ/ শামীমা চৌধুরী শাম্মী, ওজি/এইচমুন্নী

Loading


শিরোনাম বিএনএ