36 C
আবহাওয়া
৭:৩৩ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২০, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » মালিকের টাকা আত্মসাৎ করতে গিয়ে ধরা খেলেন কর্মচারি

মালিকের টাকা আত্মসাৎ করতে গিয়ে ধরা খেলেন কর্মচারি

মালিকের টাকা আত্মসাৎ করতে গিয়ে ধরা খেলেন কর্মচারি

বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ আখতারুজ্জামান সেন্টারের দি সন্দ্বীপ জুয়েলার্সে মালিক প্রদীপ বণিকের বিশ্বস্ত কর্মচারি ছিলেন সুদীপ্ত সাহা ওরফে টিংকু (৩৫)। প্রদীপ টিংকুকে এতটাই ভরসা করতেন যে তার চারটি এটিএম কার্ডের গোপন পিন নম্বর টিংকুর জানা ছিল। গতকাল শুক্রবার (৯ জুলাই) চারটি বুথ থেকে ১২ লাখ টাকা তুলে মালিকের বাসায় পৌঁছে দেয়ার কথা। অথচ সে টাকা নিজেই আত্মসাৎ করে সটকে পড়েন বান্দরবান। নিজেকে বাঁচাতে সাজালেন অর্থ ডাকাতির নাটক।

শনিবার (১০ জুলাই) নগরীর ডবলমুরিং থানা প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পশ্চিম বিভাগের উপ কমিশনার মো. আব্দুল ওয়ারীশ। এসময় অতিরিক্ত উপ কমিশনার পংকজ দত্ত , সহকারী কমিশনার মো. মাহামুদুল হাসান মামুন,অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহসীন, পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদ রানা, উপপরিদর্শক নিপু বিশ্বাস, মো. শরীফ উদ্দিন, অর্ণব বড়ুয়া, সহকারী উপপরিদর্শক কাজী সাইফুল, সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেপ্তার সুদীপ্ত সাহা প্রকাশ টিংকু রাঙ্গুনিয়ার স্বনির্ভর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড মহাজন বাড়ির অসীম সাহার ছেলে। তার বাসা নগরীর গোসাইলডাঙ্গা এলাকায়।

শুক্রবার (৯ জুলাই) বিকেল ৪ টায় আখতারুজ্জামান সেন্টারের দি সন্দ্বীপ জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী প্রদীপ বণিক থানায় এসে তার ১২ লাখ টাকা ডাকাতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে অভিযানে নামে পুলিশ। অভিযানে নেতৃত্ব দেন অতিরিক্ত উপ কমিশনার পংকজ দত্ত, ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন, পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদ রানা, উপ-পরিদর্শক নিপু বিশ্বাস, শরীফ উদ্দীন, অর্নব বড়ুয়া এবং সহকারী উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম ও সাদ্দাম হোসেন।

অভিযোগে তিনি বলেন, দোকানের কর্মচারি সুদীপ্ত সাহা টিংকু চারটি এটিএম কার্ড দিয়ে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আগ্রাবাদ সিএন্ডএফ ভবনে অবস্থিত একটি বুথ থেকে টাকা তুলে বাসায় আসার পথে এই ডাকাতি হয়। এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে আসার সময় কালো রঙের একটি মাইক্রোবাস থেকে ৪-৫ জন লোক নেমে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাকে গাড়িতে উঠতে বলে। তিনি গাড়িতে উঠতেই তার সাথে থাকা ১২ লাখ টাকা নিয়ে নেওয়া হয়। এরপর তার কাছে ইয়াবা পাওয়া গেছে বলে মামলা দেওয়ার ভয় দেখায়। এক পর্যায়ে গাড়ি বান্দরবানে গিয়ে থামে। সেখানে হাত ও চোখ বেঁধে তাকে পাহাড়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে ফোন করে প্রদীপ বণিকের কাছ থেকে বিকাশে টাকা নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে আসেন টিংকু।

উপ কমিশনার মো. আব্দুল ওয়ারীশ  বলেন, প্রদীপ বণিকের অভিযোগ ছিল পুলিশ পরিচয়ে তার ১২ লাখ টাকা লুট করা হয়েছে। কিন্তু ঘটনা বিশ্লেষণ করে শেষ পর্যন্ত সেই টাকা উদ্ধার করা হয় তারই কর্মচারী টিংকুর কাছ থেকেই।

ওসি মহসীন বলেন, টিংকু খুবই চালাক। ডাকাতির ঘটনা সে নিজে পুলিশকে জানালেও তার কল লোকেশন যেন বান্দরবান আসে সেজন্য নিজেই সেখানে চলে যান। আবার সিসিটিভিতে তার বর্ণিত সেই মাইক্রোবাসও বুথ অতিক্রম করতে দেখা যায়। কিন্তু সেই গাড়িতে তাকে তুলে নেওয়ার তথ্য না পাওয়ায় সন্দেহ জাগে টিংকুর উপর। এরপর লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেন তিনি। এরপর তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কোতোয়ালী থানার পাথরঘাটা এলাকায় তার বোনের বাসা থেকে ১১ লাখ ৯৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এভাবে ১২ ঘণ্টার মধ্যেই উদ্ধার করা হয় স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ১২ লাখ টাকা। তার বিরুদ্ধে প্রদীপ বণিক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

সন্দ্বীপ জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী প্রদীপ বণিক বলেন, টিংকু আমার খুবই বিশ্বস্ত কর্মচারী ছিল। গত ২ বছর ধরে আমার প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছে। করোনার কারণে বাসা থেকে কম বের হই। আমার এটিএম কার্ডের সব পিন নম্বর টিংকুর জানা ছিল। আগেও একাধিকবার বুথ থেকে টাকা তুলেছে। এমন বিশ্বস্ত কর্মচারী শেষ পর্যন্ত করলো অবিশ্বাসের কাজ।

বিএনএনিউজ/মনির

Loading


শিরোনাম বিএনএ