30 C
আবহাওয়া
১০:৫২ পূর্বাহ্ণ - মে ২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ঈদের দিনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইসমাইল হানিয়াহ’র তিন পুত্র নিহত

ঈদের দিনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইসমাইল হানিয়াহ’র তিন পুত্র নিহত

ইসমাইল হানিয়াহ

বিশ্ব ডেস্ক : পবিত্র ঈদুল ফিতরের আনন্দের দিনে বেড়াতে যাবার পথে ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজা উপত্যকার ডি ফ্যাক্টো নেতা ইসমাইল হানিয়াহ এর তিন ছেলে ও তিন নাতি-নাতনি নিহত হয়েছেন। তাছাড়া তিনি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর বর্তমান প্রধান। নিহত হানিয়ার পুত্ররা হলেন আমির, হাজেম ও মোহাম্মদ হানিয়াহ।

বুধবার(১০ এপ্রিল ২০২৪) সকালে যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় তারা একটি কারযোগে আত্মীয়ের সাথে দেখা করতে যাবার সময় বিমান হামলায় নিহত হন।

হানিয়াহ সাংবাদিকদের বলেন, তার পুত্র ও নাতি নাতনিরা উত্তর গাজার শাতি শরণার্থী শিবিরে ঈদ উপলক্ষে আত্মীয়দের সাথে দেখা করতে যাচ্ছিল তখন তাদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়। এ নিয়ে যুদ্ধ শুরু হবার পর হতে ইসমাইল হানিয়াহ’র ৬০জন নিকট আত্মীয় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। ইসরায়েল প্রথম থেকে হামাস নেতা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। যাতে হামাস দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়ে।

এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় হানিয়াহের সন্তানদের ওপর হামলার সত্যতা স্বীকার করেছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেন যে, ফাইটার জেটগুলি মধ্য গাজায় হানিয়াহের বাচ্চাদের বহনকারী একটি গাড়িতে হামলা চালিয়েছে।

হাগারি বলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী “নিশ্চিত” করেছে যে তারা “ইসমাইল হানিয়াহের সন্তান”। হামলায় হানিয়াহের অন্তত তিনজন নাতি-নাতনিও নিহত হয়েছে।

গাজা উপত্যকার ডি ফ্যাক্টো নেতা হানিয়েহ ঘটনার পর সাংবাদিকদের বলেন, ফিলিস্তিনি নেতারা যদি তাদের পরিবারগুলিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দ্বারা লক্ষ্যবস্তু করে তাহলে তারা পিছু হটবে না এবং এই হত্যাকাণ্ড যুদ্ধবিরতি আলোচনায় হামাসের দাবিকে প্রভাবিত করবে না।

 

ইসমাইল হানিয়াহ কে?

ইসমাইল হানিয়াহ কে? ইসমাইল হানিয়াহ ১৯৬২ সালে গাজার শাতি শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন । তার পিতামাতা ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র সৃষ্ঠির পরে আসকালান শহর থেকে পালিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

ইসমাইল হানিয়াহ ১৯৮৩ সালে ফিলিস্তিন ইসলামিক ছাত্র ব্লকে যোগ দেন, যা হামাসের মূল সংগঠক।

তিনি ১৯৮৭ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন, যেটি এমন একটি বছর যা ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রথম ফিলিস্তিনি গণ-অভ্যুত্থান সৃষ্ঠি করেছিল, যা প্রথম ইন্তিফাদা নামে পরিচিত এবং পরবর্তীতে হামাস একটি সরকারী গোষ্ঠী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

১৯৮৮ সালে, হানিয়াহ ছয় মাসের জন্য ইসরায়েলের জেলে ছিলেন এবং ১৯৮৯ সালে তিনি হামাসের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে আরও তিন বছর কারাভোগ করেন।

তার মুক্তির পর, ইসরায়েল হানিয়াহকে অন্যান্য সিনিয়র হামাস নেতাদের সাথে দক্ষিণ লেবাননে নির্বাসিত করেছিল, যেখানে তিনি এক বছর কাটিয়েছিলেন।

২০০১ সালে, দ্বিতীয় ইন্তিফাদা আন্দোলন হওয়ার সাথে সাথে, হানিয়াহ হামাসের রাজনৈতিক নেতাদের একজন হিসাবে তার অবস্থানকে সুসংহত করেন।

হানিয়াহ ২০০৩ সালে ইসরায়েলি হত্যা প্রচেষ্টা থেকে রক্ষা পান।

তিনি ২০০৬ সালে ফাতাহ আন্দোলনের বিরুদ্ধে হামাসের নেতৃত্ব দিয়ে আইনসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেন, যেটি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে গাজা উপত্যকার ক্ষমতায় ছিল।

হানিয়াহ সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, কিন্তু হামাস গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ দখল করার পর, পিএ-এর প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস তাকে বরখাস্ত করেন। তবে তিনি গাজা উপত্যকায় ডি ফ্যাক্টো নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

২০১৭ সালে, হানিয়েহ হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান নির্বাচিত হন এবং এই সময়ে তিনি কাতারে স্থানান্তরিত হন।

হানিয়াহের সন্তানদের হত্যা ইসরায়েল-মার্কিন সম্পর্ককে জটিল করে তুলবে

মার্কিন সাংবাদিকদের মতে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টর মধ্যে সাম্প্রতিক মতবিরোধ এবং মতভেদের মধ্যে এই হত্যাকান্ড ইসরায়েল-মার্কিন সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত ২৪ ঘন্টায় নেতানিয়াহুর কড়া সমালোচনা করেছেন।বিষয়টি হোয়াইট হাউসে খুব সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানানো হয়েছে।একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, এটি যুদ্ধবিরতি আলোচনা প্রক্রিয়াকে আদৌ প্রভাবিত করে কিনা তা আমরা দেখব।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হামাসের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছে, কিন্তু হামাসের রাজনৈতিক নেতার পুত্র ও নাতি-নাতনিদের মৃত্যুর ঘটনাগুলির প্রেক্ষিতে, সেই প্রতিক্রিয়া এখন আসন্ন নাও হতে পারে। যুদ্ধ বিরতির আলোচনায় অগ্রগতি হতে পারে এমন আশাবাদ এখন থেমে যেতে পারে, যা হোয়াইট হাউস আশা করে না । Source : Al Jazeera

আরও পড়ুন:

ঈদের আগের ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলা, ১২২ ফিলিস্তিনি নিহত
এসজিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ